Jaishankar On Indus Treaty:ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ১৯৬০ সালে স্বাক্ষরিত সিন্ধু জল চুক্তি পুনরায় কার্যকর করা হবে না যতক্ষণ না ইসলামাবাদ আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদকে পুরোপুরি বন্ধ করবে—স্পষ্ট বার্তা দিলেন ভারতের বিদেশ মন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর। তিনি বলেন, “সিন্ধু জল চুক্তিটি স্থগিত রয়েছে। যতক্ষণ না পাকিস্তান আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদ বন্ধে দৃঢ় ও বিশ্বাসযোগ্য পদক্ষেপ নেবে, ততক্ষণ ভারত তার সিদ্ধান্তে অনড় থাকবে।”
কাশ্মীর প্রসঙ্গেও কড়া বার্তা
জয়শঙ্কর বলেন, “কাশ্মীর নিয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে এখন একমাত্র আলোচনা, পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর (POK) খালি করা নিয়ে। ভারত তার নিজের মাটির বিষয় নিয়ে কোনও মধ্যস্থতা মেনে নেবে না।” এই বার্তা থেকেই স্পষ্ট ভারতের অবস্থান এখন আগের চেয়ে আরও কঠোর এবং দৃঢ়।
সিন্ধু জল চুক্তি কী ও কেন স্থগিত?
১৯৬০ সালে বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে এই ঐতিহাসিক সিন্ধু জলচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তির অধীনে, সিন্ধু ও এর পাঁচটি উপনদীর জল দুই দেশের মধ্যে বণ্টন করা হয়। কিন্তু ২২শে এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে পাকিস্তানি সন্ত্রাসীদের হামলায় ২৬ জন নিরীহ নাগরিক নিহত হওয়ার পর ভারত কঠোর প্রতিক্রিয়া জানায়। ২৩ এপ্রিল থেকে ভারত চুক্তি স্থগিত, আটারি সীমান্তে কড়া নজরদারি, এবং পাক হাইকমিশনের কার্যক্রম সীমিত করার মতো একাধিক কূটনৈতিক পদক্ষেপ নেয় ভারত।
পাকিস্তানের আবেদন, ভারতের জবাব
পাকিস্তান সম্প্রতি ভারতকে সিন্ধু জল চুক্তি পুনর্বহালের আবেদন জানায়। প্রথমবারের মতো সিন্ধু জল চুক্তির শর্তাবলী নিয়ে আলোচনায় রাজি হল ইসলামাবাদ। পাকিস্তানের তরফে সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিতের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানানো হয়েছে। যদিও ভারতের তরফে সাফ জানানো হয়েছে সন্ত্রাসবাদের প্রতি পাকিস্তানের সমর্থন যতদিন থাকবে, ততদিন পর্যন্ত এই চুক্তি স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। মঙ্গলবার, ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল স্পষ্টভাবে বলেন, "যতক্ষণ না পাকিস্তান আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদে মদত দেওয়া বন্ধ করবে ততক্ষণ ভারত সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত রাখবে।"
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী-ও তার ভাষণে বলেছিলেন, “জল ও রক্ত একসঙ্গে বইতে পারে না”, যা ভারতের কূটনৈতিক অবস্থানকে আরও স্পষ্ট করে তোলে। প্রধানমন্ত্রী মোদী আরও একটি বিষয় স্পষ্ট করে দিয়েছেন, ‘ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে আলোচনা হবে একমাত্র সন্ত্রাসবাদ এবং পাক-অধিকৃত কাশ্মীর ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে। এই বার্তায় ভারত বিশ্বের সামনে স্পষ্ট করে দিয়েছে, জাতীয় নিরাপত্তা এবং সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে কোনও আপোস কোন ভাবেই বরদাস্ত নয়।