এ যেন একেবারে ঝাঁ চকচকে কর্পোরেট অফিস। ঝকঝকে মেঝে, চোখ ধাঁধানো আলো, দেখলে তাক লেগে যাবে। হালের যে কোনো কর্পোরেট অফিসের তুলনায় কোনও অংশে কম নয়। প্রায় দেড়শো বছর ধরে এ শহরে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে রয়েছে সে। কিন্তু তার অন্দরসজ্জার এমন 'মেক ওভার' আগে কখনও হয়নি। শহরের অপরাধ রুখতে নতুন বছরে একবারে নতুন রূপে তৈরি কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। বর্ষশেষের দিন রিমোট টিপে নবরূপে তৈরি গোয়েন্দা বিভাগ ভবনের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কেমন হল নতুন সাজ? জবাবে কলকাতা পুলিশের এক শীর্ষ আধিকারিক ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেন, "ভবনের অন্দরসজ্জা সংস্কার করা হয়েছে। বাইরে কিছু করা হয়নি। বিল্ডিংয়ের বাইরে যেমন হেরিটেজ লুক ছিল, তেমনই রয়েছে।"
দেড়শো বছরের বাড়ির অন্দরসজ্জার সংস্কার কি এই প্রথমবার? ওই আধিকারিক জানালেন, "সাম্প্রতিক সময়ে কোনও সংস্কার হয়নি। বোধহয় এই প্রথমবার ভবনের অন্দরসজ্জার সংস্কার করা হল। মাঝে অবশ্য লিফট বসানো হয়েছিল। তবে এমন সংস্কার সম্ভবত এই প্রথমবার।" এতদিন পর কেন? জবাবে ওই আধিকারিক বললেন, "আসলে আমাদের অনেক শাখা বেড়েছে এখন, একইসঙ্গে কর্মী সংখ্যাও বেড়েছে, তাই সংস্কারের দরকার ছিল। তাছাড়া দেওয়ালগুলো পুরনো হয়ে গিয়েছিল, ইলেক্ট্রিক তারগুলোও পুরনো ছিল। পুজোর সময় থেকে সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছিল। এখনও কিছু কাজ বাকি রয়েছে, করা হবে।"
কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের বাইরের ও ভিতরের সজ্জা। ছবি: ফেসবুক/ কলকাতা পুলিশ
আরও পড়ুন: কলকাতা পুলিশের ট্রেনিং স্কুলের ঠিকানা বদল
নতুন ঝাঁ চকচকে অফিস পেয়ে কী বলছেন কর্মীরা? ওই আধিকারিকের কথায়, "সকলেই খুশি। ভালই লাগছে এমন ঝাঁ চকচকে পরিবেশে কাজ করতে পেরে। কর্পোরেট লুকে করা হয়েছে। সরকারি দফতর হওয়া সত্ত্বেও কর্পোরেট অফিসের মতো করা হয়েছে।"
উল্লেখ্য, ১৮৬৮ সালে তৎকালীন কলকাতার নগরপাল স্যার স্টুয়ার্ট হগের হাত ধরে পত্তন হয় কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের। হগ বুঝেছিলেন, বাড়তে থাকা শহরের ক্রমবর্ধমান অপরাধের হার রুখতে বা তা দমন করতে একটি বিশেষ বিভাগের প্রয়োজন। গত দেড়শো বছরে ভারতের অন্যতম সেরা গোয়েন্দা বিভাগের তালিকায় জায়গা করে নেওয়া কলকাতা পুলিশের ডিটেকটিভ ডিপার্টমেন্ট বা ডিডি আজও শহরের অপরাধ মোকাবিলায় সমান তৎপর থাকবে, এমনটাই আশা।