প্রথমটায় প্রশাসন সায় না দিলেও শেষমেশ কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে আজ ডায়মন্ড হারবারে সভা করতে চলেছে বিজেপি। খোদ অভিষেকে বন্দ্যোপাধ্যায়ের লোকসভা কেন্দ্রে দাঁড়িয়েই তৃণমূলের যুবরাজকে চরম বার্তা দিতে ঘুঁটি সাজিয়ে তৈরি শুভেন্দু অধিকারী। তবে সভা করতে প্রচণ্ড কাঠ-খড় পোড়াতে হচ্ছে গেরুয়া শিবিরকে।
শুক্রবার রাতে রাতে সভা-মঞ্চের বাঁশ-কাঠ খুলে নিয়ে যেতে দেখা যায় ডেকরেটর্সদের লোকজনকে। বিজেপির অভিযোগ তৃণমূলের ভয়েই ডেকরেটর্স মালিক বিজেপির অনুষ্ঠানে কাজ করতে রাজি হচ্ছেন না। যদিও তৃণমূলের পাল্টা দাবি, টাকা-পয়সা না পেয়েই মঞ্চ থেকে বাঁশ-খুঁটি সরিয়ে নেয় ডেকরেটর।
মেগা শনিবারে সরগরম রাজ্য। পড়শি দুই জেলায় দুই সেনাপতির জোরালো টক্কর আজ। একদিকে কাঁথিতে শুভেন্দু অধিকারীর বাড়ির ঢিলছোঁড়া দূরত্বে সভা করবেন সর্বভারতীয় তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্যদিকে তৃণমূলের যুবরাজকে জবাব দিতে আজই তাঁর লোকসভা কেন্দ্র ডায়মন্ড হারবারে সভা বিরোধী দলনেতার। কোর্টের অনুমতি নিয়েই ডায়মন্ড হারবারে সভা করছে বিজেপি।
যদিও এই সভা করতে গিয়ে তাঁদের প্রচুর কাঠ-খড় পোড়াতে হচ্ছে বলে দাবি পদ্ম নেতাদের। পদে-পদে বাধা আসছে বলে অভিযোগ স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের। তৃণমূলের তরফে ডেকরেটর্সের লোকজনকে চাপ দিয়ে গতকাল রাতে বিজেপির সভামঞ্চের বাঁশ-খুঁটি সরানো হয় বলে দাবি করেছেন এলাকার বিজেপি নেতারা। এমনকী গতকাল রাতে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা সভাস্থলে ভাঙচুর চালিয়েছে বলেও অভিযোগ গেরুয়া শিবিরের। যদিও সব অভিযোগই অস্বাকীর করেছে তৃণমূল।
শুভেন্দু অধিকারী ডায়মন্ড হারবারের ঘটনা নিয়ে টুইটে তৃণমূলকেই দায়ী করেছেন। তিনি টুইটে লিখেছেন, ''মাননীয় কলকাতা হাইকোর্ট ডায়মন্ড হারবারে বিজেপির সমাবেশের অনুমতি দেওয়ার পরেও কয়লা ভাইপো তার গুন্ডাদের সভা ব্যাহত করার জন্য মোতায়েন করেছিলেন। সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। ভাইপো তুমি পারলে আমাদের থামাও। আপনার সমস্ত শক্তি ব্যবহার করুন।''
বিজেপি নেতা অমিত মালব্য এবিষয়ে তৃণমূলকে কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়ে টুইটে লিখেছেন, ''কলকাতা হাইকোর্ট বঙ্গ বিজেপিকে ৩ ডিসেম্বর ডায়মন্ড হারবারে সমাবেশ করার অনুমতি দেয়। পুলিশকে সুরক্ষা দিতেও বলেছে আদালত। তা সত্ত্বেও গত রাতে টিএমসি-র গুণ্ডারা অনুষ্ঠানস্থলে ব্যাঘাত ঘটায়। সমাবেশ এখনও হবে। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ এবং রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অবমাননার মামলার মুখোমুখি হতে প্রস্তুত থাকতে হবে।''
এদিকে, শুভেন্দুর সভার আগে ডায়মন্ড হারবারে বিজেপির সভামঞ্চে 'হামলা' প্রসঙ্গে তৃণমূলকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন দিলীপ ঘোষ। তিনি এদিন বলেন, ''যিনি সভা করতে যাচ্ছেন তিনি বিধানসভার বিরোধী দলনেতা। তাঁর নিরাপত্তা যদি পুলিশ না দিতে পারে তাহলে তো এখানে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হওয়া উচিত। এই সরকারের আর এক মিনিটও থাকার অধিকার নেই। পুলিশ, গুন্ডা, কেস দিয়ে আটকানোর চেষ্টা হচ্ছে। আইন মেনে সভা হচ্ছে। দেখা যাক কী হয়। দেশ দেখছে।''
আরও পড়ুন- অভিষেকের সভার আগের রাতে বিস্ফোরণে উড়ল তৃণমূল নেতার বাড়ি, ঝলসে মৃত নেতা-সহ ৩
এদিকে, তৃণমূল নেতা শান্তনু সেনের দাবি ডেকরেটর্সের লোকজন টাকা না পেয়ে অনুষ্ঠান মঞ্চের বাঁশ-খুঁটি খুলে নিয়ে গিয়েছে। টুইটে এব্যাপারে গেরুয়া শিবিরকে কটাক্ষ করে তৃণমূল সাংসদ লিখেছেন, ''যদি ডেকরেটর মালিককে টাকা না দেওয়া হয় বা তারা কাজ করতে অস্বীকার করে, তাহলে তৃণমূল কী করতে পারে?''