রাতের অন্ধকারে জঙ্গল ছেড়ে বেরিয়ে সড়কপথ ধরে দুলকিচালে হেঁটে যাচ্ছিল পূর্ণবয়স্ক হিমালয়ান সজারু। তা দেখেই বুধবার রাতে পথে থমকে দাঁড়িয়ে যান পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার সার্কাস ময়দান এলাকার বাসিন্দারা। তাঁরাই খবর দেন বন দফতরে । বন দফতরের লোকজন সজারুটিকে উদ্ধার করেছে। যাওয়ার সময় তাঁরা জানিয়েছেন, উচ্চপদস্থ কর্তাদের সঙ্গে কথা বলার পর সজারুটিকে জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হবে।
কাটোয়া রেঞ্জের বন আধিকারিক শিবপ্রসাদ সিনহা বৃহস্পতিবার বলেন, 'সজারুটির বয়স আনুমানিক ৭ থেকে ৮ বছর। এটি পুরুষ সজারু। সাধারণত হিমালয় পর্বতমালা এলাকায় এই ধরনের সজারু দেখা যায়। সম্ভবত, সেই রকম কোনও জায়গা থেকেই সজারুটি ভাগীরথীতে ভেসে কাটোয়ায় চলে এসেছে। আশ্রয় নিয়েছিল নদী তীরবর্তী ঝোপ-জঙ্গলে। ওই জঙ্গলে খাদ্যের অপ্রতুলতার কারণেই হয়তো সজারুটি খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে ডেরা বাঁধতে চাইছিল।'
বনকর্তা জানিয়েছেন, সজারুটিকে বর্তমানে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। পরে সেটিকে বর্ধমানের রমনা বাগান অভয়ারণ্যে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। সজারুটি কীভাবে রাস্তায় এল এবং ওই এলাকায় আরও সজারু রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও বনআধিকারিক জানিয়েছেন। এই ঘটনার সঙ্গে বন্যপ্রাণী পাচারের চেষ্টার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না বন আধিকারিক। কারণ, এমনও হতে পারে যে কোনও পাচারকারীর কাছে ছিল সজারুটি। সেখান থেকে তা কোনওভাবে পালিয়ে গিয়েছে। আর, এসব কথা মাথায় রেখেই বনকর্মীরা সতর্কতার সঙ্গে নজর রাখছেন এলাকায়।
আরও পড়ুন- সন্ধের আকাশে অদ্ভুত আলো কীসের? অবশেষে জানা গেল রহস্য
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ভাগীরথীর বাঁধে ঝোপ-জঙ্গলের মধ্যে বা মাটির গর্তে বসবাস করে থাকে বেশ কিছু প্রজাতির বন্যপ্রাণী। করোনার কারণে লকডাউনের সময় কাটোয়া শহরে বনবিড়াল, বাঘরোল জাতীয় প্রাণী দেখা যাচ্ছিল। কিন্তু, এই প্রথম সজারুর সন্ধান পাওয়া গেল। তবে সংলগ্ন এলাকায় যে সজারুর উপস্থিতি রয়েছে, তার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছিল মাসখানেক আগেই। কাটোয়ার পার্শ্ববর্তী মন্তেশ্বরের তেঁতুলিয়া এলাকায় এক স্থানীয় বাসিন্দার বাড়ি থেকে একটি সজারুকে উদ্ধার করেছিল বন দফতর।