মাত্র মাস ছ'য়েক আগেই চার হাত এক হয়েছিল। এবারই ছিল নীলাদ্রির প্রথম জামাইষষ্ঠী। তার আগেই সব শেষ। হাহাকার নীলাদ্রির শ্বশুরবাড়িতে, কান্না যেন থামছেই না সিংহ পরিবারে। বিয়ের বছর ঘোরার আগেই দুষ্কৃতীদের গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে প্রাণ খোয়ালেন বছর সাতাশের তরুণ।
গত বুধবার ভরসন্ধেয় বারাকপুরের আনন্দপুরী এলাকায় সোনার দোকানে হানা দেয় দুষ্কৃতীরা। ওই দোকানেরই মালিকের ছেলে নীলাদ্রি সিংহ। ডাকাতিতে বাধা দিতে গেলে তরুণকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে দুষ্কৃতীরা। সেই গুলিতেই সব শেষ। মাত্র মাস ছ'য়েক আগেই বারাকপুরেরই বাসিন্দা ঐন্দ্রিলা মান্নার সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল নীলাদ্রির। প্রেম করেই বিয়ে করেছিলেন তরুণ। নীলাদ্রি ছোট থেকেই ছিলেন শান্ত প্রকৃতির। তাঁর ছবি আঁকার হাত ছিল নজরকাড়া।
আরও পড়ুন- ‘পঞ্চায়েতে ৯৮% আসনে না লড়েই জিতবে TMC’, ‘কাঁটা লাগানো’ ভাষণে ‘বাজার গরম’ মদনের
এমনকী তাঁদের সোনার দোকানের গয়নার নকশাও তিনিই এঁকে তৈরি করতেন। এলাকারই বাসিন্দা ঐন্দ্রিলার সঙ্গে তাঁর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দুই বাড়ির মতেই তাঁরা বিয়ে করেছিলেন। এবারই ছিল তাঁর প্রথম জামাইষষ্ঠী। জামাইকে সাদরে বরণ করে নিতে শ্বশুরবাড়িতে সব প্রস্তুতি সাড়া হয়ে গিয়েছিল।
জামাইকে সাদরে স্বাগত জানাতে জমকালো আয়োজন করেছিল মান্না পরিবার। তবে জামাইষষ্ঠীর আগের রাতেই সব শেষ হয়ে গেল। এক পলকেই স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গেল ঐন্দ্রিলার। সিংহবাড়িতে কান্না যেন থামছেই না। আচমকা যেন তাঁদের পৃথিবীটা শূন্য হয়ে গিয়েছে। বাড়ির ছেলের এই পরিণতি কিছুতেই মানতে পারছে না পরিবার।
আরও পড়ুন- এককথায় ফাটাফাটি! সৌন্দর্য্যে উত্তরবঙ্গ ঘেঁষা এগ্রাম ১০ গোল দেবে সিমলা-মানালিকেও!
সাম্প্রতিক সময়ে বারবার দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্যের সাক্ষী থেকেছে বারাকপুর শিল্পাঞ্চল। কখনও বিরিয়ানির দোকানে গুলি কখনও আবার বিটি রোডের ধারে দাঁড়িয়ে থাকা বিজেপি নেতাকে গুলিতে ঝাঁঝরা করার মতো ঘটনা দেখেছে বারাকপুর। এবার ভরসন্ধেয় জনবহুল এলাকায় সোনার দোকানে ঢুকে গুলি চালিয়ে খুন যুবককে। বারাকপুরের আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি নিয়ে সরব বিরোধীরা। দুষ্কৃতীদের স্বর্গরাজ্য হয়ে উঠেছে শিল্পাঞ্চল, এই অভিযোগে পুলিশ প্রশাসনকে তুলোধনা করে সোচ্চার বিভিন্ন মহল।
আরও পড়ুন- ভ্যাপসা গরমে সেদ্ধ শরীর! কবে-কখন ঢুকছে বর্ষা? সাতসকালে রইল মারকাটারি আপডেট!
এদিকে, বারাকপুর শুটআউট-কাণ্ডে এক দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। হাওড়া স্টেশন থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে সানি নামে এক দুষ্কৃতীকে। ধৃতকে দফায় -দফায় জেরা করে বাকি দুষ্কৃতীদের খোঁজ পেতে মরিয়া পুলিশ।