শেষমেশ তাল কাটলই! রাজভবনের সঙ্গে শাসকদলের সম্পর্কে চিড়। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের কনভয়ে হামলা নিয়ে রাজ্যপাল সুর চড়াতেই যারপরনাই ক্ষুব্ধ তৃণমূল। জোড়াফুলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের কথায়, 'উনি নিশীথ প্রামাণিকের সঙ্গে কথা বলে বিজেপির এজেন্ডা অনুযায়ী বিবৃতি দিলেন।' তৃণমূলের মুখপত্রেও রাজ্যপালের কড়া সামালোচনা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত শনিবার কোচবিহারের দিনহাটায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের কনভয়ে হামলার অভিযোগ ওঠে। নিশীথ প্রামাণিকের গাড়ি লক্ষ্য করে বোমাবাজি, পাথর বৃষ্টি এমনকী গুলি চালানোরও অভিযোগ ওঠে। গোটা ঘটনায় বিজেপি আঙুল তুলেছে শাসকদল তৃণমূলের দিকে। নিশীথ প্রামাণিক নিজেও সাংবাদিক বৈঠক করে শাসকদলকেই তুলোধনা করেছেন।
রাজভবনের তরফেও ঘটনার কড়া বিবৃতি দেওয়া বয়েছে। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস নিজে কথা বলেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের সঙ্গে। রাজ্যপাল জানিয়েছেন, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতির অবনতি হলে তিনি নীরব থাকবেন না। এমনকী শনিবারের ঘটনা নিয়ে রাজ্য প্রশাসনের কাছে রিপোর্টও তলব করেছেন তিনি। রাজ্যপালের এই পদক্ষেপে ক্ষুব্ধ শাসকদল তৃণমূল। দলীয় মুখপত্রে কড়া সমালোচনা করা হয়েছে সিভি আনন্দ বোসের।
আরও পড়ুন- জঙ্গল থেকেই ঝাঁপ নৌকায়, মৎস্যজীবীর ঘাড়-মাথা কামড়ে খেল দক্ষিণরায়!
রাজ্যপালের এই পদক্ষেপের সমালোচনা শেনা গিয়েছে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের মুখেও। তিনি বলেছেন, 'উনি নিশীথ প্রামাণিকের সঙ্গে কথা বলার পর বিজেপির এজেন্ডা অনুযায়ী বিবৃতি দিলেন। উল্টোদিকের কারও কথা না শুনে একতরফা বিবৃতি রাজ্যপালের। বিজেপির দূত না হয়ে বাংলার মানুষের দূত হয়ে নিরপেক্ষভাবে নিজের দায়িত্ব পালন করবেন রাজ্যপাল, আমরা তাঁর কাছ থেকে এটাই আশা করি।' এছাড়াও রাজ্যপালের সঙ্গে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সাক্ষাৎ নিয়েও মুখ খুলেছেন কুণাল।
আরও পড়ুন- Sagardighi By-Election Live Updates: উপ-নির্বাচনে বেনজির সুরক্ষা সাগরদিঘিতে
তাঁর কথায়, 'সিবিআইয়ের এফআইআর-এ নাম থাকা সারদা-নারদায় অভিযুক্ত শুভেন্দুর সঙ্গে রাজ্যপাল বৈঠক করবেন, আর রাজ্য সরকারকে নীতি-কথা শোনাবেন, এটা হতে পারে না। উল্লেখ্য, রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে শুরু থেকে সম্পর্ক মসৃণ ছিল রাজ্য সরকারের। সরস্বতী পুজোর দিন বাংলায় হাতেখড়ি দিয়েছেন রাজ্যপাল। সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। মোটের উপর জগদীপ ধনকড়ের জমানা ভুলে বোস আসার পর থেকে রাজভবনের সঙ্গে সম্পর্ক 'ভালো' করার চেষ্টা শুরু করে দেয় নবান্ন। তবে এবার বোধ হয় সেই মধুর সম্পর্কের তাল কাটল।