দোকানের নাম ‘মা-মাটি টি স্টল’। ঠিকানা, মনোহরপুকুর রোড। দোকানদার অশোক কুণ্ডু ‘দিদি'র একনিষ্ঠ ভক্ত। তাঁর কথায়, "মা-মাটির দোকানে চা খেতে আসেন মানুষ। ব্যস, হয়ে গেল মা-মাটি-মানুষ। দিদির নাম হৃদয়ে রেখেছি আর দোকানের নাম দিয়েছি তাঁর স্লোগান থেকে ধার করে।" নির্বাচনের আগে এলাকায় নতুন করে কৌতূহল তৈরি হয়েছে অশোকের দোকানকে ঘিরে, বলাই বাহুল্য।
বছর পঞ্চান্নের অশোকের ছোটবেলা কেটেছে ওই এলাকাতেই। তিনি জানান, পারিবারিকভাবে তাঁরা কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন৷ ছোটবেলা থেকেই স্থানীয় কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে সঙ্গে ঘুরতেন। প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির ভক্ত হলেও তৎকালীন যুব কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লড়াকু মেজাজের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিলেন অশোক। আটানব্বই সালে তৃণমূল তৈরির পর তাই তিনিও ‘দিদি'র দলে যোগ দেন।
আরও পড়ুন: 'চপ ভালবাসি, কিন্তু ঢপের চপ না'
অশোক বলেন, “চায়ের দোকানটা তৈরি করেছি অনেকদিন। প্রায় বছর কুড়ি হবে। প্রথমে দোকানের কোনও নাম ছিল না। আস্তে আস্তে পসার বাড়ল, লোকজন আমার বানানো চায়ের প্রশংসা করতে শুরু করলেন। তখন মনে হলো, দোকানের একটা নাম দেওয়া দরকার।" তাঁর কথায়, "কী নাম দেব, তা নিয়ে শুরুতে অনেক দ্বিধা ছিল। সাধারণত চা বিক্রেতারা নিজের নামেই দোকানের নাম দেন। কিন্তু আমি তা করতে চাইনি। মনে হয়েছিল, আমি এমন কোনও গুরুত্বপূর্ণ লোক নই যে আমার নামটা সামনে আনতে হবে। সেই সময় দিদি মা-মাটি-মানুষের স্লোগান দেওয়া শুরু করলেন। তাই আমিও দোকানের নাম ওই স্লোগানের মতো করেই রাখলাম।”
অশোকের দোকানের ছবি ফেসবুক সহ সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছেন অনেকে। নিজে ফেসবুকে না থাকলেও সেই খবর পেয়েছেন অশোক। তবে এসব নিয়ে তিনি উৎসাহী নন। তিনি বলেন, "কোনও প্রশংসা পাওয়ার জন্য একাজ করিনি। আমি দিদিকে ভালবাসি। চাই, তিনি একদিন দেশের প্রধানমন্ত্রী হন। নিজে তো খুব কিছু করতে পারি না, দোকান সামলে রাজনীতি করার সময় পাই না, তাই এর মাধ্যমে যতটুকু প্রচার হয়, হোক।"
আরও পড়ুন: একটা ললিপপ এনআরসি, আরেকটা নাগরিকত্ব বিল: মমতা
কিন্তু চায়ের দোকানে তো তৃণমূল বিরোধীরাও আসেন। সমস্যা হয় না? অশোকের জবাব, "খদ্দের আমার ভগবান। কিন্তু তা বলে নিজের মতটা প্রকাশ করতে পারব না! কয়েকজন যে হালকা কিছু বাঁকা কথা বলেন নি তা নয়। তবে বড় কোনও সমস্যা হয়নি।"