হনুমান জয়ন্তীতে রাজ্যে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এবং অশান্তি এড়াতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সাহায্য নিতে রাজ্যকে নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বুধবার ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরন্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ এব্যাপারে অবিলম্বে রাজ্যরে সাহায্য করার জন্য নির্দেশ দিল কেন্দ্রকে। আগামিকাল, বৃহস্পতিবারই হনুমান জয়ন্তী, তার আগে রাজ্যকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সাহায্য নিতে নির্দেশ দিয়েছে উচ্চ আদালত। এদিন আদালতের নির্দেশিকা দেখে নিন একনজরে-
- হনুমান জয়ন্তী নিয়ে কোনও রাজনৈতিক নেতা কোথাও কোনও বক্তৃতা দিতে পারবেন না
- হনুমান জয়ন্তীর জন্য কেন্দ্রের কাছে আধাসেনা চাইবে রাজ্য
- এব্যাপারে অবিলম্বে কেন্দ্রকে সাহায্য করতে হবে
হনুমান জয়ন্তী নিয়ে রাজ্যের প্রস্তাব
- মিছিল বা শোভাযাত্রা যদি প্রশাসনের কোনও শর্ত না মেনে হয় তাহলে তার দায় সেই প্রতিষ্ঠান বা তাঁর সদস্যদের নিতে হবে
- শোভাযাত্রার কত জন থাকবেন তা আগে থেকে পুলিশকে জানাতে হবে
- শোভাযাত্রা শুরু এবং শেষ নির্দিষ্ট সময়ে করতে হবে
- ২ হাজার আবেদন জমা পড়েছে
- পুরো রুটে ব্যারিকেড করা এই মুহূর্তে সম্ভব নয়
- তবে স্পর্শকাতর এলাকায় ব্যারিকেড করা হবে
- স্বেচ্ছাসেবকদের নাম এবং ফোন নম্বর দিতে হবে
- একই এলাকার ক্ষেত্রে একই রুটে শোভাযাত্রা করলে সুবিধা হয়
- স্পর্শকাতর এলাকায় বসানো হবে সিসিটিভি
- মিছিলের শুরুতে এবং শেষ পর্যন্ত পুলিশ থাকবে
- পরের বছর থেকে ১৫ দিন আগে অনুমতি চাইতে হবে
- শেষ ৫ বছর ধরে যাঁরা এই শোভাযাত্রা করছেন শুধু তাঁরাই অনুমতি পাবেন
শিবপুর এবং রিষড়ায় সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনায় এবার রাজ্য পুলিশকে ভৎর্সনা কলকাতা হাইকোর্টের। মঙ্গলবার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর আইনজীবী হাইকোর্টের হস্তক্ষেপ চেয়ে মামলা করেন। সেই মামলায় বুধবার ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বলেন, রাজ্য পুলিশ না পারলে আধাসেনার সাহায্য় নিন। সামনেই হনুমান জয়ন্তী, ফের অশান্তির আশঙ্কায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে বললেন প্রধান বিচারপতি।
এদিন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বলেন, "চিকিৎসার চেয়ে প্রতিষেধক ভাল। গতবার গণেশ চতুর্থীর শোভাযাত্রা নিয়ে আমি শুনানি করেছি। গত ৮-৯ বছর ধরে কোনও ঘটনা ঘটেনি। সামনে হনুমান জয়ন্তী আসছে। প্রয়োজনীয় পদক্ষেরপ গ্রহণ করতে হবে। রাজ্য পুলিশ না পারলে প্যারামিলিটারির সাহায্য নিন।" এই মন্তব্যে শোরগোল ফেলে দিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম।
তিনি আরও বলেন, "ডায়মন্ডহারবারের একজন বিচারক রেজিস্ট্রার জেনালেরকে চিঠি লিখেছিলেন। তিনি কর্মসূত্রে ডায়মন্ড হারবারে থাকলেও তাঁর পরিবার থাকে শ্রীরামপুরে। তিনি নিজে থানা এবং পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তাদের কাছে সাহায্য চেয়ে পাননি। ২ ছেলে এবং মেয়েক নিয়ে শ্রীরামপুরে থাকে তাঁর পরিবার। তিনি হাইকোর্টের নিরাপত্তা চাইছেন। মানুষের মনে আস্থা ফেরাতে রুট মার্চ প্রয়োজন। শান্তি ফেরাতে কিছু করা দরকার। প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলেও কেন্দ্রীয় বাহিনী আসে। সেইরকম কিছু দরকার হলে প্রয়োজনীয় সাহায্য নিন।"
আরও পড়ুন অলি-গলিতে পুলিশ পিকেট, রেললাইনের ধারে RPF ক্যাম্প, প্রশাসনের নজরদারিতে স্বাভাবিক হচ্ছে রিষড়া
আদালতের পর্যবেক্ষণ, এই ধরনের মিছিল কোনও যানবাহন নিয়ে করতে দেওয়া ঠিক নয়। নির্দিষ্ট রুট ঠিক করতে হবে। মিছিলের গতিপথ নিয়ন্ত্রণ করা খুব দরকার।