এখন জোর চর্চা 'কালীঘাটের কাকু' বেহালার বাসিন্দা সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রকে নিয়ে। কালীঘাটের কাকুর নাম সামনে এনেছেন শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার তাপস মণ্ডল। একসময়ের কংগ্রেস কর্মী পরবর্তীতে তৃণমূল রাজনীতি করা সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র। ২০১১ ভবানীপুর বিধানসভার উপনির্বাচনে নির্দল প্রার্থী হিসাবে দাঁড়িয়েছিলেন বেহালার ফকিরপাড়ার 'রাধারানি' বাড়ির গৃহকর্তা। রাজনৈতিক মহলের প্রশ্ন, আদতে কি তিনি শুধুই নির্দল প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন? সেক্ষেত্রেও কি বিশেষ কোনও রণকৌশল ছিল? শিক্ষাক্ষেত্রে তাঁর নাম উঠে আসায় রাজনৈতিক মহলে নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে।
সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রের নাম সামনে আসতেই বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার লিপ ও বাউন্ডস সংস্থার সঙ্গে তাঁর কি সম্পর্ক তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। তবে সুজয় ভদ্র স্পষ্ট স্বীকার করেছেন তিনি কুন্তলকে চেনেন, কিন্তু তাপস মন্ডলের মুখ পর্যন্ত কখনও দেখেননি। এর আগে কয়লা পাচার কাণ্ডে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সুজয় ভদ্রকে তলব করেছিল। এহেন সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র নির্বাচনে নির্দল প্রার্থী হয়ে কেন দাঁড়িয়েছিলেন, তা নিয়ে সর্বত্র গুঞ্জন শুরু হয়েছে।
২০২১ কলকাতা কর্পোরেশন নির্বাচনে শ্যামবাজার এলাকার একটি বুথে এক নির্দল প্রার্থী বিস্তর দৌঁড়ঝাপ করছিল। সে প্রার্থী হয়েছিল বুথের ভিতরে এজেন্ট সংখ্য়াসহ নির্বাচনে নানা সুবিধা তাঁর সমর্থিত দলের প্রার্থীকে পাইয়ে দিতে। নাম প্রকাশ্য়ে অনিচ্ছুক ওই প্রার্থী জানিয়েছিলেন, তাঁর বাড়ি টালিগঞ্জে কিন্তু প্রার্থী হয়েছেন শ্যামবাজার এলাকায়। এটাই ছিল দলীয় কৌশল। সাধারণত ড্য়ামি প্রার্থী করা রাজনৈতিক রণকৌশলের মধ্য়েই পড়ে। তাতে বিরোধী পক্ষকে ঘায়েল করার বাড়তি অস্ত্র মেলে। তা পুরনির্বাচন হোক বা বিধানসভা-লোকসভা নির্বাচন।
আরও পড়ুন- বিজেপির দোসর তৃণমূল, ইতিহাস টেনে মমতার দলকে তুলোধনা রাহুলের
বেহালার সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র নিজে বলছেন, কিভাবে কালীঘাটের কাকু হলেন তিনি তা জানেন না। অথচ তিনি ২০১১ বিধানসভার উপনির্বাচনে ভবানীপুরে নির্দল প্রার্থী হিসাবে লড়াই করেছেন। তাঁর প্রাপ্ত ভোট ১ হাজারও পেরোয়নি। ৮০৯টি ভোট পেয়েছিলেন তিনি। অসংখ্য বুথে ০-৫ ভোট মিলেছে তাঁর। রাজনৈতিক মহলের অভিমত, বেহালার সুজয়বাবু এতটা জনপ্রিয় যে তিনি নির্দল প্রার্থী হয়ে গেলেন ভবানীপুরের উপনির্বাচনে! ওই উপনির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছিলেন ভবানীপুরে। ৫৪, ২১৩ ভোটের ব্যবধানে সিপিএম প্রার্থী নন্দিনী মুখোপাধ্যায়কে পরাজিত করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই নির্বাচনে আরও দুই নির্দল প্রার্থী ছিলেন। ছিলেন ইন্ডিয়ান জাস্টিস পার্টির প্রার্থী।