Advertisment

বেড়ানোর ষোলোআনা স্বাদ চেটেপুটে নিন, বাংলার এপ্রান্তের অসাধারণ সৌন্দর্য্য এককথায় অনবদ্য!

দিন কয়েকের ছুটিতে বেড়ানোর আদর্শ জায়গা হল বাংলার এই তল্লাট।

author-image
Nilotpal Sil
New Update
gangani is may be a perfect tourist destination

দিন কয়েকের ছুটিতে বেড়িয়ে আসুন অপূর্ব এই এলাকা থেকে।

দিন কয়েকের ছুটিতে কোথাও বেড়ানোর প্ল্যান করছেন? তবে কলকাতার কাছেই এই অফবিট ট্যুরিস্ট স্পটে একবার ঢুঁ মেরে আসতেই পারেন। এমন নিরিবিলি ও নিঃঝুম পরিবেশে সময় কাটানোর জায়গা আর দুটি পাবেন না, একথা হলফ করে বলছেন অনেকে! তাহলে আর দেরি নয়, প্ল্যান সাজান আর বেড়িয়ে পড়ুন।

Advertisment

পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতার গনগনি। আশেপাশের ঘন জঙ্গলঘেরা এই এলাকায় প্রকৃতি যেন তার সৌন্দর্য্যের ঝুলিটা উপুড় করে ঢেলে দিয়েছে। ভূতত্ববিদরা বলেন, শীলাবতী নদীর স্রোত বয়ে-বয়ে হাজার-হাজার বছর ধরে এখানে তৈরি হয়েছে গভীর এক খাদ। তার চারিদিকে রয়েছে লাল ও গেরুয়া মাটির টিলায় তৈরি ভাস্কর্য। অনেকেই এই খাদকে আমেরিকার গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের ছোটো সংস্করণ বলে থাকেন। এখানকার নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য ঠিক যেন ক্যালেন্ডারে টাঙিয়ে রাখা ছবির মতো। শীতের গনগনির শোভাটাই মনকে ভরিয়ে তুলবে। নিরিবিলি-নির্জন এই পরিবেশ আপনার ও আপনার সঙ্গীর প্রতিটি মুহূর্ত করে তুলবে আরও রঙিন, আরও বর্ণময়।

গনগনি নিয়ে একটি চালু মিথ রয়েছে। এখানকার খাদটি আপনি থেকেই সৃষ্টি হয়েছে, এমনই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তবে কথিত আছে, অজ্ঞাতবাসে থাকার সময়ে একসময় পাণ্ডবরা নাকি এখানে এসেছিলেন। একদিন যুধিষ্ঠির নদীর তীরে এক ব্রাহ্মণকে বসে কাঁদতে দেখেন। তিনি কাছে গিয়ে ওই ব্যক্তির কান্নার কারণ জানতে চান।

ওই ব্রাহ্মণ নাকি যুধিষ্ঠিরকে বলেছিলেন নদীর এক পাশে একটি রাক্ষস আছে। সেই রাক্ষসটি প্রতিদিন একজন করে মানুষ খায়। আজ তাঁর পালা। একথা শুনেই যুধিষ্ঠির তাঁর ভাই ভীমকে ওই রাক্ষসকে হত্যার নির্দেশ দেন। দাদার কথা শুনে ভীম গিয়ে রাক্ষসের সম্মুখীন হন। রাক্ষসের সঙ্গে ভীমের প্রবল যুদ্ধ হয়। শেষমেশ রাক্ষসকে হত্যা করতে সক্ষম হন ভীম। এই ভীম ও রাক্ষসের মধ্যে ভয়ঙ্কর যুদ্ধের জেরেই শীলাবতীর কোলে ওই খাদের সৃষ্টি হয়েছে বলেও কথিত রয়েছে।

আরও পড়ুন- কলকাতা থেকে সকালে বেরিয়ে সন্ধেয় ফিরুন, মন জুড়োবে অসাধারণ এই নদীপাড়

ইতিমধ্যেই রাজ্যের পর্যটন মানচিত্রে গনগনি অন্যতম একটি নাম হিসেবে উঠে এসেছে। এখানকার অপরূক প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যই টেনে আনছে পর্যটকদের। দিন কয়েকের ছুটিতে গনগনি বেড়ানো জমিয়ে উপভোগের দরুণ সুযোগ রয়েছে। বছরের সব সময়ই কম-বেশি পর্যটকরা এখানে আসেন। তবে শীতেই এখানে পর্যটকদের ভিড় বাড়ে।

গনগনিতে কী দেখবেন?

গনগনিতে রয়েছে বিশাল গিরিখাত। তারিয়ে-তারিয়ে তার শোভা উপভোগ করতে পারবেন। গনগনির কাছেই রয়েছে কংসাবতী নদী। চাইলে সেখান থেকেও ঘুরে আসতে পারেন। এছাড়াও গোপগড়ের ইকো পার্ক, সর্বমঙ্গলা কালী মন্দির, রাজা দুর্জন সিংহের রাধাবল্লভ মন্দির, রাধানাথ সিংহ স্মৃতি মন্দিরও এলাকার দর্শনীয় স্থানগুলির মধ্যে অন্যতম।

আরও পড়ুন- স্নিগ্ধ শীতল সাগরতটে মন হারাবেই হারাবে! কলকাতার খুব কাছের এই সমুদ্রপাড়ে অনাবিল আনন্দ

গনগনিতে কোথায় থাকবেন?

গনগনিতে থাকার ব্যবস্থা না থাকলেও ওই এলাকার মাত্র ২ কিলোমিটারের মধ্যেই একাধিক হোটেল, ধর্মশালা রয়েছে। গড়বেতায় রয়েছে বেশ কিছু হোটেল। হোটেল ভাড়াও নাগালের মধ্যেই। এছাড়াও চন্দ্রকোণা বা মেদিনীপুরের কোনও হোটেলে থেকেও গনগনিতে যেতে পারেন।

গনগনিতে কীভাবে যাবেন?

কলকাতা থেকে প্রায় ১৮০ কিলোমিটার দূরত্বে রয়েছে এই গনগনি। হাওড়া থেকে ট্রেনে চেপে যেতে পারেন। হাওড়া থেকে ট্রেনে গড়বেতা স্টেশনে পৌঁছে যান। ট্রেনে গড়বেতা পৌঁছতে প্রায় তিন ঘণ্টা সময় লেগে যাবে। গড়বেতা স্টেশন থেকে মেরেকেটে ৪ কিলোমিটার দূরত্বেই রয়েছে গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন গনগনি। কলকাতার দিক থেকে সড়কপথে গেলে ৬ নং জাতীয় সড়ক ধরুন। পাঁশকুড়া, ঘাটাল, চন্দ্রকোণা রোড হয়ে গড়বেতা চলে যান। কলকতার ধর্মতলা থেকে গড়বেতা যাওয়ার বাস ছাড়ে। গড়বেতা বাসস্ট্যান্ডে নেমে সেখান থেকে ছোট গাড়িতে পৌঁছে যান গনগনিতে।

আরও পড়ুন- কলকাতার খুব কাছেই নিরিবিলি অপরূপ এই সমুদ্রতট, ফাঁক পেলে ঘুরেই আসুন

tourism West Bengal Midnapur Tourist Spot Weekend
Advertisment