লকডাউনের তৃতীয় দিনে আইন ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে অভিনব ব্যবস্থা নিল মালদা জেলা পুলিশ। বুধবার রাস্তায় বেরনো একাংশ জমায়েতকারীদের কান ধরে ওঠবোস করিয়ে প্রকাশ্যেই শাস্তি দিল পুলিশ। লকডাউন ঘোষণার পরও মঙ্গলবার রাজ্য়জুড়ে তা অমান্য করেছেন হাজার হাজার মানুষ। তাদের লাঠিপেটা করতে বাধ্য হয়েছে পুলিশ। কোনও কোনও ক্ষেত্রে গ্রেফতারও করেছে। এবার একটু ভিন্ন পথে সাজা দিল মালদা পুলিশ।
এদিন মালদার ডিএসপি প্রশান্ত দেবনাথের নেতৃত্বে শহরজুড়ে অভিযান চালায় বিশাল পুলিশবাহিনী। ইংরেজবাজার থানার পুলিশ কর্তাদের নিয়ে মালদা শহরের বিভিন্ন বাজার এলাকাতেও হানা দেওয়া হয়। পাশাপাশি এদিনও যেসব এলাকায় রাস্তার ধারে ফাস্টফুড বা চায়ের দোকানে ভিড় দেখা গেছে, সেখানে পুলিশ লাঠিপেটা করেছে। পুলিশি অভিযানের সময় পালাতে দিশা পাননি জমায়েতকারীরা।
যদিও এদিন বাজার-হাটে জমায়েত ঠেকাতে পুলিশ রীতিমত সতর্ক এবং সচেতন করেছেন সাধারণ ক্রেতাদের। কতটা দূরত্ব বজায় রেখে কেনাকাটা করতে হবে সে ব্যাপারে হাতে কলমে বুঝিয়েছেন জেলা পুলিশের পদস্থ কর্তারা। তা সত্বেও এখনও অনেকের টনক নড়েনি।
এদিন মালদা শহরের রথবাড়ি পুরবাজার সংলগ্ন কয়েকটি চায়ের দোকানে ব্যাপক ভিড় দেখতে পান অভিযানকারী জেলা পুলিশের পদস্থ কর্তারা। এরপরই সেই চায়ের দোকানে হাজির কয়েকজনকে প্রকাশ্য রাস্তায় টেনে নিয়ে এনে কান ধরে বেশ কিছুক্ষণ ধরে ওঠবোস করানো হয়। লকডাউন চলার চলাকালীন ভবিষ্যতে যাতে এরকম ভুল না হয় সে কথাও পদস্থ পুলিশ অফিসারদের পক্ষ থেকে কড়া ভাষায় জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: করোনা পরীক্ষার অনুমতি চাইল কলকাতার পাঁচ বেসরকারি হাসপাতাল
অন্যদিকে মালদা শহরের ২ নম্বর ওয়ার্ডের বিশ্বনাথ মোড় এলাকায় এদিন জমজমাটি বাজারের ভিড়ে অভিযান চালায় পুলিশ। ওই এলাকার কয়েকটি জায়গায় আড্ডার ঠেক বন্ধ করা হয় পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে।স্থানীয়দের বক্তব্য়, সরকার বিভিন্নভাবে করোনা মোকাবিলায় সতর্ক এবং সচেতন থাকার প্রচার চালাচ্ছে। তারপরও মানুষ অবুঝের মতো রাস্তায় ঘুরে-বেড়াচ্ছে।
এদিকে মঙ্গলবার রাত আটটায় যখন টিভির পর্দায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২১ দিনের দেশজুড়ে লকডাউনের কথা ঘোষণা করেন । তারপরই মালদা শহরের বিভিন্ন মুদির দোকানে উপচে পড়ে আমজনতার ভিড়। চাল, ডাল, আটা, মুড়ি, ডিম, সরিষার তেল, আলু, পিঁয়াজ কিনতে হিড়িক পড়ে যায় বিভিন্ন মুদিখানার দোকানে । বহু দোকানদারেরা বেচাকেনা করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয়। ওই রাতে অভিযান শুরু করে জেলা পুলিশ প্রশাসনের কর্তারা । কেনাকাটার ক্ষেত্রে একজন ক্রেতা আর অপর জনের থেকে কতটা দূরত্ব বজায় রেখে দাঁড়াবেন তারও কথা বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয় ।
এদিকে বেশকিছু ব্যবসায়ীরা এই লকডাউনের সুযোগ নিয়েই নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী কালোবাজারি চালাচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। এক্ষেত্রেও বিশেষ নজরদারি চালানো শুরু করেছে জেলা পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তারা।পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া জানিয়েছেন, যে কোনও পরিস্থিতিতে লকডাউন লঙ্ঘন করলে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। কোথাও জমায়েত হলে মানুষকে সতর্ক করা হচ্ছে। তারপরও যদি কেউ না কথা শোনে তখন আইনগত ভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার হচ্ছে।