মোদী হঠাতে ইন্ডিয়া জোটে কংগ্রেস ও তৃণমূল কাছাকাছি এসেছে। তা নিয়ে রাজ্য কংগ্রেসের কেউ কেউ বাংলায় দলের কি হাল হবে তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছিলেন। তারপর রাজ্য কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী, পরবর্তীতে দীপা দাশমুন্সির জোট নিয়ে মন্তব্য বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। কংগ্রেস নেতৃত্বের একাংশ মনে করছে, এরাজ্যে দলের যে সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছিল তাতে গণ্ডগোল পাকছে। রাজ্যে কংগ্রেসের উজ্জ্বল ভবিষ্যতে জল ঢেলে দিচ্ছে।
রাজ্য কংগ্রেসের মুখপাত্র আইনজীবী কৌস্তভ বাগচি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে স্পষ্ট বলেন, 'তৃণমূলের সঙ্গে আসন সমঝোতা বা জোট দূরের কথা কংগ্রেস নেতৃত্ব তাঁদের পাশে বসুক তাও আমি চাইছি না।' এরাজ্যে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের স্পষ্ট অবস্থান বিবৃতি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া উচিত বলে মনে করছেন কংগ্রেসের এই তরুণ তুর্কি নেতা। তাঁর সঙ্গে একই মত রাজ্যের ৯০ শতাংশ কংগ্রেস কর্মীর, দাবি কৌস্তভের।
এরাজ্য থেকে কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটিতে স্থান পেয়েছেন বহরমপুরের সাংসদ অধীর চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে প্রাক্তন সাংসদ দীপা দাশমুন্সিকে। এদিকে রাজ্য কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব ইন্ডিয়া জোটকে সামনে রেখে তৃণমূলের প্রতি নরম মনোভাব দেখাচ্ছে বলে মনে করছেন দলেরই একাংশ। কৌস্তভ বাগচি বলেন, 'আমার ওয়ান পয়েন্ট এজেন্ডা। দীপা দাশমুন্সি সুর নরম করুক, অন্য নেতৃত্ব যে বক্তব্যই রাখুক না কেন এখানে তৃণমূলের সঙ্গে সমঝোতা করুক তা চাইছি না। আমাদের এটাও ভালো লাগে না যে পাটনা, বেঙ্গালুরু বা মুম্বইতে কংগ্রেস ও তৃণমূল নেতৃত্বের পাশাপাশি বসে বৈঠক করা। এই কংগ্রেস নেতৃত্বকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এত গালিগালাজ দিয়েছে। রাজনীতিতে চির শত্রু বা মিত্র বলে কিছু থাকে না। তাহলেও কোথাও তো একটা মনুষ্যত্বের বিষয়টা আসবে। আমরা মানুষ তো। এক্ষেত্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতি আমার মনোভাব এক ইঞ্চিও বদলাবে না।'
আরও পড়ুন- বিরাট ধাক্কা মমতার, পুর-নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ঘনিষ্ঠ মন্ত্রী তথা পুজোকর্তাকে CBI তলব
তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেসের জোটের রসায়ন বা সমঝোতা নিয়ে প্রদেশ কংগ্রেসের একাংশ কোনও মন্তব্য করতে চাইছেন না। তাঁরা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছেন। শেষ পর্যন্ত তাঁরা অপেক্ষা করতে চান। কৌস্তভের বক্তব্য, 'নেতাদের কথাটা আরও দশ জন ধান্দাবাজ নেতাদের কথা হবে। বাকি ৯০ শতাংশ কর্মীদের কথাই কিন্তু আমি বলছি। যেটা এই নেতারা বলছেন না।'
সিপিএমও তৃণমূলের সঙ্গে ইন্ডিয়া জোটে আছে এমনকী এরাজ্যে বামেরা তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করবে সেই ঘোষণাও করে দিয়েছে। তবে কংগ্রেসের ক্ষেত্রে তেমন কোনও বিবৃতি এখনও ঘোষণা করা হয়নি। কৌস্তভের কথায়, 'প্রকাশ্যে একটি নীতিগত বিবৃতি দেওয়া উচিত শীর্ষ নেতৃত্বের। বামেরা যেটা করেছে একটা লিখিত বিবৃতি সামনে এনেছে। এরাও লিখিত বিবৃতি প্রকাশ করুক কনফিউশন সমস্তটা দূর হয়ে যাবে। বিষয়টা স্পষ্ট হয়ে যাবে। সবাই পার্লামেন্টে যেতে চাইছে।'
আরও পড়ুন- চন্দ্রযান-৩ টিমের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য, বঙ্গতনয়ের অভাবনীয় কৃতিত্বে বাংলার মুখ উজ্বল!
রাজনৈতিক মহলের মতে, এরাজ্যে দু'একটা পকেট ছাড়া সাংগঠনিক ভাবে দুর্বল সোনিয়া-রাহুলের দল, এরই মধ্যে যদি মতবিরোধ তীব্র হয় তাহলে শক্তি যে আরও তলানিতে গিয়ে ঠেকবে তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।