কেউ হারিয়েছে ছেলে। কেউ স্বামী। চেনার আগেই একরত্তি শিশুটার বাবা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছে। স্বজন হারানোর কান্নায় ভারি হয়ে উঠেছে সাগরদিঘির বাহালগর গ্রামের বাতাস। চারদিকে শুধুই হাহাকার। অপেক্ষা কফিনবন্দি প্রিয় মানুষগুলিকে শেষবারের জন্য দেখার।
নিহত শ্রমিকের পরিবারের সদস্য। ছবি- পরাগ মজুমদার
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দক্ষিণ কাশ্মীরের কুলগামে পাঁচজন বাঙালি শ্রমিককে গুলি করে হত্যা করে জঙ্গিরা। ওই ঘটনায় গুরুতর জখম ছিলেন এক শ্রমিক। পরে হাসপাতালে তাঁরও মৃত্যু হয়। নিহত ছয় জনই মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘির বাহালনগর গ্রামের বাসিন্দা। নিহত পাঁচ শ্রমিকের নাম কামারুদ্দিন শেখ, মুর্সালিম শেখ, মহম্মদ রফিক, নিজামুদ্দিন শেখ, মহম্মদ রফিকুল শেখ। দিনের আলো ফুটতেই জঙ্গিদের হাতে এই পাঁচ বাঙালি শ্রমিকের হত্যার খবর সাগরদিঘি এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ হস্তক্ষেপ করে।
আরও পড়ুন: দক্ষিণ কাশ্মীরে জঙ্গি হামলায় নিহত মুর্শিদাবাদের ৫ শ্রমিক
নিহত শ্রমিকদের পরিবারের দুই মহিলা সদস্য আবেদা বিবি ও মোমিনা বিবি বলেন, "সোমবার আমাদের সঙ্গে কথা হয়েছিল ওদের। আর তার এক দিনের মধ্যেই সব শেষ হয়ে গেল। দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিক প্রশাসন। আর যেন কোনও শ্রমিককে এই ভাবে প্রাণে মরতে না হয়"। ঠিকা শ্রমিকের কাজ করতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে মুর্শিদাবাদের বাসিন্দারা। প্রায়শই পড়েন দুর্ঘটনার কবলে। শেষমেশ ভয়ঙ্কর পরিণতি মৃত্যু। এক্ষেত্রেও তাই হল।
এদিন সাগরদিঘিতে নিহত শ্রমিকদের পরিবারের কাছে যান বহরমপুরের সাংসদ অধীর চৌধুরী। জঙ্গি হামলার সঙ্গে সঙ্গেই এই পরিণতির জন্য মোদী সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন তিনি।