Chandramukhi potato: আলুর (Potato) দাম এই মুহূর্তে কমার সম্ভাবনাও তেমন একটা দেখা যাচ্ছে না। ২০-২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া আলু ৩০-৩৫-৪০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে বাজারে। টাস্ক ফোর্সের দাবি, "আলুর দর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ৩০-৩১ টাকা দরে আলু বিক্রি হচ্ছে।" বাইরের রাজ্যে আলু পাঠাতে না দেওয়ায় ধর্মঘটেও নেমেছিল পশ্চিমবঙ্গ প্রগতীশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতি। রাজ্যের মন্ত্রী বৈঠক করেছেন আলু ব্যবসায়ীদের সঙ্গে। ২৬ টাকার নীচে আলু পাইকরি বিক্রি করা সম্ভব নয় বলেই তাঁরা জানিয়ে দিয়েছেন। আলু নিয়ে হাজারো সমস্যার মাঝে নয়া বিতর্ক। কলকাতা-সহ শহরতলিতে বাজারে যে চন্দ্রমুখী আলু দেদার বিক্রি হচ্ছে, তা সব আদৌ কি চন্দ্রমুখী (Chandramukhi) প্রজাতির? এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে ক্রেতা থেকে চাষি বা ব্যবসায়ীদের মধ্যে।
যে কোনও সবজির বাজারে গেলেই আলু বিক্রেতারা চন্দ্রমুখী-চন্দ্রমুখী বলে চিৎকার করতে থাকেন। সাধারণত জ্যোতি আলুর থেকে ৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয় এই চন্দ্রমুখী আলু। ব্যবসায়ীদের দাবি, প্রকৃত চন্দ্রমুখী হলে দাম আর একটু বেশি হবে। সমস্ত আলু এমনভাবে মাটি মাখানো থাকে যে আলুর মান বুঝেই উঠতে পারেন না সাধারণ মানুষ। আলুর রং বা সাইজ দেখে বোঝারই উপায় নেই যে আদৌ সেটা চন্দ্রমুখী কিনা। তবে প্রশ্ন একটা থেকেই যায়। টাস্ক ফোর্স (Task Force) বিষয়টা খোঁজে নিয়ে দেখবে বলে জানিয়েছে।
তাহলে চন্দ্রমুখীর বদলে বাজার থেকে কি অলু কিনছেন? চন্দ্রমুখী বলে বিক্রি সব বাজারের আলু যে চন্দ্রমুখী? সে ব্যাপারে নিশ্চিত নন খোদ আলু ব্যবসায়ী থেকে কৃষকরা। অনেক ক্ষেত্রে খুচরো ব্যবসায়ীরাও জানেন না এমন নয়। তবে চন্দ্রমুখী মনে করেই আলু খাচ্ছেন ক্রেতারা। তবে কোনও কোনও ক্ষেত্রে চন্দ্রমুখী আলু বিক্রি হতে পারে। তবে সমস্ত বাজারে তা হচ্ছে না বলেই প্রশ্ন উঠছে।
আরও পড়ুন- Ilish: ইলিশপ্রেমীরা আহ্লাদে আটখানা হবেনই! টন টন মাছ ঢুকছে, দাম কোথায় নামতে পারে জানেন?
বর্ধমানের জামালপুরের আলু চাষি গৌতম পাল ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেন, "চন্দ্রমুখী ও হেমাঙ্গিনীর (Hemangini) মধ্যে পার্থক্য সাধারণ মানুষ বুঝতে পারবেন না। চন্দ্রমুখী লম্বা ভাব থাকবে। আলুর পিছনের দিকে সুতোর মতো থাকবে। হেমাঙ্গিনী খাওয়ার টেস্ট আলাদা। চন্দ্রমুখী একটু বালি বালি ভাব থাকবে। প্যাকেটের পার্থক্য থাকবে কমপক্ষে ৩০০ টাকার। চন্দ্রমুখী বেশি চাষ হয় তারকেশ্বর, চাপাডাঙা সহ বাঁকুড়া সংলগ্ন এলাকায়। হেমাঙ্গিনী বেশি চাষ হয় জামালপুর, মেমারিতে। হেমাঙ্গিনী সাদা দেখতে, চন্দ্রমুখী একটু লালচে হবে। হেমাঙ্গিনী ও জ্যোতি চাষে খরচ প্রায় একই। তবে চন্দ্রমুখী চাষ করতে খরচ ৬-৭ হাজার টাকা বেশি।"
পশ্চিমবঙ্গ প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি জগবন্ধু মণ্ডল বলেন, "এবছর বাংলায় হেমাঙ্গিনী আলু একটু বেশি চাষ হয়েছে। জ্যোতির থেকে হেমাঙ্গিনীর দাম কিছুটা বেশি। চন্দ্রমুখীর দাম আরও বেশি। কলকাতা-সহ নানা বাজারে অনেক সময় হেমাঙ্গিনী আলু চন্দ্রমুখী বলে বিক্রি হয়।" আর এক আলু চাষি আজহারউদ্দিন মণ্ডল, "হেমাঙ্গিনী আলু কিছুটা চন্দ্রমুখীর মতো দেখতে। তবে আলু যাঁরা চেনে তাঁরা দেখলে চিনতে পারবেন। কিছুটা মিল রয়েছে। হেমাঙ্গিনী শঙ্কর জাতীয় আলু। চন্দ্রমুখী সেদ্ধ হলে স্বাদ অনন্য। আগে এখানে এত হেমাঙ্গিনী চাষ হত না, এখন চাষ বেড়েছে।"
রাজ্য টাস্ক ফোর্সের সদস্য রবীন্দ্রনাথ কোলে বলেন, "বাজারে আলুর দর অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে।" বাজারে বিক্রি চন্দ্রমুখী আলু নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এই প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথ কোলে বলেন, "রাজ্যে চন্দ্রমুখী আলু চাষ হয় ৫ শতাংশ। বাকি চন্দ্রমুখী আলু বাইরে থেকে আমদানি হয়। তবে বাজারে চন্দ্রমুখীর বদলে অন্য আলু বিক্রি হয় কিনা এটা জানা নেই। এ বিষয়ে খোঁজে নিয়ে দেখা হবে।"