ঠিক ২ মাস আগেই তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, লোকসভা নির্বাচনে একাই লড়াই করবে তৃণমূল কংগ্রেস। শুক্রবার মুর্শিদাবাদের সভায় বক্তব্য় রাখতে গিয়ে তৃণমূল নেত্রী একের বিরুদ্ধে এক প্রার্থী দেওয়ার জন্য় আবেদন জানিয়েছেন। রাজনৈতিক মহল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এদিনের বক্তব্য় লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের বিশেষ কৌশল রয়েছে বলে মনে করছে। একেই সংখ্যালঘু অধ্যুষিত জেলা, তারওপর কংগ্রেসের লোকসভার পরিষদীয় নেতা তথা রাজ্য কংগ্রেসের সভাপতির বাড়ি এই মুর্শিদাবাদেই।
বিজেপি বিরোধী জোট করতে এর আগে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী স্ট্যালিন, ওড়িশার মুখ্য়মন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার, উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদবের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু নানা ইস্যুতে সরাসরি কংগ্রেসের সঙ্গে বিরোধিতা করেছে তৃণমূল। রাহুল গান্ধীকেও রেয়াত করেনি তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। দিল্লিতে কংগ্রেসের ডাকা একাধিক বৈছকে হাজির থাকেনি তৃণমূল। শুধু তাই নয়, বিজেপি বিরোধী জোট গড়তে কংগ্রেসের ডাকা বৈঠক বা আন্দোলন নিয়ে কটাক্ষ করতেও ছাড়েনি ঘাসফুল শিবির। তবে রাহুলের সাংসদ পদ যেতেই তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব বিজেপির বিরোধিতা করতে ছাড়েনি। রাহুল গান্ধির পাশে দাঁড়িয়েছে। এবার মমতা বলছেন একের বিরুদ্ধে এক প্রার্থী দেওয়ার কথা।
আরও পড়ুন- তৃণমূলের ‘চোখের বালি’ মালদা! নবজোয়ারের মাঝেই বৈঠকে বাধ্য হলেন অভিষেক
গত ২ মার্চ সাগরদিঘি উপনির্বাচনে কংগ্রেস প্রার্থীর কাছে বিপুল ভোটে হারতে হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসকে। তারপরই তৃণমূল সুপ্রিমো ঘোষণা করেছিলেন একাই লড়াই করবে তৃণমূল। তবে এদিন মমতার একের বিরুদ্ধে এক লড়াইয়ের আবেদনে বিজেপির বিরুদ্ধে যে বিরোধীদের জোটে তৃণমূল শামিল হতে চায় প্রকাশ্যে সেই বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করলেন। সম্প্রতি নীতীশ, তেজস্বীদের সঙ্গে মমতা বৈঠক করেছেন। তাঁদের সঙ্গে বিহারে জোটসঙ্গী কংগ্রেস। সম্প্রতি হিমাচলপ্রদেশে বিজেপিকে পরাজিত করে সরকার গড়়ে কংগ্রেস। তাছাড়া রাজস্থান, মধ্য়প্রদেশ, ছত্তিশগড়, কর্নাটকসহ একাধিক রাজ্যে বিজেপির মূল প্রতিপক্ষই কংগ্রেস। এর আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় আঞ্চলিক দলগুলিকে একজোট হয়ে লড়াই করার বার্তা দিয়েছিলেন। রাজনৈতিক মহলের দাবি, সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে কংগ্রেসকে ছাড়া বিজেপি বিরোধী জোট করা সম্ভব নয়। শুধু আঞ্চলিক দলগুলি একজোট হয়ে বিজেপির মতো শক্তির সঙ্গে লড়াই করে জয়ী হবে তা সোনার পাথরবাটির ভাবনা ছাড়া কিছু না।
আরও পড়ুন- সাগরদিঘি উপ-নির্বাচনের দু’মাসের মাথায় ‘ডিগবাজি’! ভোটের আগে জোটের ডাক মমতার
এর আগে কংগ্রেস দাবি করেছে তৃণমূল গোয়া, ত্রিপুরা ও মেঘালয়ে বিধানসভা নির্বাচনে লড়াই করতে গিয়েছে হাত শবিরের ভোট কেটে বিজেপির সুবিধা করে দিতে। তাছাড়া এরাজ্যে কংগ্রেস-তৃণমূল এখন অহি-নকুল সম্পর্ক। আর সিপিএমের হাত থেকে লড়াই করে ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল। সর্বভারতীয় এই দুটি দল কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশ মেনে চলতে বাধ্য হলেও বিজেপির বিরুদ্ধে এরাজ্যে একের বিরুদ্ধে এক প্রার্থী এরাজ্যে দেওয়া অসম্ভব বলেই মনে করে রাজনৈতিক মহল। ২০২৬-এ এরাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল, বিজেপি ও কংগ্রেস-বামেরা লড়াই করবে তা নিয়ে সন্দেহ নেই। অভিজ্ঞ মহলের মতে, তৃণমূল দাবি তুলবে এরাজ্যে তাদের শক্তি বেশি অতএব বিজেপির বিরুদ্ধে এখানে ঘাসফুল শিবির ৪২ আসনেই লড়াই করবে। তা কখনও মানবে না কংগ্রেস-বামফ্রন্ট। এর আগে ২০১৯-এ তৃণমূলের স্লোগান তুলেছিল ৪২-এ-৪২। যদিও তা ইতিহাস। অর্থাৎ একের বিরুদ্ধে এক ……..।