কারও মাথায় বোঝা তো কারও কাঁধে ব্যাগ। হালকা রোদের উষ্ণতা গায়ে মেখে দাঁড়িয়ে তীর্থযাত্রীরা। লম্বা লাইন পড়েছে আট নম্বর থেকে শুরু করে কচুবেড়িয়াতেও। নামখানার লঞ্চগুলোতে উপচে পড়া ভিড়। সবার গন্তব্য গঙ্গাসাগর। জনসমুদ্র কপিলমুণির আশ্রম সংলগ্ন সাগরতট। রাত পোহালেই মকর সংক্রান্তির পূণ্য স্নান। বেলা বাড়লে ভিড় আরও বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।
গঙ্গাসাগর মানেই নাগা সাধুদের ভিড়। মন্দিদের পাশে তাদের জন্য নির্দিষ্ট জায়গার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। সেখানেই নিজস্ব কায়দায় পূণ্যার্থীদের আশীর্বাদ করছেন তারা। মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, সুজিত বসু এবং গিয়াসউদ্দিন মোল্লা রয়েছেন গঙ্গাসাগরে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ আরও বেশ কয়েকজন মন্ত্রী এদিনই সাগরে পৌঁছাবেন। প্রশাসনের আধিকারিক, কর্মীদের পাশাপাশি মেলা সফল করতে মন্ত্রীরাও কড়া নজর রাখছেন সবকাজে। মেলা ঘিরে কড়া নিরাপত্তার আয়োজন করেছে জেলা ও রাজ্য প্রশাসন।
আরও পড়ুন: ‘কুম্ভে অর্থ সাহায্য করে, গঙ্গাসাগর মেলায় নয়’, কেন্দ্রকে ঝাঁঝালো তোপ মমতার
স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, উপকূলীয় রক্ষী বাহিনী, সেনা, জল পুলিশ, বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে সাগর দ্বীপে মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, গোটা মেলা প্রাঙ্গনই সিসিটিভিতে মুড়ে ফেলা হয়েছে। সুরক্ষার নজরদারিতে উড়বে ড্রোন। আট নম্বর লট অঞ্চলে জলপথে নিরবিচ্ছিন্ন নজরদারি চালাবে সুন্দরবনন ও কচুবেড়িয়া পুলিশ।
নাখানা, চেমাগুড়ি, কচুবেড়িয়া, ৮ নন্বর লটে কুইক রেসপন্স টিম থাকছে। এছাড়াও আপদকালীন পরিস্থিতির জন্য বেশ কয়েকটি জলযানের বন্দোবস্ত রযেছে। মোতায়েন করা হয়েছে হাজারেরও বেশি সিভিক ভলেন্টিয়ার। প্রশাসনের তরফে বিভিন্ন প্রবেশ পথে নজরদারির জন্য রিয়েল টাইম মনিটারিং সিস্টেমের আয়োজন করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে থাকবে ইন্ট্রিগেটেড মনিটারিং সিস্টেম। জোয়ার ভাটা থেকে আবহাওয়ারও খবরও মিলবে এখান থেকে। কাকদ্বীপ থেকে শুরু করে গঙ্গাসাগর পর্যন্ত প্রতিটা জায়গাতেই ক্লিনিং-এর ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবকরা পরিচ্ছন্নতা রাখছেন সাগর তট। সাগর মেলায় প্রবেশ করা সমস্ত গাড়িতেই লাগানো হয়েছে বিশেষ যন্ত্র। যার সাহায্যে প্রতিটা মুহূর্তে মাপা হচ্ছে গাড়ির গতিবেগ।
আরও পড়ুন: গঙ্গাসাগর পুণ্যার্থীদের জন্য ৫ লক্ষ টাকার বীমা, ঘোষণা মমতার
ক্লিন গঙ্গাসাগর। এটাই এবার মেলার স্লোগান। তাই মেলা প্রাঙ্গনজুড়ে তৈরি করা হয়েছে হাজারেও বেশি শৌচালয়। প্শাসন সূত্রে খবর, এবার পূণ্যার্থীদের জন্য ২০০ বাসের আয়োজন করা হয়েছে, যা গতবারের তুলনায় ৩০০ বেশি। এছাড়াও সংরক্ষিত থাকছে ১০০ বাস। রাজ্য প্রশাসনের এক আধিকারিকের কথায়, '১৪ থেকে ১৬ পর্যন্ত মেলায় ভিড় থাকবে। সেই সময়ের জন্য মেলাজুড়ে থাকছে কড়া নজরদারি।'
আপাতত গঙ্গাসাগর যেন বৃহৎ ভারতের এক খণ্ডিতরূপ। আলোকমালায় সাজানো হচ্ছে গঙ্গাসাগরের মেলার এলাকা। ঘাটগুলিতে নানা রঙের পতাকা উড়ছে উত্তরে হাওয়ায়। মুড়িগঙ্গা নদীর ঘাট ধরে সাজানো হয়েছে কাকদ্বীপকে। হিন্দি ও বাংলায় চলছে সচেতনতার প্রচার।
Read the full story in English