সমবায় সমিতির নির্বাচনে নন্দকুমার মডেল কাজে না এলেও দমতে নারাজ রাম-বাম। ফের সেই পূর্ব মেদিনীপুরেই আরও এক সমবায় সমিতির নির্বাচনে জোট গড়ে প্রার্থী দিল রাজনীতিতে সম্পূর্ণ বিপরীত মেরুতে থাকা সিপিএম ও বিজেপি।
পঞ্চায়েত নির্বাচন যত এগোচ্ছে বাম ও বিজেপির নীচুতলায় জোটবদ্ধ লড়াই ভাবনা ততই পোক্ত হচ্ছে। একের পর এক সমবায় সমিতির নির্বাচনে জোট বাঁধছে দুই শিবির। এবার তমলুকে খারুই গঠরা সমবায় বাঁচাও মঞ্চ গড়ে ভোট ময়দানে বাম-বিজেপি। আগামী ৪ ডিসেম্বর খারুই গটরা সমবায় সমিতির নির্বাচন। সেই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোমর বেঁধে একসঙ্গে প্রচার তুঙ্গে তুলেছে দুই শিবির।
সোমবার সিপিএম এবং বিজেপি একত্রে মিছিল করে। মিছিলে যেমন সামিল হতে দেখা গিয়েছে সিপিএম নেতা-কর্মীদের, তেমনই বিজেপি নেতা-কর্মীরাও বামেদের সঙ্গে পায়ে পা মিলিয়েছেন। বিজেপির তরফে মিছিলে তমলুক সাংগঠনিক জেলার কিষাণ মোর্চার সভাপতি বামদেব গুছাইত, বিজেপি মণ্ডল সভাপতি-সহ অন্য নেতারা ছিলেন। অন্যদিকে, সিপিএমের হয়ে মিছিলে পা মেলাতে দেখা গিয়েছে দলের নেতা রঘুনাথ ভৌমিক, সুরেন্দ্রনাথ আচার্য-সহ অন্যদের।
দু'পক্ষেরই দবি একটাই, তাঁরা মানুষের স্বার্থেই জোট গড়ে ভোটে লড়ছেন। তৃণমূলকে রুখতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। বিজেপি নেতা বামদেব গুছাইত বলেন, ''নন্দকুমার, মহিষাদলের পরে খারুইয়ে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়ছি। এই নির্বাচনে আমাদের জয় নিশ্চিত।''
আরও পড়ুন- ‘কয়লা ভাইপো বলে কাকে বুঝছেন তাঁরা?’ শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনকে প্রশ্ন শুভেন্দুর
রাম-বামের এই জোটকে কটাক্ষ করেছে শাসকদল তৃণমূল। দলের জেলা সভাপতি সৌমেন মহাপাত্র বলেন, ''আমরা তো আগে থেকেই বলেছি সিপিএম-বিজেপি ভোট ভাগাভাগি করে। সিপিএম বিধানসভায় বিজেপিকে ভোটের ভাগ দিয়েছিল। এখনও সেই পদ্ধতি চালিয়ে যাচ্ছে। তবে এতে কোনও লাভ হবে না, কারণ যেই রাম সেই বাম।''
আরও পড়ুন- লটারিতে কোটি টাকা জিতে আনন্দে ‘পাগল পাগল’ দশা, থানায় রাত কাটল দিনমজুরের
উল্লেখ্য, এর আগে পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমারে জোট গড়ে ভোটে লড়ে শাসকদলকে জোর ধাক্কা দিয়েছিল সিপিএম ও বিজেপি। নন্দকুমার-বহরমপুর সমবায় সমিতির নির্বাচনে মোট ৬৩ আসনের সব কটিতেই জয় ছিনিয়ে নেয় বাম-বিজেপি। সেই মডেলকে হাতিয়ার করেই এরপর মহিষাদলের কেশবপুর সমবায় সমিতির নির্বাচনেও জোট গড়ে প্রার্থী দেয় বাম-বিজেপি। তবে এবার শেষরক্ষা হয়নি। রবিবার তৃণমূলের কাছে ওই নির্বাচনে কার্যত ভরাডুবি হয়েছে রাম-বামের। মোট ৭৬ আসনের মধ্যে ৬৯টিতেই জয় পেয়েছে জোড়াফুল। মাত্র ৭টি আসনে জিতে মুখরক্ষা হয়েছে বাম-বিজেপির।