ভিন রাজ্যে আটকে পড়া পরিযায়ী শ্রমিকদের রাজ্যে ফেরা নিয়ে তরজায় জড়াল রেল ও পশ্চিমবঙ্গ সরকার। শনিবার রাতেই রেলমন্ত্রক টুইটে দাবি করে যে, 'কেন্দ্রীয় স্বারাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের অনুরোধের পরই পশ্চিমবঙ্গ সরকার ট্রেনের ব্যাপারে সম্মতি দিয়েছে।' রেলমন্ত্রকের টুইটের পরই পাল্টা টুইট করেন রাজ্যের স্বারাষ্ট্র সচিব। সেখানে উল্লেখ, 'রেলের টুইট বিভ্রান্তিকর ও ভুল'।
পশ্চিমবঙ্গের স্বরাষ্ট্র সচিবের তরফে টুইটে লেখা হয়, 'রেলের টুইট বিভ্রান্তিকর ও ভুল। ওই টুইটে যেসব ট্রেনের কথা বলা হয়েছে, সেগুলির জন্য প্রয়োজনীয় সম্মতি সশ্লিষ্ট রাজ্যগুলিকে ৮ মে বা তার আগেই পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। শনিবার এ নিয়ে নতুন করে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।' অর্থাৎ রাজ্য প্রশাসনের দাবি মোতাবেক, পরিযায়ী শ্রমিকদের রাজ্যে ফেরানো নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বারাষ্ট্রমন্ত্রীর চিঠি র আগেই যথাযত পদক্ষেপ করেছিল নবান্ন।
Ministry of Railways tweet is misleading and incorrect. All the trains mentioned in their tweet were approved and communicated to the concerned States on 8 May( yesterday) or before, no new decision in this regard has been taken today. Further decisions to follow in due course. https://t.co/Z1OylX4we5
— Home Secretary - Govt. of West Bengal (@HomeSecretaryWB) May 9, 2020
পরিযায়ী শ্রমিকদের বাংলায় ফেরানোর জন্য় রাজ্য় সরকার ট্রেনের অনুমতি দিচ্ছে না বলে শনিবার মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কড়া ভাষায় চিঠি লেখেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। চিঠিতে শাহ লেখেন, 'ঘরে ফিরতে মুখিয়ে রয়েছেন বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকরা। কিন্তু তাদের বাড়ি ফেরা প্রসঙ্গে বাংলা সরকার প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করছে না। রাজ্যে ট্রেন প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। এটা বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের প্রতি অবিচার।' যা ঘিরে করোনা আবহে রীতিমতো সরগরম বঙ্গ রাজনীতি।
আরও পড়ুন- পরিযায়ীদের ফেরাতে মাত্র ৪টি ট্রেনের অনুমোদন দিয়েছে বাংলা, অন্যান্য রাজ্যে সংখ্যাটা প্রায় ৩০০: রেল
অমিত শাহের চিঠির আবহেই পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরানোর তোড়জোড় শুরু করে দেয় মমতা সরকার। করোনায় লকডাউনে আটকে পড়া বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরাতে ভিনরাজ্য থেকে একাধিক ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয় বলে জানা যায়। আজ তেলঙ্গানা থেকে পরিযায়ী শ্রমিকদের একটি ট্রেন মালদায় এসে পৌঁছোবে বলে শনিবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে জানান স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। এছাড়াও তিনি বলেন, 'পাঞ্জাব, তামিলনাড়ু, বেঙ্গালুরু, তেলঙ্গানা বা হায়দরাবাদ থেকে ট্রেন আসার ব্য়াপারে নানা শিডিউল করা হয়েছে। এছাড়াও বৃন্দাবন, বারাণসী, মথুরায় আটকে পড়া তীর্থযাত্রীদের জন্য় ট্রেনের ব্য়বস্থা করা হবে।'
এরপরই ভারতীয় রেলের তরফে টুইটারে জানানো হয়, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ অনুরোধ করার পর এই অনুমতি দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। এর মধ্যে দুটি ট্রেন পাঞ্জাব থেকে, দুটি ট্রেন তামিলনাড়ু থেকে, ৩ টি বেঙ্গালুরু ও ১ টি তেলেঙ্গানা থেকে পশ্চিমবঙ্গের উদ্দেশে রওনা দেবে। তবে, মহারাষ্ট্র থেকে পশ্চিমবঙ্গে কোনও শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন ঢুকতে দিতে রাজি হয়নি রাজ্য সরকার। অথচ মহারাষ্ট্র থেকে অন্তত ১৬ টি শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন বাংলায় পাঠানো প্রয়োজন। ৬টির জন্য রাজ্যের অনুমতি চাওয়া হয়েছে। কিন্তু মহারাষ্ট্র থেকে একটি ট্রেনও বাংলায় ঢোকার অনুমতি মেলেনি।'
এরপরই রাজ্য প্রশাসনের তরফে স্বরাষ্ট্র সচিব জানান, 'রেলের টুইট বিভ্রান্তিকর ও ভুল'। পরিযায়ী ফেরাতে প্রয়োজনীয় ও যথাযত পদক্ষেপ মমতা সরকার আগেই করেছে বলে স্পষ্ট করা হয়।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন