Advertisment

Kankaleshwari Kali Temple : মন্দিরের পরতে পরতে জড়িয়ে রয়েছে রহস্য! বহু ‘অলৌকিক’ ঘটনার সাক্ষী কঙ্কালেশ্বরী কালী মন্দির

Kankaleshwari Kali Temple : প্রাচীনত্বের বিচারে কঙ্কালেশ্বরী দেবী মূর্তিট খুবই প্রাচীন বলে ধরা হয়।আর পাঁচটা কালী মূর্তির সঙ্গে এই মূর্তির কোন সাদৃশ্যই নেই। প্রায় ১.৮ মিটার উচ্চতার কালো পাথরের কঙ্কালরূপিণী অষ্টভুজা চামুণ্ডা মূর্তির পদতলে শায়িত রয়েছেন মহাদেব।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Kankaleshwari Kali Temple

কার্তিকের আমাবস্যায় ভয়ার্ত চিত্তে বর্ধমানের কঙ্কালেশ্বরী কালীকে পুজো নিবেদনয়করেন ভক্তরা। ছবি- প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়

Kankaleshwari Kali Temple :নরমুণ্ডের মালা পরিহিত কঙ্কালরূপিণী এই কালী অষ্টভূজা। কালো প্রস্তর মূর্তিতে নিখুঁত ভাবে ধরা দিচ্ছে তাঁর শিরা উপশিরা ও ধমনী। মূর্তির পদতলে শায়িত রয়েছেন মহাদেব। কার্তিকের অমাবস্যায় দেবী কালীর এমনই ভয়ংকর চামুণ্ডা মূর্তির পুজো পাঠ হয় বর্ধমানের কাঞ্চননগরের কঙ্কালেশ্বরী কালী মন্দিরে।ভয়ার্ত চিত্তেই শিহরণ জাগানো এমন কালী মূর্তির পুজোয় ভক্তি নিবেদন করেন ভক্তরা। 

Advertisment

কাঞ্চননগর পূর্বে ছিল বর্ধমানের বাণিজ্য স্থান। তখন খুবই প্রসিদ্ধ ছিল কাঞ্চননগরের ছুরা- কাঁচি। এখন কাঞ্চননগরের পরিচিতির সঙ্গে আঁকড়ে রয়েছে কঙ্কালেশ্বরী কালী মন্দির। এই মন্দির এবং মন্দিরে পূজিত হওয়া কঙ্কালেশ্বরী দেবীকে নিয়ে নানা কাহিনী আজও লোকের মুখে মুখে ঘোরে। জনশ্রুতি রয়েছে’,বাংলার ১৩২০ সালে  বর্ধমানে  ভয়ঙ্কর বন্যা হয়।সেই বন্যায় ভেসে মায়ের পাথর মূর্তি উল্টোভাবে এসে পড়ে এখানকার চৌধুরী দহে। চৌধুরী দহ বর্তমানে কালীদহ  নামে পরিচিত। উল্টো ভাবে পড়ে থাকার জন্য কেউ বুঝতে পারেন নি পাথরটি আসলে দেবী মায়ের মূর্তি। ওই পাথর মূর্তির উপরে কাপড় কাচতেন স্থানীয় রজকরা।

এইভাবে চলতে থাকার পর বাংলার ১৩২৩ সালের  আষাঢ় মাসে হঠাৎ ভূমিকম্প হলে চৌধুরী দহ ভূমি ধ্বসের কবলে পড়ে। তখন পাথর মূর্তিটি উল্টে গেলে মায়ের রুপ সবার নজরে আসে । খবর পেয়ে তৎকালীন বর্ধমানের  মহারাজা ওই স্থানে  উপস্থিত  হন। দেবী মায়ের ভয়ঙ্কর চামুণ্ডা রূপ দেখে তিনিও বিস্মিত হন। মহারাজের হস্তক্ষেপে উদ্ধার হয় দেবী মূর্তি। তারপর ওই বছরেরই আষাঢ় মাসের উল্টোরথের দিন দেবী মায়ের পাথর মূর্তিটি কাঞ্চননগরের মন্দিরে প্রতিষ্ঠার ব্যবস্থা  করেন মহারাজ। এর পরবর্তী সময়ে কালো পাথরের আরও একটি ছোট মূর্তি উদ্ধার হয়। সেটিকেও একা মন্দিরে প্রতিষ্ঠা করা হয় । ছোট পাথরের মূর্তিটি বড় পাথরের মূর্তির পাশেই অধিষ্ঠিত রাখা হয়।

বাংলা এবং দিল্লির প্রবীণদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী মোদী, মমতা-অতিশীর বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ

প্রাচীনত্বের বিচারে কঙ্কালেশ্বরী দেবী মূর্তিট খুবই  প্রাচীন বলে ধরা হয়।আর পাঁচটা কালী মূর্তির  সঙ্গে এই মূর্তির কোন সাদৃশ্যই নেই। প্রায় ১.৮ মিটার উচ্চতার কালো পাথরের কঙ্কালরূপিণী অষ্টভুজা চামুণ্ডা মূর্তির পদতলে শায়িত রয়েছেন মহাদেব। এক ঝলক দেখলে মনে হবে ,শায়িত মহাদেবের নাভি থেকে দেবী সৃষ্টি হয়েছেন।কঙ্কালসার এই মূর্তিতে মানব দেহের শিরা,উপশিরা,ধমনী,এসবই নিখুঁত ভাবে খোদাই  করা রয়েছে।মূর্তির গলায় রয়েছে নরমুণ্ডের মালা।মূর্তির উপরের ডান দিকে রয়েছে হস্তি  মুণ্ড। আর মূর্তির বাম দিকে নগ্ন নারী মূর্তি এবং মূর্তির নিচের  ডান  দিকে রয়েছে উলঙ্গ পুরুষের  কাঁধে শবদেহ।কারুর মতে মূর্তিটি বৌদ্ধ যুগের আবার কারুর মত ,মূর্তিটি পাল যুগের ।


কঙ্কালেশ্বরী কালী মায়ের মন্দিরটিও যথেষ্ট নজরকাড়া।দক্ষিণমুখী মন্দিরের সামনের  দেওয়ালে শোভা বর্ধন করে টেরাকোটার শিল্প শৈলী।মন্দিরের পশ্চিমে বেলগাছের পাশে রয়েছে পঞ্চমুণ্ডি আসন।আর বেলগাছের ঠিক তলায় রয়েছে কালো পাথরের শিবলিঙ্গ। কথিত আছে ,’তন্ত্র সাধনায় সিদ্ধি লাভের জন্য একদা বহু তন্ত্র সাধক এই স্থানে আসতেন। সাধক কমলানন্দ স্বামী  তাঁদের মধ্যেরই একজন’। উনি বাংলার  ১৩২৩ সালের পরবর্তি সময়ে এখানে এসেছিলেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে। তনি নাকি ,সাধনার পাশাপাশি মন্দির দেখভালও করতেন। এখন অবশ্য ট্রাস্টি বোর্ড  মন্দির দেখভাল ও পুজোর যাবতীয় দায় দায়িত্ব সামলায়। কার্তিকের আমাবস্যায় মহা ধুমধাম করে পুজো হয় কঙ্কালেশ্বরী কালী মন্দিরে। এদিন নানা পদের ভোগ রান্না করে দেবীকে নিবেদন করা হয়।হাজার হাজার ভক্ত দেবীকে পুজো দিতে আসেন। তাঁদের জন্যেও ভোগের ব্যবস্থা রাখা হয়।নিজের মাহাত্ম গুনে কঙ্কালেশ্বরী কালী ভক্ত মনে শ্রদ্ধার আসনে প্রতিষ্ঠিত রয়ে আছেন।

Kali Puja burdwan
Advertisment