২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের আগে রাম-বাম জোট নিয়ে তোলপাড় হয়েছিল রাজ্য। তখন স্লোগান উঠেছিল আগে রাম, পরে বাম। জল্পনা ছিল, বিজেপি ক্ষমতায় এলে বামেদের ফের ক্ষমতায় আসা সহজ হবে। কিন্তু ঠিক তার দুবছর পর ২০২১-এ দেখা গেল রাম থাকলেও বামেরা ভ্যানিস হয়ে গেল। এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে গ্রামাঞ্চলে ফের রাম-বামের জোট দেখতে পাচ্ছে রাজনৈতিক মহল। হুগলিতে লাল পতাকা কেন বিজেপির মিছিলে তা নিয়ে থানায় এফআইআর পর্যন্ত হয়ে গেল। এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনে গ্রামবাংলায় রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে জোরদার চর্চা শুরু হয়েছে বঙ্গ রাজনীতিতে।
কোন পরিস্থিতি তৈরি হলে পতাকা হাইজ্যাকের অভিযোগে থানায় এফআইআর করতে পারে কোনও রাজনৈতিক দল তা নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। পূর্ব মেদিনীরপুরের বিভিন্ন সমবায়ের নির্বাচনে বাম ও রামের জোট প্রকাশ্যে এসেছে। কোথাও বা এই জোট তৃণমূল কংগ্রেসকে পরাজিত করেছে। কোথাও জোট করে তৃণমূলের কাছে হেরে গিয়েছে। এবার এই জোট বার্তাই কি পঞ্চায়েতের আগে গ্রাম-গঞ্জে ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ছে, তা নিয়েই জোর জল্পনা শুরু হয়েছে।
শীর্ষ স্তরে বিজেপি-তৃণমূলের সেটিং নিয়ে বারে বারে অভিযোগ করে আসছে সিপিএম ও কংগ্রেস। সিপিএম নেতৃত্ব বিজেপিমূল তত্ব সামনে নিয়ে আসে। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একান্ত বৈঠকের প্লট খুঁজতে শুরু করে রাজনৈতিক মহল। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর তিন তিনটে ডিসেম্বর ডেডলাইন ঘোষণার পর ওই বৈঠক হয়। শুভেন্দুর ঘোষণাই যে সার তা-ও পরবর্তীতে স্পষ্ট হয়েছে। শাহ-মমতার বৈঠকের আলোচনার বিষয় প্রকাশ্যে আসার কথা ভাবাই অন্যায়। এরই মধ্যে রাজনৈতিক মহল বাংলায় ২০২৪ লোকসভার আসনের হিসেব করতে শুরু করেছে। এদিকে ফের সেটিং তত্বের অভিযোগে সরব হয়েছে বামেরা।
এই সেটিং তত্বের সঙ্গে মিশ্রণ ঘটছে ফের নীচু স্তরে রাম-বাম জোটের। বাংলার রাজনীতি ঘেঁটে-ঘ। পূর্ব মেদিনীপুরে সূত্রপাত হলেও বাংলার নানা জেলায় নীচু স্তরে পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাম-বাম জোট করবে বলে আগাম ঘোষণা করে দিচ্ছেন কেউ কেউ। তাঁরা যে এক্ষেত্রে ওপরমহলের নির্দেশকে তোয়াক্কা করবেন না তা-ও জানিয়ে দিচ্ছেন। জোট রুখতে থানায় এফআইআরের মতো অভিনব ঘটনাও ঘটে গেল এই রাজ্যে।