Arnab Dam: বন্দুক ও গুলির লড়াইয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করা জেলবন্দি মাওবাদী নেতা অর্ণব দাম এবার শিক্ষার জগতেও ইতিহাস সৃষ্টি করলেন। ইতিহাসে PHD করার জন্য বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে ইন্টারভিউ দেওয়া ২৫০ জনের মধ্যে প্রথম স্থান লাভ করেছেন প্রাক্তন এই মাওবাদী নেতা।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের প্রধান সইদ তনভীর নাসরিনের কথায়, “ইতিহাস নিয়ে PHD-র জন্য গৃহীত ইন্টারভিউয়ের রেজাল্ট শুক্রবার প্রকাশিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে PHD-র আসন সংখ্যা ৯টি হলেও ইন্টারভিউ দিয়েছিলেন ২৫০ জন। তাঁদের সবাইকে পিছনে ফেলে দিয়ে সফলদের তালিকায় অর্ণব দামের নাম রয়েছে এক নম্বরে।"
অর্ণবের এমন রেজাল্ট করা প্রসঙ্গে সইদ তনভীর নাসরিনের ব্যাখ্যা, “শুধু বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় নয়, সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছেই বিষয়টি মডেল। ওঁর (অর্ণব দামের ) ইচ্ছাপূরণে সরকার যেভাবে পাশে দাঁড়িয়েছে সেটাও সমানভাবে উল্লেখযোগ্য।"
আরও পড়ুন- Chingri Malaikari: ইলিশকে ‘বলে বলে গোল’ চিংড়ির, বিশ্বের সামনে মাথা উঁচু করল দেশের, জানলে গর্ব হবে!
পশ্চিম মেদিনীপুরের শিলদায় ইএফআর ক্যাম্পে হামলা চালানোর ঘটনায় মূল অভিযুক্ত প্রাক্তন মাওবাদী নেতা অর্ণব দাম ওরফে বিক্রম। একদা রাজ্য পুলিশ ও প্রশাসনের ঘুম কেড়ে নেওয়া মাওবাদী নেতা অর্ণব গত ২৬ জুন ইতিহাস নিয়ে পিএইচডি’র জন্য ইন্টারভিউ দেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে। তাঁর ইন্টারভিউ নেন
বিশ্ববিদ্যালয়েরই ইতিহাস বিভাগের দিকপাল অধ্যাপকরা। ওই দিন কড়া পুলিশি পাহারায় অর্ণবের ইন্টারভিউ দিতে যাওয়া নিয়ে সরগরম থাকে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় চত্ত্বর।
আরও পড়ুন- Sealdah Division: শিয়ালদহ ডিভিশনের যাত্রীরা এখবর এখনই পড়ুন! দুরন্ত দক্ষতায় দারুণ তৎপরতা রেলের
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত অর্ণব দাম এখন শ্রীঘরবাসী। পশ্চিম মেদিনীপুরের শিলদা ইএফআর ক্যাম্পে হামলার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত হিসাবে চিহ্নিত হয়েছেন অর্ণব। গত ২৯ ফেব্রুয়ারি তাঁর সাজা ঘোষণা হয় । তার পর থেকে প্রথমে পশ্চিম মেদিনীপুর জেল, পরে গত ১৭ মার্চ থেকে অর্ণবের ঠিকানা হয় হুগলির চুঁচুড়ার সংশোধনাগার। সেখানে লাইব্রেরি আছে। সেই লাইব্রেরি থেকে বই নিয়ে অর্ণব পড়াশোনা চালান। অর্ণব আগেই ইন্দিরা গান্ধী ওপেন ইউনিভার্সিটি (ইগনু) থেকে ইতিহাসে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর হয়েছেন। তাঁকে পিএইচডি করার সুযোগ দেওয়ার তিনি আর্জি জানান।
বিচারক তাঁর আদেশে সেই আবেদনের বিষয়টি নথিভুক্ত করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তা বিবেচনা করতে বলেন। কিন্তু সংশোধনাগারে কেউ প্রথমে অর্ণবের আবেদনকে পাত্তা দিচ্ছিল না বলে অভিযোগ ওঠে। যদিও অর্ণব নিজের দাবিতে অনড় থাকেন। দাবি আদায়ের জন্যে অর্ণব অনশন প্রতিবাদ কর্মসূচি শুরুর কথাও ঘোষণা করে বসেন।
এমন পরিস্থিতিতে বন্দি অর্ণবের পাশে দাঁড়ায় APDR সংগঠন। তারা অর্ণবের দাবির পক্ষে সমর্থন জানিয়ে হুগলি জেল কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানায়। দাবি না মানলে ভেতরে-বাইরে একযোগে আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দেয় এপিডিআর। শেষে জেল প্রশাসন নড়েচড়ে বসে। অর্ণবের পিএইচডির ইন্টারভিউয়ের ব্যবস্থা হয় । গত ২৬ জুন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্ণবের ইন্টারভিউ দেওয়ার ব্যবস্থা হয় ।
আরও পড়ুন- Malda: গুঁড়িয়ে দেওয়া হল তৃণমূল কার্যালয়, চলল বুলডোজার, ধুন্ধুমার কাণ্ড মালদহে, অভিযোগ টা কী?
এদিকে পিএইচডি’র ইন্টার ভিউতে প্রথম স্থান লাভ করা অর্ণব দাম এখন হুগলি জেলে ভিন্ন দাবি আদায়ের লক্ষে আন্দোলনরত হয়েছেন। দাবি আদায়ের জন্যে শুক্রবার থেকে একটা মিলও বয়কট করছেন। তাঁর দাবি,“কর্তৃপক্ষ তাঁকে জেলে যে কাজ দেয়, সেই কাজের প্রথম তিন মাসের মজুরি দিতে এখন অস্বীকার করছে। সেই মজুরি আদায়ের দাবিতে অনড় অর্ণব।" শুধু তাই নয় ,অর্ণব অভিযোগ তুলেছেন তিনি যে জেলে বন্দি হয়ে আছেন সেই জেলে চিকিৎসা ব্যবস্থা বলে কিছু নেই। বন্দিদের জন্য ২৪ ঘন্টা চিকিৎসক রাখার ব্যবস্থা করার দাবি তিনি তুলেছেন।