আজ, শুক্রবার থেকে ফের পদ্মা নদীতে মাছ ধরতে পারবেন ভারতীয় মৎস্যজীবীরা। বৃহস্পতিবার এই অনুমতি দিয়েছে বিএসএফ (বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স)। তবে, ভারতীয় সীমানার পদ্মা নদীতেই কেবল মাছ ধরার জন্য মুর্শিদাবাদের জলঙ্গীর মৎস্যজীবীদের সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে সীমান্ত রক্ষীবাহিনীর তরফে। গত ১৭ই অক্টোবর , মুর্শিদাবাদ সীমান্তে টহলদারির সময় গুলির আঘাতে প্রাণ হারান বিএসএফের হেড কনস্টেবল বিজয় ভান সিং। বিএসএফ দাবি করে , বর্ডার গার্ড বাংলাদেশর (বিজিবি) ছোঁড়া গুলিতেই নিহত হন ওই কনস্টেবল। তারপর থেকে পদ্মা নদীতে জলঙ্গীর মৎস্যজীবীদের মাছ ধরতে যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা জারি করে বিএসএফ।
আরও পড়ুন: ট্রেন যাত্রার ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা পড়ুয়াদের, যাত্রী নিরাপত্তা ঘিরে প্রশ্ন
প্রসঙ্গত, পদ্মা নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে পথভ্রষ্ট হয়ে বাংলাদেশ সীমান্তে ঢুকে পড়ে নৌকার মালিক প্রণব মন্ডলদের নৌকা। এরপরই বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) আটক করেন প্রণব মন্ডল এবং বিকাশ ও অচিন্ত্য মন্ডলকে । পরবর্তীতে বিকাশ এবং অচিন্ত্যকে ভারতে ফেরত পাঠিয়ে বিএসএফকে ফ্ল্যাগ মিটিংয়ের জন্য ডেকে পাঠানো হয়। বিজিবির সেই ডাকে সাড়া দিয়ে বিকাশ মন্ডলকে নিয়ে সেই মিটিংয়ে গিয়েছিল বিএসএফ। অচিন্ত্য দাঁড়িয়ে ছিলেন নদীর পাড়েই। এর পরই উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। বিএসএফ জানায়, তাঁদের পাঁচজন জওয়ান ফ্ল্যাগ মিটিংএ অংশ নিতে যাওয়ার সময় বিজিবি জওয়ানরা গুলিবর্ষণ শুরু করে। ঘটনাস্থলেই নিহত হন বিএসএফের হেড কনস্টেবল বিজয় ভান সিং। এ ঘটনায় জখম হন আরেক বিএসএফ জওয়ান রাজভির যাদব।
কী বলছেন ভারতীয় মৎস্যজীবীবিকাশ মন্ডল?
“বিজিবির সেনা যখন বলল যে তাঁরা প্রণবকে ছাড়বে না, তখন আমরা সকলেই নৌকাতে ফিরে আসি। কয়েক মিনিটের মধ্যেই ওরা গুলি চালানো শুরু করে। নিজেকে বাঁচাতে নৌকায় ভিতর মাথা নীচু করে বসে পড়েছিলাম। তখনও জানতাম না ঠিক কী ঘটছে! পরে দেখলাম এক বিএসএফ জওয়ানের দেহ রক্তে ভেসে যাচ্ছে, আর অন্যজনের হাতে আঘাত লেগেছে।” এই ঘটনায় কার্যত বিধ্বস্ত বিকাশ মন্ডল বলে চলেন, “আমরা নদীর মাঝখানেই ছিলাম। তবু বিজিবির সেনারা বাংলাদেশের মধ্যে প্রবেশ করেছি বলে ধরে নিয়ে গেল। এমনকি আমাদের মাছ ধরার জাল আর যে ইলিশ মাছ ধরেছিলাম সেগুলিও ধরে নিয়ে যায়। আমরা পদ্মা নদীতে ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে মাছ ধরছি। কিন্তু কখনও এরকম ঘটনার সম্মুখীন হতে হয়নি।”
আরও পড়ুন: ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে পিএফ অফিসারের ২.৮৯ কোটির সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করল ইডি
মাছ ধরেই জীবীকা নির্বাহ করেন মুর্শিদাবাদের জলঙ্গীর মৎস্যজীবীরা। এই ঘটনার পর বিএসএফের নির্দেশে তাদের রোজকারও প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়ার পথে। ফলে মৎস্যজীবীদের তরফে বিএসএফ সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আবেদন জানানো হয়। তারপরই, বৃস্পতিবার মৎস্যজীবীদের সঙ্গে বৈঠক হয় সীমান্ত রক্ষা বাহিনীর। সেখানেই সিদ্ধান্ত হয় আজ থেকে ফের পদ্মা নদীতে মাছ ধরতে পারবেন ভারতীয় মৎস্যজীবীরা। বিএসএফের (বহরমপুর) ডিআইজি বলেন, 'মৎস্যজীবীদের আবেদনের ভিত্তিতে আমরা এই অনুমতি দিয়েছি। তবে, তাদের ভারতীয় সীমান্তের মধ্যে থেকেই মাছ ধরতে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।'
Read the full story in English