Advertisment

স্বসম্মানে পরীক্ষায় পাস হুগলির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ! পেলেন একেবারে লেটার মার্কস

কথা রেখেই বাজিমাত

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
PURTA_KARMADHAKHYA 1

ছবি- উত্তম দত্ত

গত ২৩ ফেব্রুয়ারি মাধ্যমিক পরীক্ষার শুরুতে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে নিজের ফেসবুকে এক দীর্ঘ পোস্ট করে ছিলেন হুগলি জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ ডঃ সুবীর মুখোপাধ্যায়। তিনি লিখেছিলেন, 'নিজের জন্মদাতা বাবা-মাকে, বাড়ির ও পাড়ার গুরুজনদের প্রণাম করে আর স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা গৃহ শিক্ষক-শিক্ষিকাকে প্রণাম করে পরীক্ষা হলে পৌঁছাও। মনে রাখবে আজ থেকে তোমার জীবনের আর-এক লড়াই শুরু হলো। চোয়াল শক্ত কর, মনকে একাগ্র কর। পরীক্ষা হলে পৌঁছাও। সর্বদা আমি রইলাম তোমাদের পাশে। কথা দিলাম আগলে রাখবো সন্তানের মত করে তোমাদের।'

Advertisment
publive-image
ছবি- উত্তম দত্ত

বৃহস্পতিবার অঙ্ক পরীক্ষার দিন ঈশ্বর যেন তাঁরও পরীক্ষা নিলেন। চণ্ডীতলা গরলগাছাতে সুবীরবাবুর বাড়ি। স্থানীয় উচ্চমাধ্যমিক স্কুলে এবার মাধ্যমিক সিট পড়েছে অন্য একটি গার্লস স্কুলের। এদিন শোয়া এগারোটা নাগাদ সুবীর বাবুর কাছে খবর আসে হাফিজা খাতুন নামে এক পরীক্ষার্থী তাড়াহুড়ো করে এডমিট কার্ড আনতে ভুলে গিয়ে প্রচন্ড কান্নাকাটি করছে।

publive-image
ছবি- উত্তম দত্ত

জেলার পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সুবীর মুখোপাধ্যায়ের কানে খবর আসতেই ছুটে যান স্থানীয় গরলগাছা হাইস্কুলে। সেখানকার প্রধানশিক্ষকের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। ছাত্রীটিকে আশ্বাস দেন তার চিন্তার কারণ নেই, পরীক্ষা শুরুর আগেই তার বাড়ি থেকে এডমিট কার্ড আনার দায়িত্ব তাঁর। খোঁজ নিয়ে জানা যায় ছাত্রীটি চণ্ডীতলা বরিজহাটি গার্লস স্কুলের ছাত্রী। বাড়ি তার পরীক্ষা সেন্টার থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে খানপুর মল্লিকপাড়া নামক এক প্রত্যন্ত গ্রামে।

আরও পড়ুন- মেলেনি কাটমানি, ক্ষোভে নির্মীয়মান সরকারি জলাধার গুঁড়িয়ে দিল দুষ্কৃতীরা

স্থানীয় জনপ্রতিনিধি হওয়ার সুবাদে সুবীরবাবু এলাকায় বেশ জনপ্রিয়। সুবীর বাইক চালিয়ে পৌঁছে যান ওই গ্রামে। যাতায়াতের পথ সুগম করে রেখেছিল তাঁর অনুগামীরা। যেন গ্রীন করিডর। প্রচন্ড গতিতে বাইক চালিয়ে ছাত্রীটির বাড়ি থেকে এডমিটকার্ড সংগ্রহ করে নির্দিষ্ট সময়ে তা পৌঁছে দেন ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের হাতে। হাফিজা ও নির্বিঘ্নে অঙ্ক পরীক্ষা দেয়।

হাফিজার পরীক্ষার ফলাফল বেরতে মাস খানেক দেরি আছে। তবে, পরীক্ষায় সম্মানের সঙ্গে পাস করলেন সুবীর মুখোপাধ্যায়। প্রমাণ করলেন ফেসবুকে শুধুমাত্র পোস্ট করার জন্য মাধ্যমিকের পরীক্ষার্থীদের পাশে থাকার কথা লেখেননি তিনি। প্রয়োজনে প্রকৃত জনপ্রতিনিধির মতই আচরণ করলেন হুগলি জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ।

madhyamik exam ADMIT CARD tmc
Advertisment