তৃণমূলকে রুখতে ফের নন্দকুমার মডেলকেই হাতিয়ার বাম-বিজেপি জোটের। এবারও পূর্ব মেদিনীপুর জেলার সমবায় সমিতির নির্বাচনে একসঙ্গে ভোটে লড়ছে বাম-বিজেপি। মহিষাদলের সমবায় সমিতির নির্বাচনে রীতিমতো একসঙ্গে ভোটের প্রচার তুঙ্গে তুলেছে দুই শিবির। পিছিয়ে নেই তৃণমূলও। আগামী ২০ নভেম্বরের মহিষাদলের কেশবপুর জালপাই রাধাকৃষ্ণ সমবায় সমিতির নির্বাচনের আগে প্রচারে শান দিচ্ছে রাজ্যের শাসকদলও।
চলতি মাসের ৬ তারিখ পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমারের বহরমপুর সমবায় সমিতির নির্বাচনে বাম-বিজেপি জোট বিশাল সাফল্য পেয়েছিল। তৃণমূলকে ধুয়ে-মুছে সাফ করে দিয়েছিল লাল-গেরুয়ার এই জোট। পঞ্চায়েত ভোটের আগে সম্পূর্ণ ভিন্ন দুই মেরুতে থাকা দুটি রাজনৈতিক দলের একসঙ্গে পথ চলার এই বিষয়টি নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল রাজ্য রাজনীতিতে।
এবার নন্দকুমারের মডেলকে হাতিয়ার করেই মহিষাদলের সমবায় সমিতির নির্বাচনে ঝাঁপাচ্ছে বাম-বিজেপি। শতাব্দী প্রাচীন মহিষাদলের কেশবপুর জালপাই রাধাকৃষ্ণ সমবায় সমিতির নির্বাচনে মোট ৭৬ আসনের মধ্যে ৭৫টিতে বাম-বিজেপি জোট করে সংযুক্ত কৃষক মোর্চার নামে প্রার্থী দিয়েছে। সংযুক্ত কৃষক মোর্চার মধ্যে বিজেপির প্রার্থী রয়েছেন ৬২ জন, বামেদের হয়ে লড়ছেন ১৩ জন। এদিকে তৃণমূল সমর্থিত এক প্রার্থী ইতিমধ্যেই বিনা প্রতিন্দ্বন্দ্বিতায় জিতে গিয়েছেন। বাকি ৭৫টি আসনে প্রতিন্দ্বন্দ্বিতা হবে।
আরও পড়ুন- নজরে উত্তর-পূর্ব, অভিষেকের মেঘালয় সফরে ঘটতে পারে বড় চমক?
আর পাঁচটা নির্বাচনের মতোই মহিষাদল কেশবপুর জালপাই সমবায় সমিতির নির্বাচনেও চলছে জোর প্রচার। রীতিমতো পোস্টার সাঁটিয়ে ঘুরে-ঘুরে প্রচার সারছে রাজনৈতিক দলগুলি। বাম-বিজেপি নেতারা একসঙ্গে মিলে প্রচারে ঝড় তুলছেন। অন্যদিকে, তৃণমূলও লাল-গেরুয়ার জোটকে কটাক্ষ করে নিজেদের কায়দায় প্রচার সারছে। বাম-বিজেপির এই জোটকে 'অশুভ' শক্তি বলে কটাক্ষ করছেন এলাকার তৃণমূল নেতারা। প্রচারে রাজ্যের বিভিন্ন উন্নয়নের প্রকল্পগুলিকে ঢাল করেই জনসংযোগ বাড়াচ্ছেন শাসকদলের নেতারা। অন্যদিকে, বাম-বিজেপি জোটের দাবি, তৃণমূলের অপসশান ও দুর্নীতির হাত থেকে সমবায়কে বাঁচাতেই একসঙ্গে ভোটে লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা।
বিজেপির ইটামগরা ২ অঞ্চল আহ্বায়ক রামকৃষ্ণ দাস বলেন, ''তৃণমূল ক্ষমতায় থেকে সমবায় সমিতিতে যা ইচ্ছে তাই করছে। কৃষকরা তাঁদের মর্যাদা পাচ্ছেন না। তাই শাসকদলকে হারাতেই আমরা সম্মিলিতভাবে চেষ্টা চালাচ্ছি।'' অন্যদিকে, ইটামগরা ২ অঞ্চলের সিপিআই আঞ্চলিক কমিটির সম্পাদক সুধাংশু বারিক বলেন, ''বাংলায় সমবায় নিয়ে শাসকদল তৃণমূল যা করে চলেছে তার প্রতিবাদ জানাতেই আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।'' তবে মহিষাদলের তৃণমূল বিধায়ক তিলক চক্রবর্তীর দাবি, জোট করেও তাঁদের হারাতে পারবে না বাম-বিজেপি।
মহিষাদলের শতাব্দী প্রাচীন এই সমবায়ের পরিচালন সমিতির নির্বাচনে নন্দকুমার মডেল বাজিমাত করবে নাকি ক্ষমতা ধরে রাখবে তৃণমূল, উত্তর মিলবে আগামী ২০ নভেম্বর ভোটের ফল প্রকাশের পরে।