ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় রোজই কেউ না-কেউ গ্রেফতার হচ্ছে। বেড়েই চলেছে গ্রেফতারির সংখ্যা। পুলিশ তদন্ত করলেও ঘটনার পারিপার্শ্বিকতা ও নানা জনের মন্তব্যে র্যাগিং যে হয়েছে সে বিষয়ে অভিজ্ঞমহল অনেকটাই নিশ্চিত। তবে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে নতুন করে যাদবপুরে দখলদারির রাজনীতি চোখে পড়ছে অভিজ্ঞমহলের। ডান-বাম সকলেই সরাসরি পথে নেমে গিয়েছে। র্যাগিংয়ের প্রতিবাদের পাশাপাশি চলছে ক্ষোভ-বিক্ষোভ, সংঘর্ষ, গ্রেফতার।
যাদবপুরের ঘটনায় পথে নেমেছে এসএফআই-আইসা, অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ ও যুব মোর্চা, তৃণমূল ছাত্র পরিষদসহ অন্য সংগঠনও। তিনটে প্রধান সংগঠন একইসঙ্গে পথেও নেমেছে। মুখোমুখি স্লোগান-সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। পৃথক পৃথক ভাবে দাবি-দাওয়াও পেশ করছে সংগঠনগুলি। রাজনৈতিক মহলের মতে, এক ছাত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যুর তদন্ত করছে পুলিশ।
একাধিক বর্তমান ও প্রাক্তন ছাত্র গ্রেফতার হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের দু'একজন প্রশাসনিক কর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়েছে। দোষীরা শাস্তি পাবে কি পাবে না তা সময়ই বলবে। তবে প্রথম বর্ষের ছাত্রের মৃত্যুতে যাদবপুরে ক্ষমতা দখলের বহর লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
আরও পড়ুন- যাদবপুর-কাণ্ডে ধৃত জয়দীপ, ছেলের গ্রেফতারি কিছুতেই মানতে পারছেন না মা-বাবা!
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে কলা বিভাগে বামপন্থী ছাত্র সংগঠনের বরাবরই আধিপত্য রয়েছে। ব়্যাগিং কাণ্ড নিয়ে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বামেদের দিকেই তোপ দেগেছেন। বামপন্থী ছাত্র সংগঠন ছাত্র মৃত্যুর প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছে। চলেছে স্লোগান, সরাসরি বিজেপির মিছিলের প্রতিবাদও করেছে তাঁদের কেউ কেউ। সংঘর্ষ ঘটেছে। কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা রক্ষীরা জড়িয়েছেন গন্ডগোলে। যাদবপুরে রেরে করে নেমে পড়েছে সংঘের অধীনে থাকা ছাত্র সংগঠন ও যুব মোর্চা।
আরও পড়ুন- যাদবপুর কাণ্ড: মারাত্মক মন্তব্য! ক্যাম্পাসে সেনা নামানোর কথা মদনের মুখে
এর আগে যাদবপুরে গেরুয়া বাহিনীর বিরুদ্ধে ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছিল। তৃণমূল ছাত্র পরিষদ তো যাদবপুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে নতুন দায়িত্ব দিয়ে দিল রাজন্যা হালদার ও সঞ্জীব প্রামাণিককে। ইতিমধ্যে তাঁরাও বিক্ষোভ-মিছিল করেছে। সিসিটিভির দাবিতে স্মারকলিপিও দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে। মোদ্দা কথা ছাত্র সংগঠনগুলির এখন 'অভিযান যাদবপুর' চলছে।
আরও পড়ুন- যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ার মৃত্যু: র্যাগিংয়ের ব্যাপারে আইন কী বলছে?
অভিজ্ঞমহলের মতে, একটি মৃত্যু ব়্যাগিং, হস্টেলের অব্যবস্থা, সিনিয়র ও প্রাক্তন ছাত্রদের ভূমিকা, ছাত্রদের নিরাপত্তা, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাজকর্ম-সহ একাধিক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। বেশিরভাগ প্রশ্নের জবাব এখনও মেলেনি। তারই মধ্যে ডান-বাম ছাত্র সংগঠনের নজরে যাদবপুর।