একটি সিংহ শাবক এবং তিনটে সাদা মাথার লেঙ্গুর (বিরল প্রজাতির এশিয় বাঁদর) পাচারের অভিযোগে বেলঘড়িয়া এক্সপ্রেসওয়ে থেকে গ্রেফতার তিন ব্যক্তি। ধৃতরা হলেন, ওয়াসিম রহমান (২৯), ওয়াজিদ আলী (৩৬) এবং মহম্মদ গুলাম গাউস (২৭)।
বনদফতরের একটি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, "কেন্দ্রীয় বন্যপ্রাণ অপরাধদমন ব্যুরো, কেন্দ্রীয় বন্যপ্রাণ অপরাধ দমন শাখা এবং পশ্চিমবঙ্গ বনবিভাগের যৌথ প্রচেষ্টায় পাচারকারীদের হাত থেকে একটি সিংহ শাবক (প্যান্থেরা লিও), দুটি বয়স্ক এবং একটি শিশু লেঙ্গুর (বিজ্ঞানসম্মত নাম- ট্রাকিপিথেকাস পোলিওসেফালাস) উদ্ধার করা গিয়েছে"। একটি সূত্র মারফত খবর পেয়ে বনবিভাগের যৌথ বাহিনী বেলঘড়িয়া এক্সপ্রেসওয়ের কাছে কেন্দ্রীয় বিহার হাউসিং কমপ্লেক্সে হানা দিয়ে এই প্রাণীগুলিকে উদ্ধার করে।
আরও পড়ুন খড়ের বাড়ি থেকে রাষ্ট্রপতি ভবন, স্বচ্ছ ভাবমূর্তি দিয়েই মন জয় ওড়িশার সাংসদের
রাজ্য বন দফতরের সহকারী ওয়াইল্ড লাইফ ওয়ার্ডেন সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, "এই প্রাণীগুলি শুধুমাত্র বিরল নয়, লুপ্তপ্রায়ও। এদের গাড়িতে বন্দি করে পাচার করার চক্রান্ত চলছিল। পাচারকারীদের হাতেনাতে আটক করা গেছে"। বন দফতরের এক আধিকারিক জানান, বাংলাদেশ থেকে এই প্রানীগুলিকে পাচার করার বরাত পেয়েছিল ধৃতেরা, সেইমতো প্রাণীগুলিকে পাচার করা হচ্ছিল পশ্চিমভারতের রাজ্যগুলিতে।
উদ্ধার করা সিংহশাবক
সোমনাথবাবু আরও জানান, প্রাণীগুলি লুপ্তপ্রায় এবং বিদেশি প্রজাতির হওয়ায় ভারতের বাজারে এর আনুমানিক মূল্য অত্যন্ত বেশি। তাই টাকার লোভে এই প্রাণীদের বেছে নেয় পাচারকারীরা।
আরও পড়ুন নজিরবিহীন! বেথুন কলেজের ভর্তির ফর্মে প্রথমে ‘মানবতা’, পরে হিন্দু-মুসলিম
বনদফতর থেকে জানানো হয়েছে, উদ্ধার হওয়া প্রাণীদের আলিপুর চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় পাচারের সময় এই প্রাণীদের মৃত্যু ঘটে। আবার অনেক সময় নিজেরদের স্বার্থে পাচারকারীরা প্রাণীদের মেরে তাঁদের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ বিক্রিও করে দেয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বন দফতরের এক আধিকারিক বলেন, "এই মুহুর্তে চোরাশিকারী এবং পাচারকারীদের জন্য পশ্চিমবঙ্গ হল সেই জায়গা যেখান থেকে লুপ্তপ্রায়, বিরল প্রজাতির প্রাণীদের এবং তাঁদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় বেআইনিভাবে বিক্রি করা সহজ। শুধু তাই নয়, ভারত ও প্রতিবেশী দেশগুলির মধ্যে চোরাচালানের জন্যও বাংলাকে 'ট্রানজিট পয়েন্ট' হিসাবে ব্যবহার করছে চোরাপাচারকারীরা।
Read the Full story in English