দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়, অনুব্রত মণ্ডলদের মতো তৃণমূলের তাবড় নেতাদের বিরুদ্ধে। জেলবন্দি তাঁরা। যা নিয়ে দলের অন্দরেই নানা গুঞ্জন। বিতর্কের মধ্যেই দুর্নীতি নিয়ে মুখ খুলেছিলেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ জহর সরকার। যারপরনাই অস্বস্তি বাড়ে রাজ্যের শাসক দলের। এরপরই সৌগত রায় সহ তৃণমূলের একাধিক শীর্ষ নেতা দলীয় সাংসদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিলেন। দাবি করেন তাঁকে সাসপেন্ডের। এর দিন কয়েক পরই জহর সরকারের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করল তৃণমূল কংগ্রেস।
জানা গিয়েছে, শনিবার জহর সরকারকে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে বের করা দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই তাঁকে দলের মনোভাবের খবর পৌঁছে দিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার আরেক সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়। গতকাল রাতেই গ্রুপটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। আজ জহরকে অপসারণ করা হয়। এই গ্রুপের অ্যাডমিন সাংসদ ডেরেক ও'ব্রায়ান।
দলের এই পদক্ষেপের পর অবশ্য জহর সরকারের প্রতিক্রিয়া এখনও মেলেনি। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার তরফে তাঁকে ফোন করা হলেও রিসিভ করেননি তিনি।
কী বলেছিলেন জহর সরকার?
পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং অনুব্রত মণ্ডলের প্রসঙ্গ টেনে জহর সরকার বলেছিলেন, 'টিভিতে দেখা যাচ্ছে মানুষের টাকা লুঠ করে এক মন্ত্রী তাঁর বান্ধবীকে অলঙ্কৃত করছেন। যা দেখে গা শিরশির করছে। তৃণমূলের একটা দিক পচে গিয়েছে। এই পচা শরীর নিয়ে চব্বিশের ভোটে লড়াই করা মুশকিল। এই পচা অংশকে দল থেকে বাদ দেওয়া উচিত।' এছাড়াও তিনি দাবি করেছিলেন যে, তৃণমূল নেতাদের অবস্থা দেখে তাঁর পারিবারিক ও সামাজিক সম্মানহানি হচ্ছে। বলেছিলেন, 'আমার বাড়ির লোকেরা সঙ্গে সঙ্গে বলল তুমি রাজনীতি ছেড়ে দাও। আর বন্ধুরা টিপ্পনি কেটে বলল, তুই এখনও আছিস? কত টাকা পেলি?'
আরও পড়ুন- ‘মমতা ব্যানার্জিকে দুর্নীতির রানি বলবেন না, পিঠে তাল পড়তে পারে’, বিরোধীদের চরম হুঁশিয়ারি সৌগতর
জহরের মন্তব্যে স্বাভিকভাবেই অস্বস্তি বাড়তে থাকে। পরে তা মোকাবেলায় আসরে নামেন সৌগত রায়, সুখেন্দুশেখর রায়, তাপস রায়রা। সর্বপ্রথম দমদমের সাংসদ সৌগতবাবু বলেছিলেন, 'ওর মতো স্বার্থপর লোক আমি দেখিনি। সাংসদ হওয়ার আগে একদিনও মিটিং মিছিলে দেখিনি। তৃণমূলের কোনও কর্মীর কোনও উপকার করেননি তিনি। তাই ওঁর যদি এতই গায়ে লাগে তবে সাংসদ পদ ছেড়ে দিন। আমরা অন্য কোনও প্রার্তীকে জিতিয়ে আনব। দল বিরোধী মন্তব্যে ওঁকে সাসপেন্ড করা উচিত।'
তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায় জহর সরকারের পদত্যাগের দাবি করেছিলেন। দায়িত্বপূর্ণ আচরণের কথা বলেছিলেন সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়।
আরও পড়ুন- বান্ডিল-বান্ডিল টাকা মিলেছে বাড়িতে, তৃণমূল পুরপ্রধান বললেন ‘ওসবে আমি যুক্ত নই’
পরে, জহর সরকার জানিয়েছিলেন যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেই সাংসদ পদ থেকে পদত্যাগ করবেন।দলের কড়া পদক্ষেপের পর এবার কী করবেন প্রাক্তন এই আমলা সেদিকেই নজর রাজনৈতিক মহলের।