/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2023/12/tmc-congress-bjp-isf.jpg)
কোন দলে কোন কোন নেতা চোখে পড়লেন এ বছর?
২০২৩ রাজ্য রাজনীতিতে তেমন নতুন মুখ উঠে আসেনি। তবে তারই মধ্যে রাজনীতির ময়দান কাঁপিয়েছেন আনকোরা দুই নেতা। একজন যদিও বা বিধায়ক, আরেকজন লড়াকু আইনজীবী। তিনি কোনও জনপ্রতিনিধি নন। ২০২৪-এ এই দুজনকে কি ভূমিকায় দেখা যায় তা নিয়ে জোর চর্চা বঙ্গ রাজনীতিতে।
এবছরে বঙ্গ রাজনীতিতে নতুন মুখ তেমন না উঠলেও সাড়া ফেলে দিয়েছেন ভাঙড়ের আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী। অন্যদিকে কংগ্রেসের তরুণ তুর্কি নেতা আইনজীবী কৌস্তভ বাগচীও ছিলেন বছরভর চর্চায়। রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেস নয়, রীতিমতো দলের কেন্দ্র ও রাজ্যেট শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধেও বিদ্রোহ জারি রেখেছেন তিনি। বাকিদের মধ্যে কিছুটা সাড়া ফেলেছেন শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। রাজনৈতিক নেতৃত্বের একটা বড় অংশ সামাজিক মাধ্যমে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।
২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের আগে নতুন দল ঘোষণা করেছিলেন পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকী তথা ভাইজান। ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের চেয়ারম্যান ঘোষণা করেছিলেন ভাই নওশাদ সিদ্দিকীকে।সিপিএম ও কংগ্রেস জোটের হাত ধরে শুরু হয়েছিল যাত্রা। একমাত্র ভাঙড় বিধানসভা কেন্দ্র থেকে জয় পেয়েছিলেন নওশাদ সিদ্দিকী। ভাইজান নিজে রাজনীতিতে থাকবেন না তা আগেই জানিয়েছিলেন। আইএসএফের হাল ধরেন নওশাদ।
২১ জানুয়ারি আইএসএফের প্রতিষ্ঠা দিবস। এবছর ওই দিন প্রথমে ভাঙড়ে আইএসএফের সঙ্গে তৃণমূলের দফায় দফায় সংঘর্ষ ঘটে। তারপর কলকাতার রাজপথে প্রতিবাদ করতে গেলো গ্রেফতার হন নওশাদ সিদ্দিকী। দীর্ঘ সময় তাঁকে জেলে কাটাতে হয়। পরবর্তীতে ফের তাঁর নামে ধর্ষণের অভিযোগ করেন এক তরুণী। সেই তরণীর সঙ্গে থানায় গিয়েছিলেন তৃণমূল নেতা সব্যসাচী দত্ত।
গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই প্রচারের পাদপ্রদীপে চলে আসেন এই তরুন বিধায়ক। গ্রেফতার, অভিযোগ, কর্মীদের বিপদে ছুটে যাওয়া, রাজ্যজুড়ে সভাসমাবেশ, ২০২৩-এ নওশাদকে ব্যাপক পরিচিতি দিয়েছে। নতুন দল আইএসএফ পঞ্চায়েত নির্বাচনেও বেশ কয়েকটি গ্রামপঞ্চায়েত দখল করে। বিধানসভায় তৃণমূল ও বিজেপি ছাড়া বিরোধী বিধায়ক হিসাবে যথেষ্ঠ সম্ভ্রম আদায় করে নিয়েছেন নওশাদ সিদ্দিকী।
কৌস্তভ বাগচী। ২০২৩-এ নওশাদের মতোই প্রচারের আলোয় ছিলেন। পুরুলিয়ার ঝালদা পুরসভার মামলা লড়ে প্রচারের আলোয় এসেছেন এই আইনজীবী নেতা। তারপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ব্যক্তি আক্রমণ করায় তাঁর বিরুদ্ধে কলকাতা পুলিশের বড়তলা থানায় অভিযোগ হয়। ৪ মার্চ গভীর রাতে কৌস্তভের ব্যারাকপুরের বাড়িতে কলকাতা পুলিশ হাজির হয়ে যায়। সেই রাতে তাঁর পরিবার পুলিশের দ্বারা হেনস্থা হয় বলে অভিযোগ। ভোর রাতে গ্রেফতার করে কলকাতায় আনা নয় কৌস্তভকে। তাঁর পক্ষে একাধিক আইনজীবী দাঁড়ায় হাইকোর্টে।
জামিন পাওয়ার পরই মস্তক মুণ্ডন করে কৌস্তভ। প্রতিজ্ঞা করেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারকে না হঠিয়ে তিনি চুল রাখবেন না। এখনও তাঁর মাথায় চুল রাখেন না। তারপর ইস্যু ভিত্তিক আন্দোলনে বিরোধী দলনেতা বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীর পাশাপাশি তাঁকে হাঁটতে দেখা যায়। তবুও দল তাঁর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করেনি। শুধু শীর্ষ নেতৃত্বের কড়া সমালোচনা করায় তাঁকে মুখপাত্র পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তবে এখনও নিজের স্ট্যান্ডেই অবিচল কৌস্তভ।
রাজনীতির ময়দানে নানা ভূমিকায় থেক সারা বছর তিনি নজর কেড়েছেন। বিজেপির শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। আগে সিপিএমের ডাকাবুকো যুবনেতা ছিলেন। তাঁর বাহুতে নাকি উল্কিতে কমিউনিষ্ট লেখার জ্বলজ্যান্ত প্রমানও আছে। কিন্তু বিজেপির বিধায়ক হয়ে নজর কেড়েছেন এই নেতা। মালদার বিশেষ দায়িত্বে রয়েছেন শঙ্কর ঘোষ। বিধানসভাতেই যথেষ্ট অ্যাক্টিভ তিনি। দলের নানা বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে এখন শঙ্কর ঘোষের বক্তব্য গুরুত্ব পায়।