Advertisment

রাষ্ট্রদ্রোহ আইনে সুপ্রিম রায়, কী বলছেন বাংলার মানবাধিকার কর্মীরা?

হাতিল হয়নি, স্থগিত হয়েছে দেশদ্রোহ আইন। তাই এখনও চিন্তা মেটল না।

author-image
Joyprakash Das
New Update
রাষ্ট্রদ্রোহ আইনে সুপ্রিম রায়, কী বলছেন বাংলার মানবাধিকার কর্মীরা?

বাতিল হবে দেশদ্রোহ আইন?

রাষ্ট্রদ্রোহ আইন স্থগিত করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। বুধবার রাষ্ট্রদ্রোহ আইন নিয়ে মামলার শুনানিতে এই আইনে বকেয়া বিচার, আবেদন, ১২৪ এ ধারায় আইনি কার্যকলাপ- সমস্ত স্থগিত করে দিয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের এই অন্তর্বর্তীকালীন রায়কে স্বাগত জানিয়েছে বাংলার মানবাধিকার রক্ষায় যুক্ত আন্দোলনকারীরা। তাঁদের অভিমত, এই আইন পুরোপুরি তুলে দেওয়া উচিত। প্রায় ১০০ শতাংশ ক্ষেত্রেই এই আইনের অপপ্রয়োগ হয় বলে মনে করেন তাঁরা।

Advertisment

মানবাধিকার কর্মী সুজাত ভদ্র ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেন, 'আমি এই আইনটা পুরোপুরি বাতিলের পক্ষে। আইনের বই থেকে চিরতরে লুপ্ত করে দেওয়ার পক্ষে। এই আইন অপপ্রয়োগের ইতিহাস আছে এবং স্বাধীন ভারতে এই আইনটার ওপর যে স্থগিতাদেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট তা সময়োচিত ও যুগান্তকারী পদক্ষেপ। ১৯৬২-তে একবার রাষ্ট্রদ্রোহ আইন নিয়ে চর্চা হয়েছিল। বাতিল করেনি কিন্তু অনেকগুলি গাইডলাইন দেওয়া হয়েছিল কেদারনাথ সিং মামলায়। সেগুলি কেউ মানেনি।'

এদিন শীর্ষ আদালত রায়ে বলেছে, যতদিন না কেন্দ্র ১২৪ এ ধারায় রাষ্ট্রদ্রোহ আইন পুনর্বিবেচনা না করছে ততদিন পর্যন্ত এই ধারায় কোনও মামলা করা যাবে না। সুজাত ভদ্র বলেন, 'যথারীতি সরকার বিরোধী একের পর লোককে গ্রেফতার করা হয়েছে। ফলে চূড়ান্ত অপপ্রয়োগের ওপর একটা ব্রেক হল আপাতত। নিসন্দেহে যুগান্তকারী পদক্ষেপ। ২০১১ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ১৩হাজার মানুষকে এই আইনে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার মধ্যে ৩১ জনও প্রমানিত হয়নি তাঁরা কোনও অপরাধে যুক্ত। কোনও শতাংশেই আসে না। সিকিউরিটি ওফ স্টেটের নামে যে কোনও বদমায়েশি রাষ্ট্রই এই আইন প্রয়োগ করে থাকে এটা ইতিহাসই বলে।' তাঁর বক্তব্য়, 'পরাধীন ভারতে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের গ্রেফতার করা হয়েছে। সেই আইনটা কেন এখনও থাকবে? ইংল্যান্ড নিজের দেশেই আইনটা রাখেনি। কেন ভারতে থাকবে? আইন শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য অন্য আইন আছে। এই আইনটা একশো শতাংশ অপব্যবহার হয়।'

কেন্দ্র পুনর্বিবেচনা না করা পর্যন্ত রাষ্ট্রদ্রোহ আইনে নতুন কোনও মামলা নয়, নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। আপাতকালীন সুপ্রিমো কোর্টের রায়ে খুশি বাংলার মানবাধিকার কর্মীরা। দীর্ঘ দিন মানবাধিকার আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত নিলাঞ্জন দত্ত। তিনি এই অন্তর্বর্তীকালীন রায়কে ঐতিহাসিক বলছেন। নিলাঞ্জন দত্ত বলেন, 'সুপ্রিম কোর্টের আজকের রায় ইতিবাচক। দেখা যাক ফাইনালি সরকার কী বলে। শেষ পর্যন্ত সুপ্রিমকোর্টে বিচারের রায় কি হয়। তবে এদিনের রায়কে স্বাগত জানাচ্ছি।' তাঁর অভিমত, 'ঔপনিবেশিক শাসকরা নিজেদের শাসন কায়েম করার জন্য এই আইন করেছিল। এখন তো সেই পরিস্থিতি নেই। অন্য আইন দিয়ে বিচার করা হোক। আইন যদি উঠে যায় তাহলে এই আইনে যাঁরা ভুক্তভোগী তাঁদের ক্ষতিপূরণ নিয়ে আন্দোলন করতে হবে। সম্মানজনক ভাবে যাতে তাঁরা সমাজে বাঁচতে পারে সেদিকটা দেখাও খুবই জরুরি।'

Human Rights West Bengal Sedition Law supreme court
Advertisment