Hilsa Fish: ইলিশ বলে কথা, চাহিদা তো থাকবেই! কিন্তু এবার মালদায় যা ঘটল তা এক কথায় বেনজির। মালদহ শহরের বিভিন্ন বাজারে পড়েই থাকল টাটকা-তাজা ওপার বাংলার ইলিশ। মালদহ শহরের খাদ্যরসিক অধিকাংশ মানুষই অসন্তুষ্ট হয়ে ওপার বাংলার ইলিশ ছুঁয়েও দেখলেন না। বরং ঢের বেশি বিক্রি ডায়মন্ড হারবার, কোলাঘাট, গঙ্গা, এমনকী ওড়িশার ইলিশের।
বাংলাদেশের অন্তবর্তী সরকারের কর্তা-ব্যক্তিদের ভারত-বিরোধী একের পর এক মন্তব্যের জোর প্রভাব মালদহে। মালদা শহরের অধিকাংশ বাসিন্দাই ছুঁয়েও দেখছেন না বাংলাদেশের ইলিশ। পুজোর মুখে তাই মাথায় হাত মাছ এলাকার ব্যবসায়ীদের।
ইলিশ বিক্রেতাদের বক্তব্য, পুজোর মুখে লাভের আশায় মোটা টাকা দিয়ে তাঁরা বাংলাদেশের ইলিশ মাছ তুলেছেন। কিছু মাছ বড় ডিপ ফ্রিজে মজুত থাকছে। খুচরোভাবে খোলা বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে সেই মাছ। বাংলাদেশের এক কিলো ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৫০০ থেকে ১৬০০ টাকায়। এক মাছ বিক্রেতা বললেন, "এখন ক্রেতা নেই। জানি না কী হয়েছে। শহরের মানুষ বাংলাদেশের ইলিশ ছুঁয়ে দেখছেন না।"
আরও পড়ুন- West Bengal Weather Update: রোদ ঝলমলে আকাশ দিয়ে সপ্তাহ শুরু, মহালয়া থেকেই আবহাওয়ায় বিরাট বদল?
উল্লেখ্য, মালদা শহরের নেতাজি পুর মার্কেট উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহৎ মাছের আড়ৎ। অন্ধ্রপ্রদেশ হোক অথবা হাওড়া, প্রতিদিনই অসংখ্য লরিতে মালদার এই মাছের আড়তে টন-টন মাছ ঢোকে। এছাড়াও মালদার বিভিন্ন পুকুর, বিল, নদীর মাছও আসে এই বাজারে। মালদার সর্ববৃহৎ মাছের আড়ত থেকেই শিলিগুড়ি, অসম, ঝাড়খণ্ড ও বিহারে বিপুল পরিমাণ মাছ রফতানি হয়। এছাড়াও মালদার ইংরেজবাজার শহরে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন পুর মার্কেট, মকদমপুর পুর মার্কেট, ঝলঝলিয়া কাজি আজারুদ্দিন মার্কেট, গোউরোড বাজার , মালঞ্চ পল্লি মার্কেট, সদরঘাট বাজার সহ ছড়িয়ে ছিটিয়ে প্রচুর মাছের বাজার রয়েছে।
রবিবার থেকে মালদা শহরের বিভিন্ন বাজারে বাংলার ইলিশ নিয়ে বসেছেন মাছ ব্যবসায়ীরা। তবে দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়েছে বিক্রেতাদের কপালে। মালদা শহরের সদরঘাট বাজারের মাছ ব্যবসায়ী গৌতম দাস বলেন, "এই বাজারে বহু মানুষ আসেন। আমার ইলিশ সেরা। পুজোর মুখে ৭০ হাজার টাকা খরচ করে বাংলাদেশের ইলিশ তুলেছি। রবিবার ছুটির দিনে বেচাকেনা বেশি হবে বলেই ডালিতে ইলিশ নিয়ে বসেছিলাম। কিন্তু অধিকাংশ ক্রেতা বাংলাদেশের ইলিশের নাম শুনে ছুঁয়েও দেখেননি। অথচ ডায়মন্ড হারবারের ইলিশ কিনেছেন তাঁরা। ডায়মন্ড হারবারের ১ কেজি ওজনের মাছ বিক্রি হচ্ছে ১০০০-১২০০ টাকায়। গঙ্গার ইলিশের কেজি ১৫০০ টাকা। তবে পদ্মার ইলিশে আগ্রহ নেই অধিকাংশ ক্রেতার।"
আরও পড়ুন- Durga Puja 2024: বোধনের পরেই শুন্যে গুলি, শতাব্দী প্রাচীন এই পুজোর পরতে পরতে লুকিয়ে রহস্য!
ইংরেজবাজার নেতাজি পুর মার্কেট মৎস্য আড়ৎ ব্যবসায়ী সমিতির সদস্য মোয়াজ্জেম হক বলেন, "মালদায় বরাবরই ইলিশের চাহিদা রয়েছে। বাংলাদেশের ইলিশ দেদার বিক্রি হয়। যাঁরা ইলিশপ্রেমী তাঁরা দাম দেখেন না। সুস্বাদু ওপার বাংলার মাছ হলেই হল। কয়েক মাস আগেও বাংলাদেশের ইলিশ কবে ঢুকবে খোঁজ নিয়েছিলেন বহু ক্রেতা। কিন্তু এখন সে গুড়ে বালি। শুনেছি বাংলাদেশের অন্তবর্তী সরকারের ভারত বিরোধী একের পর এক মন্তব্যের কারণে এই বাংলায় প্রভাব পড়েছে। তার জন্য ইলিশ বিক্রি হচ্ছে না।"