Mithun Chakraborty: ভারতীয় সিনেমার সর্বোচ্চ সম্মান 'দাদাসাহেব ফালকে' পুরস্কারে সম্মানিত হবেন অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী। প্রবীণ অভিনেতাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী মোদী। আগামী ৮ অক্টোবর ৭০তম জাতীয় চলচ্চিত্র উৎসবে মিঠুন চক্রবর্তীর হাতে অভিনয় জগতে অসামান্য কৃতিত্বের জন্য এই পুরষ্কার তুলে দেওয়া হবে। এই প্রসঙ্গে সোমবার প্রবীণ অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
প্রধানমন্ত্রী মোদী তার অভিনন্দন বার্তায় লিখেছেন...
সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর অভিনন্দন বার্তায়, প্রধানমন্ত্রী মোদী লিখেছেন, “আমি খুশি যে মিঠুন চক্রবর্তী ভারতীয় সিনেমায় অনন্য অবদানের জন্য 'মর্যাদাপূর্ণ' দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কারে সম্মানিত হচ্ছেন। তিনি একজন 'সাংস্কৃতিক আইকন' যিনি তার বহুমুখী প্রতিভার জেরে প্রজন্মের পর প্রজন্ম জুড়ে প্রশংসিত হয়েছেন। তাকে অভিনন্দন ও শুভকামনা।”
সোমবার তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব সোশ্যাল মিডিয়ায় এক পোস্টে এই তথ্য জানান। পুরস্কারের বিষয়ে ঘোষণা করে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বৈষ্ণব সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম 'এক্স'-এ লিখেছেন, 'কলকাতার ফুটপাত থেকে ভারতীয় সিনেমাকে যে উচ্চতায় মিঠুন চক্রবর্তী নিয়ে গিয়েছেন তা বহু প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করেছে। ভারতীয় চলচ্চিত্রে ঐতিহাসিক অবদানের জন্য দাদাসাহেব ফালকে নির্বাচন কমিটি তাকে এই সম্মান প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে'।
উপচে পড়া জোগান, দামও নাগালেই, তবু ইলিশ ছুঁয়েও দেখছেন না ভোজনরসিকরা
মন্ত্রী জানান, আগামী ৮ অক্টোবর ৭০তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অনুষ্ঠানে মিঠুন চক্রবর্তীকে এই পুরস্কার প্রদান করা হবে। মিঠুন চক্রবর্তী মৃণাল সেন পরিচালিত চলচ্চিত্র 'মৃগয়া'র মাধ্যমে (১৯৭৬) তার চলচ্চিত্র জীবন শুরু করেন। যার জন্য তিনি তার প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছিলেন। এই ছবিটি ভারত এবং তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নেও ব্যাপক প্রসংশিত হয়। এরপর ১৯৮২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ডিসকো ডান্সার’ ছবির মাধ্যমে সারা বিশ্বে খ্যাতি অর্জন করেন কলকাতার জোড়াবাগানের গৌরাঙ্গ। উল্লেখ্য মিঠুন চক্রবর্তী সম্প্রতি 'পদ্মভূষণ' সম্মানে ভূষিত হয়েছেন।
আহিরীটোলা থেকে মুম্বই, তারপর দেশের নানা ভাষায় সিনেমা। অভিনেতার, ঝুলিতে যেমন তিনটি জাতীয় পুরস্কার। কিন্তু, আজ এতবছর পর, সিনেমায় তাঁর অবদানের কথা মনে রেখেই এই পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে তাঁকে। অভিনেতা প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে যেন ভাষা হারিয়ে ফেলেছেন।
তিনি বলছেন...
"আমি সত্যি বলছি, আমার কোনও ভাষা নেই। আমি হাসতে পারছি না, এমনকি খুশিতে কাঁদতেও পারছি না। এতবড় জিনিসটা আমার সঙ্গে কী করে হয়ে গেল। যেখান থেকে আমি এসেছি, কলকাতা থেকে, এক অজানা গলি থেকে। রাস্তায় ফুটপাতে লড়াই করে এসেছি। সেই মানুষটাকে এতবড় সম্মান দিচ্ছেন, আমি ভাবতেও পারছি না।"
এখানেই থামলেন না মিঠুন। তাঁর যেন গলা ধরে এল একথা বলতে গিয়ে। বাংলার এই ছেলের যাত্রাপথ যেভাবে শুরু হয়েছিল, তাঁর পরবর্তী সময়টা যে এমন হতে পারে হয়তো নিজেও ভাবেননি। তাই তো তিনি বলছেন, "আমি না বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছি। আমি এই পুরস্কার উৎসর্গ করছি আমার পরিবার এবং আমার বিশ্বের সমস্ত ভক্তদের। এত যে ভালবাসা পেয়েছি, আমি ধন্য।"
এদিকে অভিনেতার এই সর্বোচ্চ সম্মান পাওয়া নিয়ে কলকাতার জোড়াবাগানে যেন খুশির হাওয়া। যে বাড়িতে এক সময় মিঠুন চক্রবর্তী থাকতেন, সেই বাড়ি কিছুদিন আগেই বিক্রি হয়েছে। তবে মহল্লার এক কোণায় রয়ে গিয়েছে সেই বৃদ্ধ মানুষটি। যিনি এক সময়ে কোলে পিঠে করে মিঠুনকে মানুষ করেছেন। অভিনেতার চরম দুর্দিনের সাক্ষী ছিলেন তিনি। আজ মিঠুন চক্রবর্তীর এই কৃতিত্বে নিজের চোখের জল ধরে রাখতে পারেন নি বৃদ্ধা। তিনি অভিনেতার অত্যন্ত কাছের কালো মাসী, ওরফে লক্ষ্মী দাস। বয়সের ভারে ভারাক্রান্ত তিনি। লক্ষ্মী দেবী বলেন, "মিঠুনের এই কৃতিত্বে আমি গর্বিত। আমি চাই ও আরও বড় হোক। আমার আর্শীবাদ ওর সঙ্গে সব সময় রয়েছে"। তিনি আরও বলেন, "আজ ওর জন্যই আমি খেয়ে পরে রয়েছি। ও আমাকে চারু মার্কেটের ফ্ল্যাটে যাওয়ার কথা অনেক বার বলেছে। আমি যায় নি। আমার খোঁজ খবর ও হামেশাই নেয়"।