Zero waste Concept: ফেলে দেওয়া ব্যবহারিক বর্জ্য (waste) পদার্থ দিয়ে হাতের নিপুণ ছোঁয়ায় তৈরি হচ্ছে বিনোদনের বস্তু। ফুলের তোড়া থেকে শুরু করে দেওয়ালে ঝোলানো রাধাকৃষ্ণের ছবি বা আরও কত কী! অবাক করা সেসব জিনিস দেখামাত্রই চোখ টেনে নেবে বৈকি! তবে এমন হাতের কাজ এবং অপরূপ শিল্পকলার পিছনের গল্পটা কিন্তু বেশ অন্যরকম।
বাড়ির পরিত্যক্ত জিনিসপত্র, বর্জ্য পদার্থ, ফল ও সবজির খোসা রয়েছে এই সমস্ত কিছুর মধ্যে। ডাস্টবিনে (Dustbin) না ফেলে সেই সব পরিত্যক্ত সামগ্রী দিয়ে ঘর সাজানোর জিনিস তৈরি করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন হলদিয়ার (Haldia) এক যুবক।
হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যালসের (Haldia Petrochemicals Ltd) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার বছর ৩৫-এর পবিত্র দাস (Pabitra Das)। তাঁর এই সাফল্যের স্বীকৃতি স্বরূপ ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডসের (India Book of Records) পাশাপাশি আমেরিকা বুক অফ রেকর্ডসের (America Book of Records) সম্মানও অর্জন করেছেন তিনি।
কারখানায় কাজের সময়টুকু বাদ দিয়ে অবসরে নানা হস্তশিল্প নিয়ে ব্যস্ত থাকেন পবিত্র দাস। হলদিয়ার আজাদ হিন্দ নগরের বাসিন্দা পবিত্রর প্রধান লক্ষ্য দূষণমুক্ত পরিবেশ গড়ে তোলা। কোনও বর্জ্য পদার্থ ফেলা যাবে না। তা দিয়ে একটু বুদ্ধি খাটিয়ে কিছু হাতের কাজ তৈরি করা যেতেই পারে। ঘর সাজানোর নানাবিধ উপকরণ তৈরি করা যায়।
আরও পড়ুন- Sheikh Shahjahan Arrested: শাহজাহানের চমকে দেওয়া নাটকীয় গ্রেফতারি! কোথা থেকে? কখন ধরল পুলিশ? জানালেন ADG দক্ষিণবঙ্গ
প্লাস্টিক (Plastic) কিংবা ফেলে দেওয়া জিনিসপত্র পুনরায় ব্যবহার করে কাজে লাগানোর এই ভাবনা, পরিবেশ সুরক্ষার পক্ষে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। ২২ ইঞ্চি চওড়া এবং ১৪ ইঞ্চি লম্বা পরিসরের রাধা-কৃষ্ণের (Radha-Krishna) মূর্তি কালো প্লাস্টিকের ওপর ফুটিয়ে তুলেছেন তিনি।
তাতে ডিম, রসুন, পেঁয়াজ, লেবুর খোসা ব্যবহার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে খড়, নারকেল ছোবড়া, ধনে গাছের শিকড়-সহ ১৪ রকমের ফেলে দেওয়া জিনিসপত্র তিনি ব্যবহার করেছেন। এছাড়াও ডাবের মাথার অংশ দিয়ে গ্লাডিওলাস ফ্লাওয়ার, খড় দিয়ে বল পেন, শুকনো ফুল দিয়ে রাখি, কানের দুল, গলার হার তৈরি করেছেন। ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর (Pm Narendra Modi) কাছ থেকেও তিনি পেয়েছেন শুভেচ্ছা বার্তা।
আরও পড়ুন- Sheikh Shahjahan Arrested: সন্দেশখালির ‘বাঘ’ শেখ শাহজাহানের খেলা শেষ! অবশেষে গ্রেফতার বাহুবলী তৃণমূল নেতা
পবিত্রর কথায়, "চারপাশের পরিবেশকে দূষণমুক্ত রাখতে আমার লক্ষ্য জিরো ওয়েস্ট (Zero waste) মিশন। তাই বাড়ির বর্জ্য ফেলে না দিয়ে সেগুলো দিয়ে কিছু তৈরি করার ভাবনা কাজে লাগাই। পরিবেশ বাঁচাতে এই বার্তা বেশি মানুষের কাছে নিয়ে যেতে চাই।"
নিজের উদ্ভাবনী ভাবনায় তিনি তৈরি করেছেন 'সৌরদীপ'। ছোট্ট প্রদীপ বানিয়ে তাতে বসিয়ে দিয়েছেন ২ ইঞ্চি পরিসরের সোলার প্যানেল। সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয় তাতে। প্রাকৃতিক সেই শক্তিতে প্রদীপ জ্বলবে। বিভিন্ন পুজো-পার্বণে প্রচুর ফুল ব্যবহার করা হয়। অনুষ্ঠানের শেষে সেগুলিকে ফেলে দেওয়াটাই আমাদের অভ্যাস। ফেলে দেওয়া সেই সমস্ত ফুলগুলি থেকে দূষণ প্রতিরোধ করতে নতুন কিছু আবিষ্কারের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন পবিত্র। তার এই কর্মকাণ্ডে ভীষণ খুশি পরিবার, প্রতিবেশী থেকে বন্ধুবান্ধব ও তাঁর সহকর্মীরা।