Childrens Parliament Elction In Primary School: ভারতের মতো গণতান্ত্রিক দেশে 'ভোট দান ' একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। ভোটের ফলাফলের উপরেই নির্ভরশীল এ দেশের গণতান্ত্রিক ভিত্তি। তাই দেশের জনগণও চান ’হিংসা মুক্ত’ অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোট।সেটা কিভাবে করা সম্ভব,তা 'শিশু সংসদ' নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনসমক্ষে তুলে ধরলো পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর ব্লকের শিয়ালী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খুদে পড়ুয়ারা। খুদেদের দেখানো এই পথের প্রতিফলন ২৬ শের বিধানসভা ভোটে বঙ্গে প্রতিফলিত হোক,এমনটাই চাইছেন আমজনতা।
ভোটকে গণতন্ত্রের সর্বশ্রেষ্ট উৎসব বলে মানা হয়ে থাকে। সেই কথা মাথায় রেখে 'শিশু সংসদ’ নির্বাচনের দিন ক্ষণ ঘোষণা করে শিয়ালী প্রাথমিক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। নির্বাচন প্রক্রিয়ায় যাতে কোনও রকম ফাঁক ফোকর রয়ে না থাকে তাই অক্ষরে অক্ষরে মানা হয় লোকসভা ও বিধানসভা ভোটের নিয়ম বিধি। ঘোষণা অনুযায়ী,চলতি বছরের ১৮ মার্চ ভোটের দিন এবং ২১ শে মার্চ ভোট গণনার দিন নির্দিষ্ট করা হয়। তার পরেই 'শিশু সংসদ’ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য বিভিন্ন ক্লাসের ১২ জন প্রার্থী একে একে মনোনয়ন দাখিল করে। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা খুদে প্রার্থীরা নিজেদের মত করে প্রচারও চালায়।সকল প্রার্থী’ই জয়ের ব্যাপারে আশা ব্যক্ত করে ।
ভোটররা যাতে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট দিতে পারে তার জন্য ব্যবস্থাপনার কোন ত্রুটি রাখা হয় না । ১৮ মার্চের আগের দিন ভোট কক্ষ তৈরি করে ফেলা হয়। ভোটের দিন নিয়ম-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে বাহিনী মোতায়েন রাখা হয়। প্রতীকী সেই বাহিনীর দায়িত্বে থাকে স্কুলের খুদে পড়ুয়ারা। তাঁরা কড়া হাতে ভোট প্রক্রিয়া সামাল দেয়। বাহিনী ছাড়াও খুদে পড়ুয়াদের মধ্যে থেকেই কেউ প্রতীকী প্রিজাইডিং অফিসার আবার কেউ পোলিং অফিসার হয়ে দায়িত্ব পালন করে।
উৎসবের মেজাজে হওয়া ভোটে ভোট দানের জন্য ছাত্র-ছাত্রীদের উৎসাহ উদ্দীপনা ছিল তুঙ্গে । ভোট দানে অংশ নেওয়া সকল ভোটারদের হাতে তুলে দেওয়া হয় চকলেট ও বিস্কুট। এছাড়াও ভোটের লাইনে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার ক্লান্তি দূর করতে ভোটারদের ঠান্ডা শরবতও দেওয়া হয়। শেষ অবদি ভোট অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভাবে সম্পন্ন হওয়ায় প্রার্থী ও ভোটার ছাত্র-ছাত্রীরা সকলেই খুশি প্রকাশ করে।
ভোট পর্ব মেটার পর গণণা পর্বও শান্তিপূর্ণ ভাবে সমাপ্ত করতে ব্যবস্থা পনার কোন ত্রুটি রাখা হয় না।পূর্ব ঘোষণা মেনে ২১ মার্চ নির্দিষ্ট সময়ে শুরু হয় ভোট গণনা। গণনা শেষে জয়ী ও বিজয়ী প্রার্থীরা একে অপরের সাথে করমর্দন সেরে গণনা কেন্দ্র ছাড়ে। জয়ী প্রার্থীরা তাঁদের জয় নিয়ে উচ্ছাস প্রকাশ করেন ঠিকই। কিন্তু তা কোনও ভাবেই লাগাম ছাড়ায় না। কারুর সাথে কারুর উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়েরও লেশ মাত্র দেখা যায় না। ভোট গণনা হয়ে যাওয়ার পরেও সৌহার্দের এই ছবিটা একই রয়ে থাকে।’শিশু সংসদ’ মিটে যাওয়ার পর দু’দিন কাটতে চললো। ভোট পরবর্তী হিংসার কোন খবর এখনও পর্যন্ত মেলে নি।
গণতন্ত্রকে বাঁচিয়ে রাখতে ভোট অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভাবে সম্পন্ন করার যে নিদর্শন শিয়ালী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খুদে পড়ুয়া ও শিক্ষকরা তুলে ধরেছে তা নানা মহলের প্রশংসা কুড়িয়েছে।ভোট হিংসার অবসান ঘটিয়ে ২৬ শে বাংলার ভেটে এই নিদর্শন প্রতিফলিত হোক এমনটাই সকলে চাইছেন। বঙ্গেররাজনৈতিক দলগুলি ও রাজনীতিকরা এ নিয়ে কি সিদ্ধান্তে উপনিত হন,নির্বাচন কমিশনই বা কি পদক্ষেপ নেয়,সে দিকেই এখন তাকিয়ে সাধারণ ভোটাররা।