দুর্গাপুজোয় নানা ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন উপাচার, নিয়ম, রীতিনীতি প্রচলিত রয়েছে এই বাংলায়। এক এক পরিবারের এক এক রকম রীতি চালু রয়েছে। দিন কালের পরিবর্তন ঘটলেও রয়ে যায় সেই সমস্ত প্রথা। আড়াইশো বছরেরও বেশি সময় ধরে এমনই বিশেষ প্রথা এখনও চালু রয়েছে কুলতোড়া গ্রামের রায় বংশের দুর্গাপুজোয়। চালু রয়েছে বলি প্রথাও।
আড়াইশো বছর আগে দুর্গাপুজোর সূত্রপাত হয়েছিল পশ্চিম বর্ধমানের সীতারামপুরের কুলতোড়া গ্রামে রায় বংশের। ১৭৬৫ সালে এই পুজো শুরু করেছিলেন অযোধ্যা নারায়ণ রায়। এবছর এই পুজোর ২৫৮ বছর। পুজোর বৈশিষ্ট্য অষ্টমীর দিনই নবপত্রিকার স্নান ও ঘট স্থাপন। সেদিন তার আগে সপ্তমীর পুজো হয়। অর্থাৎ অষ্টমীর দিন থেকেই পুজোর শুরু।
রায় বংশের বর্তমান বয়জ্যেষ্ট কল্যাণ রায় বলেন, 'অষ্টমীর দিনে ঘট আনা হয়। নবপত্রিকা স্থাপন করা হয় । তবে কি কারণে এই নিয়ম তা জানি না। ওই দিন প্রথমে সপ্তমীর পুজো করা হয়। আমাদের বাড়ির পুজোতে কাশীপুরের মহারাজা এসেছিলেন। তিনি পুজো পরিচালনার জন্য জমিও দান করেছিলেন। এখনও বলির রীতি চালু রয়েছে। আগে নবমীর দিন ১০০ ওপর পাঠা বলি হত। এখন ৪৭টা পাঠা বলি হয়। অষ্টমীর দিন পরিবারের ১টা পাঠা বলি দেওয়ার রেওয়াজ এখনও প্রচলিত।'
পশ্চিম বর্ধমানের কুলটি থানার সীতারামপুর কুলতোড়া গ্রামে রায় বংশের দুর্গাপুজোয় বর্ধমান, বীরভূম, হুগলি, পুরুলিয়া, ধানবাদ থেকে আত্মীয়-স্বজনরা আসেন। বংশপরম্পরায় চলছে প্রতিমা বানানোর কাজ। এবার প্রতিমা তৈরি করছেন গোবর্ধন সূত্রধর। স্থানীয় ঠাকুরপুকুরে দশমীর দিন বিসর্জন হয়। কল্যান রায় জানান, মন্দিরে সতীমার নিত্য পুজো হয়। দূরদূরান্ত থেকে ভক্তরা মানত করে এখানে পুজো দেয়।