Advertisment

দিনমজুরের ছেলের তাক-লাগানো কীর্তি, দাঁত কামড়ানো লড়াই অনুপ্রেরণা যোগাতে বাধ্য

গরিব সন্তানের নজিরবিহীন কীর্তিকে কুর্নিশ প্রশাসনেরও। এলাকাবাসীরাও যারপরনাই খুশি।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
huge success in WBCS exam by son of day labourer

নজরকাড়া সাফল্যের পর মিষ্টি মুখ। ছবি: মধুমিতা দে

দিনমজুরের ছেলের এযেন বিশ্বজয়! ডব্লিউবিসিএস পরীক্ষায় নজরকাড়া সাফল্য ঝুলিতে পুড়ে তাকলাগানো ফল যুবকের। গরিব সন্তানের নজিরবিহীন কীর্তিকে কুর্নিশ প্রশাসনেরও। এলাকাবাসীরাও যুবকের দারুণ কীর্তিতে যারপরনাই খুশি।

Advertisment

ডব্লিউবিসিএস-এর এ গ্রেডের পরীক্ষায় ২৭ নম্বর র‍্যাঙ্ক করেছেন মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের ২ নম্বর ব্লকের বাসিন্দা কেশব দাস। দৌলতপুর পঞ্চায়েতের হরদমনগর গ্রামের বাসিন্দা কেশবের বাবা পেশায় পরিযায়ী শ্রমিক। কেশব দাস বিডিও হতে চলেছেন, একথা এলাকায় জানাজানি হতেই আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধবেরা ফুলের তোড়া ও মিষ্টি নিয়ে শুভেচ্ছা জানাতে ছুটে যাচ্ছেন তাঁর বাড়িতে। এলাকায় খুশির মেজাজ ছড়িয়ে পড়েছে। ছেলের সাফল্যে মাথা উঁচু বাবা-মা ও আত্মীয়স্বজনদের। তাঁরাও কেশবকে নিয়ে গর্ব বোধ করছেন।

কেশব দাস জানিয়েছেন, ২০২০ সালে ডব্লিউবিসিএস পরীক্ষায় বসেন তিনি। চলতি মাসের ২ ফেব্রুয়ারি চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। ডব্লিউবিসিএস এক্সিকিউটিভ 'এ' বিভাগে পশ্চিমবঙ্গে ২৭ র‍্যাঙ্ক করেছেন তিনি। তিনি আরও জানিয়েছেন, ২০১১ সালে হরদমনগর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ৫৭ শতাংশ নম্বার পেয়ে মাধ্যমিক, ২০১৩ সালে দৌলতপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ৭৬ শতাংশ নম্বর পেয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন তিনি। এরপর মালদহ কলেজে সংস্কৃত অনার্স নিয়ে ভর্তি হন। ২০১৬ সালে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হয়ে স্নাতক পাশ করেন। ২০১৮ সালে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৭৭ শতাংশ নম্বর পেয়ে এমএ পাশ করেন কেশব।

আরও পড়ুন- শারীরিক সম্পর্কের ‘টোপ’ দিয়ে প্রেমিককে ফোন গৃহবধূর, যুবক যেতেই গ্রেফতার

মালদহ হোস্টেলে থেকে পরীক্ষার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতেন কেশব। আর্থিক অনটনের জেরে তেমন একটা কোচিং নিতে পারেননি। তবে নিজে টিউশনি পড়িয়ে পড়াশোনার খরচ জোগাড় করতেন। তাঁর ছোট থেকেই ইচ্ছে ছিল শিক্ষক হওয়ার। কঠোর পরিশ্রমে ডব্লিউবিসিএস-এ নজরকাড়া সাফল্য এনে দিয়েছে তাঁকে।

আরও পড়ুন- ট্রেনে বসে হোয়াটসঅ্যাপেই খাবার অর্ডার দিন, মারকাটারি এই সার্ভিস মিলবে কীভাবে?

কেশব দাসের বাবা জ্ঞানবান দাস জানিয়েছেন, তাঁর দুই ছেলে ও এক মেয়ে। কেশব ছোট ছেলে। কেশব ছোট থেকেই ছিল কঠোর পরিশ্রম ও মেধাবী। এদিকে কেশবের সাফল্যে গর্বিত গোটা এলাকাও। কেশবের বাবা জানান তিনি একজন পরিযায়ী শ্রমিক। লকডাউনের পর থেকে বাড়িতে বসে রয়েছেন তিনি।

এলাকাতেই দিনমজুরি ও জমিতে কাজ করে কোনও রকমে সাংসারিক খরচের পাশাপাশি ছেলের পড়াশোনার খরচও জোগাড় করতেন তিনি। এই সামান্য আয়ে হিমশিম দশা হয় তাঁর। ছেলের পড়াশোনার খরচ জোগাড় করতে গিয়ে ব্যাংক থেকে ঋণও নিতে হয়েছে তাঁকে। এমনকী তাঁর স্ত্রীর সোনার গয়না পর্যন্ত বিক্রি করে দিতে হয়েছে। যা এখনও পর্যন্ত ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করতে পারেননি তিনি।

আরও পড়ুন- নকশিকাঁথায় ঝুলিতে পদ্ম সম্মান, সোনারপুরের প্রীতিকণা গোস্বামীর কঠিন সংগ্রাম চোখে জল আনবে

West Bengal Maldah examination Youth
Advertisment