কলকাতার এক শ্মশানে মৃতদেহ সৎকারের ভাইরাল ভিডিও ঘিরে বৃহস্পতিবার দিনভর সরগরম রইল বাংলা। 'অমানবিক, অবর্ণনীয়, অসংবেদনশীলভাবে মৃতদেহের শেষকৃত্য করা হচ্ছে' বলে টুইটারে সোচ্চার হন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। এ ঘটনায় রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিবের থেকে তথ্য তলব করেন তিনি। অন্যদিকে, স্বাস্থ্য দফতরকে উদ্ধৃত করে টুইটারে কলকাতা পুলিশের তরফে দাবি করা হয়, মৃতদেহগুলি করোনা আক্রান্ত রোগীদের নয়। এমনকি, এটা 'ভুয়ো খবর' বলে দাবি করে লালবাজারের তরফে জানানো হয়েছে, যাঁরা এই খবর ছড়িয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে, এ ঘটনায় পাল্টা সরব হয়ে রাজ্যপাল লিখেছেন, ''সংবাদ মাধ্যমের কণ্ঠরোধ বা সংশ্লিষ্ট মানুষদের পুলিশ দিয়ে ভয় দেখানোর দিন শেষ। এসব আর বরদাস্ত করা হবে না।''
ঠিক কী ঘটেছে?
কলকাতার একটি শ্মশানে মৃতদেহ সৎকার নিয়ে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। স্থানীয়দের একাংশের তরফে সংশয় প্রকাশ করা হয়, ওই মৃতদেহগুলি করোনা আক্রান্ত রোগীদের। এই ভিডিও ঘিরে রীতিমতো শোরগোল পড়ে যায়। এই প্রেক্ষাপটে টুইটারে এ বিষয়ে সোচ্চার হন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। টুইটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে ধনকড় লেখেন, ''যেভাবে মৃতদেহ সৎকার করা হচ্ছে, তা নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন।'' এ নিয়ে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিবের কাছে তথ্য তলব করেন রাজ্যপাল।
আজ বাংলার বড় খবর: মৃতদেহ সৎকার নিয়ে সোচ্চার রাজ্যপাল-তৃণমূলের নয়া কর্মসূচি শুরু-‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে’ ফের খুন ‘তৃণমূলকর্মী’-কালই রাজ্যে বর্ষা
এদিকে, কলকাতা পুলিশের তরফে টুইটারে জানানো হয়, ''রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, মৃতদেহগুলি করোনা আক্রান্ত রোগীদের নয়। হাসপাতালের মর্গে পড়ে থাকা বেওয়ারিশ দেহ। যাঁরা এই খবর ছড়িয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
এই প্রেক্ষাপটে আবারও আসরে নামেন রাজ্যপাল। এ ঘটনায় টুইটারে ধনকড় লিখেছেন, ''মানবাধিকার কর্মী এবং সংবাদ মাধ্যমের এই একটি ক্ষেত্রে অন্তত সক্রিয় হয়ে মানুষের কাছে তথ্য তুলে ধরার সময় এসেছে। রাজ্যকে কোনও ভাবেই পুলিশ-পরিচালিত রাজ্যে পরিণত হতে দেওয়া যায় না। সংবিধানের ২১ নম্বর ধারায় নাগরিকের অর্জিত মানবিক অধিকার হরণ এবং দমনমূলক পদক্ষেপও চলতে দেওয়া যায় না।"
এরপরই মুখ্যমন্ত্রীকে ট্যাগ করে রাজ্যপাল লিখেছেন, ''মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে বিস্তারিত জানতে চাইব এবং চূড়ান্ত পর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে যাব। সংবাদ মাধ্যমের কণ্ঠরোধ বা সংশ্লিষ্ট মানুষদের পুলিশ দিয়ে ভয় দেখানোর দিন শেষ। এসব আর বরদাস্ত করা হবে না। স্বরাষ্ট্রসচিবের থেকে জবাব এসেছে। মৃতদেহ সৎকারে অব্যবস্থা কার্যত স্বীকার করে নিয়ে ভবিষ্যতে নিয়ম-পদ্ধতি পালনের কথা বলা হয়েছে। এমন অমানবিক অপরাধ যাঁরা করেছেন, তাঁদের ছেড়ে পুলিশ লেলিয়ে যাঁরা এমন ঘটনা সামনে এনেছেন তাঁদের উচিত শিক্ষা দেওয়ার অপচেষ্টা শুরু হয়েছে।''
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন