Hawker Eviction-Chandni Chowk: হকার উচ্ছেদ নিয়ে সরব হয়েছে বঙ্গ BJP। এবার বিরোধী দলনেতা রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানাবেন হকার উচ্ছেদ নিয়ে। যদিও সরকারের বক্তব্য হকার নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন পুরসভা এলাকায় বুলডোজার চলেছে। বেআইনি দোকান ভেঙে ফেলা হয়েছে। হলদিয়া, রামপুরহাটে শাসকদলের লোকজন বুলডোজার চালানো নিয়ে বিক্ষোভও দেখিয়েছেন। এদিকে আপাতত একমাস চলছে উচ্ছেদ অভিযানের সাময়িক বিরতি। এখন চলছে হকার সমীক্ষা।
মধ্য কলকাতার চাঁদনি মার্কেট। এখানে মূলত ইলেকট্রনিক্সের জিনিসপত্র বিক্রি হয়। সারাবছর এখানে শুধু ফুটপাত নয়, রাস্তার দু'দিকেও হকাররা ডালা নিয়ে বসে। ফুটপাত দিয়ে চলাফেরা করা যেমন দায়, তেমনই রাস্তা দিয়েও শান্তিতে হাঁটা যায় না। ১২ মাস এই চাঁদনি চক চত্বরের মূল রাস্তা থেকে লাগোয়া গলিগুলির একই অবস্থা। এবার সেখানে হকার নিয়ে সমীক্ষা করছে পুলিশ। এখানে রাস্তার দু'দিকে হকার বসায় সামনে খদ্দের থাকলে রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করাই দুরূহ। এখানে রাস্তার পাশে হকারি করছেন বছরের পর বছর।
তেমনই একজন হকার মহম্মদ মুস্তাফা আহমেদ। তাঁর বাবাও এখানে হকারি করেছেন। মুস্তাফা বলেন, "বাবা এখানে হকারি করতেন আমিও করছি। বহু বছর থেকে আমরা এখানে ব্যবসা করছি। বাবার হকার কার্ড আছে। বেশ বয়স হয়েছে বাবার। আমি পড়াশোনা ছেড়ে এই কাজ করছি। কোনও অপশন নেই। ফুটপাতে যাদের ডালা আছে তাঁদের গুরুত্ব দিচ্ছে, আমাদের রাস্তায় ডালা আমাদের সঙ্গে এখনও কথা বলেনি। রাস্তায় পাশের ডালা যাদের তাদের দেখছে না, বলছে পরে দেখা যাবে।" এখন রাস্তায় ডালা বসা নিয়ে বেশ সমস্যা পড়েছেন হকাররা। "পুলিশ এলে সরতে হচ্ছে। ব্যবসার ক্ষতি হচ্ছে। খুব চিন্তায় আছি।" বলছেন, মুস্তাফা।
২০ বছর ধরে চাঁদনি চকে রাস্তার পাশে হকারি করছেন মহম্মদ নাদিম। তাঁর দাবি, "যখন ইলেক্ট্রনিক্সের বাজার থাকে না তখন এখান থেকে সরে যাই। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন রাস্তা ক্লিয়ার করতে হবে। ডালা নিয়ে অ্যাডজাস্ট করতে হরবে। সেভাবে পুলিশ কাজ করছে। আমাদের একটু অসুবিধা হচ্ছে। বাচ্চাদের স্কুলের ফি, খাওয়ার খরচ, সমস্যা তো একটু হচ্ছে। থানা থেকে আসছে। বলছে রাস্তায় কিছু রাখা যাবে না।" আশরফ হোসেনরা বলছেন, "পুলিশ বলে গিয়েছে। সংসার চালাতে অসুবিধা হচ্ছে। হকারদের সরিয়ে দিলে আমাদের খুব অসুবিধা হবে।"
ফুটপাতে হকার বসার পরেও যেন সাধারণ মানুষ হাঁটা-চলা করতে পারে। প্লাস্টিক লাগিয়ে পুরো ফুটপাত ঢেকে দেওয়া চলবে না। স্থায়ী দোকান যেন দেখা যায়। বেআইনি নির্মাণ চলবে না। এমন নানা বিধি নিয়ম মেনে সমীক্ষা করছে পুলিশ। হকারদের নিয়ন্ত্রণ করার জন্য এক মাস সময় দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জেলায় জেলায় পুরসভাগুলি হকারদের ফুটপাত থেকে উঠে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। কলকাতার হকাররা জীবন-জীবিকা নিয়ে সংশয়ে পড়েছেন। শেষমেশ এত ঢাকঢোল পিটিয়ে তোড়জোড়ের পর শহর কলকাতার ফুটপাত-রাস্তাঘাটের কী দশা হয়, তা সময়ই বলবে।