মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেখানেই যাচ্ছেন, সঙ্গে অস্ত্র নিয়ে যাচ্ছেন। আর সেই অস্ত্র সাপ্লাই দিচ্ছে রাজ্যের মন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতিরা। দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে শুক্রবার পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরে এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। পাশাপাশি তৃণমূল কংগ্রেসের 'সেকেন্ড ইন কমান্ড’ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে 'ধেড়ে ইঁদুর' বলেও কটাক্ষ করেছেন তিনি। এই প্রসঙ্গে শুক্রবার সৌমিত্র খাঁ-র কটাক্ষ, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় 'শুভেন্দু অধিকারীর জুতোরও যোগ্য' নয়।
একইসঙ্গে এই বিজেপি সাংসদ দাবি করেন, ডিসেম্বরে রাজ্যের 'ধেড়ে মাথা' অর্থাৎ মুখ্যমন্ত্রী ধরা পড়বেন। যথারীতি বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁর এইসব মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যতম মুখপাত্র দেবু টুডু বলেন, '২০২১-এ বাংলা দখলের স্বপ্ন পূরণ না-হওয়ায় বিজেপি নেতারা উন্মাদ হয়ে গেছেন। উন্মাদরা যেমন আচরণ করেন, যেমন কথাবার্তা বলেন, তেমন দশাই এখন সৌমিত্র খাঁ-সহ বিজেপি নেতাদের হয়েছে।'
সারের কালোবাজারি বন্ধ ও সব চাষিদের থেকে সহায়ক মূল্যে ধান কেনার দাবিতে এদিন জামালপুর বিডিও অফিসে ডেপুটেশন জমা দেয় বিজেপির কিষান মোর্চা। সেই ডেপুটেশন কর্মসূচিতেই প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিজেপি সাংসদ তথা রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতি সৌমিত্র খাঁ। তাঁর বক্তব্যে আগাগোড়াই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করেন সৌমিত্র।
তিনি বলেন, 'অভিষেক বন্দ্যেপাধ্যায়কে ভয় পাবেন না। ও শুভেন্দু অধিকারীর জুতোরও যোগ্য নয়। সে যাচ্ছে কি না মেদিনীপুরে সভা করতে! লজ্জা করা উচিত। শুভেন্দু অধিকারী ছিল বলেই আজ মমতা নবান্নে বসে আছে। অটলবিহারী বাজপেয়ীজি ছিলেন বলেই উনি রেলমন্ত্রী হতে পেরেছিলেন। তখন অভিষেক তুমি কোথায় ছিলে হে? আজকে বড় বড় কথা বলছ। মেদিনীপুরে তোমার পিসি ১৯৫৬ ভোটে হেরেছে। হেরো মুখ্যমন্ত্রী চেয়ারে বসে আছে। এটা পশ্চিমবঙ্গের লজ্জা!’
আরও পড়ুন- এবার ছত্তিশগড়ে সক্রিয় ইডি, দুর্নীতির অভিযোগে ধৃত কংগ্রেসশাসিত বাঘেল সরকারের সচিব
তৃণমূল কংগ্রেসের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড তথা ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে এদিন 'ধেড়ে ইঁদুর' বলেও কটাক্ষ করেন সৌমিত্র খাঁ। তিনি বলেন, 'পিসি, ভাইপো-সহ গোটা পরিবার চোর। অভিষেকের শ্যালক, শালিকা, শ্বশুর সবাই চোর। গুষ্টি-শুদ্ধ চোর। এদের কারও বাড়ি কখনও থাইল্যান্ড। আবার কখনও ভারতবর্ষ হয়ে যায়। এরা সোনা চোর।'
পাশাপাশি তিনি সিআইডিকে 'ঠুঁটো জগন্নাথ' বলেও কটাক্ষ করেন। সৌমিত্র খাঁ বলেন, 'এনামুল যাতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে মুখ না- খোলে, তার জন্যেই সিআইডি এনামুলের কাছে গেছে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় একসময়ে যে কালো গাড়িটাতে চড়ত, সেটাই তো ছিল কয়লা মাফিয়াদের।'
চাষিদের উদ্দেশ্যে সৌমিত্র খাঁ বলেন, 'কেন্দ্রের সরকার ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে ৬০ লক্ষ টন ধান কেনার অর্ডার দিয়েছে। এখানে সমবায় সমিতিগুলি ন্যায্যমূল্যে ২,০৫০ টাকা কুইন্টাল দরে ধান কিনছে না। উলটে ১,৪০০-১,৬০০ টাকা দরে ব্রোকাররা ধান কিনছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একবার বলেছিলেন ধান বা চাল বিদেশে রফতানির অর্ডার দেওয়া হোক। ধানের কারচুপিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবার যুক্ত।' একইসঙ্গে তিনি বলেন, 'পার্থ, অনুব্রত, অভিষেক-সহ তৃণমূল কংগ্রেসের সবাই চোর। মানুষ তৃণমূল কংগ্রেসকে সামাজিক ভাবে বয়কট করবে। মানুষ এখন বিজেপির সঙ্গে আছে।'