/indian-express-bangla/media/media_files/2025/03/04/ClGtILRYrPuCXCk7Oj1h.jpg)
Jagannath Temple, Puri: জগন্নাথ মন্দির, পুরী।
know the mysterious story of the Jagannath Temple in Puri: কথায় আছে বাঙালির 'সেকেন্ড হোম' পুরী (Puri)। বাঙালির পুরী বেড়ানোর জন্য আলাদা করে কোনও বাহানার প্রয়োজন হয় না। ফাঁক পেলেই ভ্রমণপিপাসু বাঙালি পুরী ছোটে। একদিকে পুরীর সমুদ্রের প্রতি গভীর প্রেম আর অন্যদিকে অপার ভক্তি এবং অসীম শ্রদ্ধায় মাথা ঝুঁকে যায় প্রভু জগন্নাথ দেবের মন্দিরে (Jagannath Temple)। শ্রী ক্ষেত্র পুরীর জগন্নাথ মন্দির ঘিরে রয়েছে নানা গভীর রহস্যে ভরা কাহিনী। বিশেষ এই প্রতিবেদনে পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের সাত রহস্য কাহিনী নিয়ে বিশদে আলোচনা করা হল।
পুরীর মন্দিরের পতাকার রহস্য:
প্রতিদিন পুরীর মন্দিরের ওপর লাগানো ধ্বজা কিংবা পতাকা পাল্টানো হয়। প্রতিদিন একজন পুরোহিত মন্দিরের গম্বুজের উপরে ওঠেন এবং সেই ধ্বজা কিংবা পতাকা বদল করেন। পুরীর মন্দিরের গম্বুজের ওপর রহস্যময়ভাবে সর্বদা বাতাসের বিপরীত দিকে ওড়ে এই পতাকা বা ধ্বজা। ভক্তরা পুরীর মন্দিরের এই পতাকার উল্টোদিকে উড়তে থাকার ঘটনাটিকে প্রভু জগন্নাথ দেবের ঐশ্বরিক কৃপা বলে মনে করেন।
পুরীর মন্দিরের মহা প্রসাদের রহস্য :
পুরীর মন্দিরের নৈবেদ্য বা মহাপ্রসাদের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য হল, এখানে যত সংখ্যক ভক্তরা আসুক না কেন তাঁদের জন্য কখনই প্রসাদ কম পড়ে না। এমনকী মহাপ্রসাদ উদ্বৃত্তও থাকে না। মাটির পাত্রে রীতি-রেওয়াজ মেনে পবিত্র এই প্রসাদ তৈরি হয়। এই মহাপ্রসাদ তৈরির আগে পিরামিড আকৃতির একটি বিন্যাসে মাটির পাত্রগুলি উনুনের ওপর ক্রমান্বয়ে সাজিয়ে রাখা হয়। উনুনের জালে প্রতিটি মাটির পাত্র একই সঙ্গে ফুটতে থাকে। ভক্তদের বিশ্বাস অনুযায়ী, একেবারে উপরে রাখা পাত্রের খাবার প্রথমে রান্না হয়।
পুরীর মন্দিরের ছায়া দেখা যায় না:
পুরীর প্রভু জগন্নাথ দেবের মন্দিরটি প্রায় চার লক্ষ বর্গফুট এলাকা জুড়ে বিস্তৃত। এই মন্দিরের উচ্চতা ২১৪ ফুট। এই মন্দিরের চূড়ার কোনও ছায়া দেখা যায় না। তবে এই বিষয়টির কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। বিশাল এই মন্দিরের চূড়ার ছায়া কেন দেখা যায় না তার কোনও ব্যাখ্যাও নেই।
আরও পড়ুন- Kasba: ট্যাংরা-কাণ্ডের রেশ কাটতে না কাটতেই এবার কসবা, একই পরিবারের ৩ সদস্যের রহস্যমৃত্যু
মূর্তি বদল:
পুরীর মন্দিরের বিগ্রহ প্রতি ৮,১২,১৯ বছর অন্তর বদল করা হয়। নিম গাছের কাঠ দিয়ে প্রভু জগন্নাথ দেব, বলভদ্র এবং সুভদ্রার নব কলেবর করা হয়। জগন্নাথ দেবের নব কলেবরের জন্য যে নিমগাছটি নির্বাচন করা হয় সেটি মন্দির কর্তৃপক্ষের ঠিক করে দেওয়া এক কাঠুরে গোপনে ২১ দিন ধরে কাটেন। জগন্নাথদেবের মূর্তি তৈরির জন্য যে নিমগাছটির কাঠ কাটা হচ্ছে সেটি আগে থেকে কেউ জানতে পারেন না।
নো-ফ্লাইজোন:
পুরীর জগন্নাথ দেবের মন্দিরের উপর দিয়ে কোনও পাখি কিংবা বিমান উড়তে দেখা যায় না। বিমান ওড়ার ক্ষেত্রে কোনও নির্দেশিকা না থাকলেও বিষয়টি স্পষ্টভাবে লক্ষ্য করা যায়। এর সঠিক কারণে অনেকেরই অজানা। পুরীর মন্দিরের চারপাশের আধ্যাত্মিক শক্তিই এর অন্যতম কারণ বলে বিশ্বাস ভক্তদের। তবে অনেকের ধারণা, এর সঙ্গে মন্দিরের চৌম্বকীয় শক্তির একটি বিষয় জড়িয়ে রয়েছে।
আরও পড়ুন- West Bengal News Live: যাদবপুরে এবার সার্জিক্যাল স্ট্রাইক, বিরাট হুঙ্কার ABVP-এর
সুদর্শন চক্রের রহস্য :
পুরীর মন্দিরের একেবারে শীর্ষে রয়েছে বিশাল একটি সুদর্শন চক্র। অনেকেই মনে করেন যে সুদর্শন চক্রটি সবসময় যে সেটি দেখছেন তাঁরই দিকে মুখ করে রয়েছে। অনেকে এটিকে একটি স্বর্গীয় নকশা বলে মনে করেন। তবে পুরীর মন্দিরের এই সুদর্শন চক্র গোটা শ্রীধামকে সুরক্ষিত করে রেখেছে বলে বিশ্বাস জগন্নাথ দেবের ভক্তদের।
ঢেউয়ের শব্দ:
পুরীর সমুদ্রের বিরাট বিরাট ঢেউয়ের শব্দ বহু দূর থেকেও শোনা যায়। আশ্চর্য্যজনকভাবে সমুদ্রের খুব কাছে থাকা জগন্নাথ দেবের মন্দিরে ঢুকলে সমুদ্রের গর্জন-ঢেউয়ের শব্দ কিছুই শোনা যায় না। ভক্তদের বিশ্বাস, সুভদ্রা চেয়েছিলেন মন্দিরের ভেতর সবসময় একটি নিরিবিলি-নিস্তব্ধ পরিবেশ বজায় থাকুক। সেই কারণেই মন্দিরের ভেতরে ঢুকলে পুরীর সমুদ্রে ঢেউয়ের শব্দ শোনা যায় না।