সাত সকালেই খাদ্য ভবনে হাজির মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। সাধারণ মানুষ দফতরের কন্ট্রোলরুমে ফোন করে জানতে চাইছেন, ‘রেশনে চাল, আটা কতটা মিলবে? ডাল কেন পাচ্ছি না’? আর ফোন তুলে এসব প্রশ্নের জবাব দিচ্ছেন স্বয়ং মন্ত্রীমশাই। এই পরিস্থিতিতেই কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে বড়সড় অভিযোগও করেছেন খাদ্যমন্ত্রী। জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের অভিযোগ, "কেন্দ্র ডাল দিতে পারেনি। ফেল করেছে। তাই এবার রেশনে ডাল দেওয়া যাচ্ছে না।" বিজেপিকে নাম না করে তাঁর খোঁচা, "ডাল নিয়ে কিছু বলুক। পাবলিক জানতে চাইছে।"
করোনা মোকাবিলায় লকডাউন চলাকালীন রেশন নিয়ে তোলপাড় হয়েছে রাজ্য। রেশন সামগ্রী বাইরে পাচার হচ্ছে, লুঠ হচ্ছে বলেও অভিযোগ ওঠে। এই বিতর্কের মধ্যেই খাদ্য দফতরের সচিবকেও বদলি করা হয়েছে। পাশাপাশি বঙ্গ বিজেপি অভিযোগ করে আসছে, কেন্দ্রীয় সরকার রেশন সামগ্রী দিচ্ছে কিন্তু সাধারণ মানুষ তা পাচ্ছে না। এনতাবস্থায় এবার উল্টে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধেউ ভয়ঙ্কর তোপ দাগলেন রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন- বাংলায় বিজেপি পার্টি অফিস থেকে উদ্ধার কয়েকশো কুইন্টাল রেশনের চাল, গ্রেফতার ২
শুক্রবার জ্যোতিপ্রিয় বলেন, "রাজ্যে ২১ হাজার দোকানে আজ সকাল সাড়ে সাতটা থেকে রেশন দেওয়া হচ্ছে। কেন্দ্রের ১৪,৫৫০ মেট্রিক টন মুসুর ডাল দেওয়ার কথা ছিল তা দিতে পারেনি। যে সংস্থার রাজ্যকে সরবরাহ করার কথা, তারা ১৮৬৭ মেট্রিক টন ডাল এনে রেখে দিয়েছে। প্রয়োজনের তুলনায় যা খুবই সামান্য। আমরা এভাবে ডাল দিতে পারি না। পুরো পেলে তবেই আমরা দেব।" তাছাড়া কেন্দ্রের দেওয়া চালের গুণগত মান অত্যন্ত নিম্নমানের বলেও অভিযোগ মন্ত্রীর।
উল্লেখ্য, রাজ্য খাদ্য দফতরে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। সাধারণ গ্রাহকরা সেই নম্বরে ফোন করে অভিযোগ জানাতে পারেন। রেশন থেকে গ্রাহক কী কী পাবেন তা-ও জানার জন্য ফোন করেত পারেন। শুক্রবার সকাল থেকে কন্ট্রোল রুমে ফোন আসতে শুরু করেছে। ফোনের ওপার থেকে প্রশ্ন আসতেই মন্ত্রী বলতে শুরু করলেন, "আপনি ৭কেজি চাল পাবেন। আটা অর্ধেক দেওয়া হচ্ছে। ১৬ তারিখের পর বাকি অর্ধেক দেওয়া হবে। তা না হলে আটা বাড়িতে থাকলে নষ্ট হয়ে যাবে। ডাল নেই। প্রধানমন্ত্রী ফেল করেছে। কোনও রেশনে ডাল আসেনি। প্রধানমন্ত্রী দেয়নি। আমরা খাদ্য দফতর থেকে বলছি। ডাল, চিনি কিছু দেওয়া হচ্ছে না।" এভাবে সকাল থেকেই খাদ্য দফতরের কন্ট্রোল রুম সামলালেন মন্ত্রী নিজে। তাঁর দাবি, "সকাল থেকে কোনও অভিযোগ আসেনি।" কন্ট্রোল রুমের ফোন নম্বর ১৮০০৩৪৫৫০৫, ১৯৬৭।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন