KYC আপডেট না করলে সিম কার্ড ব্লক হয়ে যাবে। এই মেসেজ পাঠিয়ে অশীতিপর বৃদ্ধের তিনটে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে ৩ লাখ ৬২ হাজার টাকা গায়েব করল প্রতারক। চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের সাইবার সেলে অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
উত্তরপাড়ার বি কে স্ট্রিটের একটি আবাসনের বাসিন্দা আশি বছরের বৃদ্ধ ফাল্গুনি মুখোপাধ্যায় প্রাক্তন রেলকর্মী। ২০০২ সালে তিনি চাকরি থেকে অবসর নেন। অবসরের কিছু টাকা তিনি উত্তরপাড়ার তিনটে ব্যাঙ্কে জমা রাখেন। ২৬ অক্টোবর তাঁর মোবাইলে একটি মেসেজ আসে। তাঁর ভোডাফোন আইডিয়া সিম কার্ডটি আপডেট করতে হবে। না হলে ব্লক হয়ে যাবে কার্ড। মেসেজের তলায় একটি ফোন নম্বর দেওয়া হয়। ফাল্গুনীবাবু ওই নম্বরে ফোন করেন।
তাঁকে বলা হয় একটি অ্যাপ ডাউনলোড করে তা দিয়ে দশ টাকা পাঠিয়ে দিতে। ফাল্গুনীবাবু দশ বারো বছর অনলাইনে কেনাকাটা ও নানা কাজ করে আসছেন। তাই তিনি ভাবতে পারেননি ওই অ্যাপ আসলে ফাঁদ। তিনি সেই ফাঁদে পা দেন। আর তার দুটো রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্ক ও একটি বেসরকারি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে তিন লাখ বাষট্টি হাজার টাকা সরিয়ে ফেলে প্রতারক। টাকা ডেবিটের কোনও মেসেজ পাননি ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায়। তিনি যখন জানতে পারেন তখন অ্যাকাউন্ট ফাঁকা হয়ে গেছে। প্রথমে উত্তরপাড়া থানায় পরে চন্দননগর কমিশনারেটের সাইবার সেলে অভিযোগ জানান বৃদ্ধ।
সাইবার বিশেষজ্ঞরা বার বার সাবধান করছেন। চন্দননগর কমিশনারেটের পক্ষ থেকেও সাবধান করা হচ্ছে, সচেতনতার প্রচার করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে কোনও অপরিচিত নম্বর থেকে ভিডিও কল এলে তা রিসিভ না করতে। এমন কোনও মোবাইল অ্যাপ যা সম্বন্ধে কোনও ধারনা নেই তা মোবাইলে ডাউনলোড না করতে বা তার ব্যবহার না করতে। অনলাইন কেনাকাটার ক্ষেত্রেও সাবধান থাকতে হবে। প্রয়োজনে ক্যাশ অন ডেলিভারি নিতে হবে। বার বার বলা সত্ত্বেও এই ধরনের প্রতারণার ঘটনা ঘটেই চলেছে।
আরও পড়ুন iPhone অর্ডার করে এল ভিমবার সাবান! প্রশ্নের মুখে Amazon!
প্রাক্তন রেলকর্মী ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায় বলেন,মোবাইল নম্বর বন্ধ হয়ে যাবে বলে মেসেজ এল তাই অ্যাপ ডাউনলোড করলাম। তার সব টাকা চলে গেল। অনলাইনে অনেক সুবিধা আর সরকারও বলছে ডিজিটাল লেনদেন করতে তাই করি। চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের সাইবার সেলের এক আধিকারিক বলেন,"এই অটোমেটিক ফরোয়ার্ড এস এম এস টু ইয়োর পিসি/ফোন" এই ধরনের একাধিক অ্যাপ আছে যা না বুঝে মোবাইলে ডাউনলোড করলেই সর্বনাশ। অ্যাপ চালু হতেই মোবাইল নিয়ন্ত্রণে চলে যায় প্রতারকের,ওটিপি থেকে ব্যাঙ্কের এ্যাকাউট ব্যালেন্সের মেসেজ কোনও কিছুই আর প্রতারিত জানতে পারে না। তাই তৎক্ষনাৎ বুঝতে পারে না প্রতারণার কথা। যখন জানতে পারে তখন অ্যাকাউন্ট ফাঁকা হয়ে যায়। এই ধরনের অ্যাপের সাহায্যে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে সহজেই টাকা সরিয়ে ফেলতে পারে প্রতারক। তাই সাবধান থাকতে হবে।"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন