কয়েকদিন আগে রাজ্য রাজনীতিতে শোরগোল ফেলে দিয়ে তাঁর বাড়িতে এসে পাত পেড়ে খেয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। মাটির দাওয়ায় বসে পঞ্চব্যঞ্জনের পর চেয়ারে বসে তোমায় হৃদমাঝারে রাখব গানও শুনেছিলেন সপার্ষদ অমিত শাহ। কিন্তু খাওয়া-গান হলেও অভাব-অভিযোগ শাহকে জানাতে পারেননি বাসুদেব দাস বাউল।
পরে সেই বাউল শিল্পীর মুশকিল আসান হন জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। বোলপুরে পার্টি অফিসে ডেকে তাঁর মেয়ের উচ্চশিক্ষার ব্যবস্থাও করেন, সেইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর জবাবি রোড শোয়ে গান গাইবার জন্য আমন্ত্রণও জানান। সেই বাসুদেব বাবু এদিন বোলপুর লজ মোড় থেকে জামবুনি পর্যন্ত দীর্ঘ চার কিমি রাস্তা মুখ্যমন্ত্রীর একেবারে পিছনেই গাইতে গাইতে এলেন। দোতারায় বোল তুলে শরিক হলেন মমতার মিছিলের।
আরও পড়ুন “টাকা দিয়ে এমএলএ কেনা যায়, তৃণমূলকে কেনা যায় না”, বিজেপিকে নিশানা মমতার
কিন্তু কেন এমন পরিবর্তন? বোলপুরের রতনপল্লির বাসিন্দা বাসুদেব বাবু বলছেন, "আমরা বাউল, সবাইকে নিয়ে থাকতে চাই।" সংবাদমাধ্যমকে বাসুদেববাবু বলেন, "অমিত শাহও আমাদের সঙ্গে আছেন, দিদিও আছেন। তাঁর কথায়, দিদি বাউলদের জন্য অনেক কিছু করেছেন, করছেন। তাই দিদির জন্যও গাইব এক গান, হৃদমাঝারে রাখব, দিদিকে ছেড়ে দেব না।" এদিন জামবুনির সভাতেও মমতার সঙ্গে একমঞ্চে ছিলেন বাসুদেব দাস বাউল।
প্রসঙ্গত, সেদিন দ্রুত খাওয়া-দাওয়া সেরে, গান শুনে চলে যান শাহ। কোনও কথাই হয়নি সেভাবে তাঁর সঙ্গে। এমনকী পরে বিজেপি নেতারাও আর খোঁজ নেননি বলে আক্ষেপের সুর বাসুদেববাবুর গলায়। মেয়ে এমএ পাশ করে ঘরে বসে রয়েছে। তাঁর উচ্চশিক্ষার জন্য তদ্বির করবেন ভেবেছিলেন। “স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলতে চেয়েছিলাম মেয়ের উচ্চশিক্ষার ব্যাপারে। মেয়েটাকে টাকার অভাবে ডিএড করাতে পারিনি। কিন্তু সে কথা আর বলা হল কই!”, বলেন বাউল শিল্পী।
আরও পড়ুন “উনি ৩ বার তিন ধর্মে বিয়ে করেছেন”, অমর্ত্য সেনকে ‘নীতিজ্ঞান’ নিয়ে তোপ দিলীপের
বোলপুরে জেলা তৃণমূলের পার্টি অফিসে বসে বাসুদেববাবুর অনুযোগ শুনে শিক্ষা সেলের দায়িত্বে থাকা নেতাকে অনুব্রত মণ্ডল নির্দেশ দেন, তাঁর মেয়ের ডিএড প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে দিতে। দল তাঁকে সবরকম সাহায্য করবে বলে আশ্বাসও দেন জেলা তৃণমূল সভাপতি।