ভাত, ডাল সঙ্গে আলু, পেঁয়াজ পটল, ভেন্ডি। শুধু তরকারি হলে হয়? সঙ্গে যদি একটু ডিম ঝোল যদি হতো? সন্ধ্যায় মুড়ি। হ্যাঁ। এই সমস্ত জিনিসই গ্রামবাসীদের হাতে তুলে দিচ্ছে, ''ছোটো কয়েনের বাজার''। পাণ্ডুয়ার বৈচিগ্রাম এলাকায় একটি স্কুল মাঠে বসেছে এরকম এক অভিনব বাজার। সপ্তাহে তিন দিন। মঙ্গল, বৃহষ্পতি ও শনিবার। এলাকার কয়েকজন যুবক মিলে তৈরি করেছেন আটচালা গ্রুপ। এই গ্রুপ থেকে চাঁদা তুলে বসিয়েছে এরকম অভিনব হাট। এসমস্ত জিনিস কিনতে কিন্তু মূল্য দিতে হবে। মূল্য মাত্র এক টাকা। তবে শর্ত ছোটো কয়েন দিতে হবে। ভীড়ও হচ্ছে ভালই।
আরও পড়ুন- সাধারণের হেঁশেল ঠেলছেন উচ্চমাধ্যমিকের প্রথম স্থানাধিকারী
কিন্তু একটাকার ছোটো কয়েন কেন? আটচালা গ্রুপের কর্ণধার প্রীতম মুখার্জী বলেন, "এই ছোট একটাকার কয়েন গ্রামাঞ্চলে প্রায় অচল। এই কয়েন নিতে অনেকেরই অনীহা। অথচ রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার কোনও নির্দেশিকা নেই এব্যাপারে। তাই আমরা এই কয়েনটাকে সচল করার লক্ষ্যে নেমেছি। আমরা গ্রামবাসীদের বোঝাতে চাই এই কয়েনেরও মূল্য আছে। পাশাপাশি এমন অনেকেই আছেন যাঁদের বিনামূল্যে জিনিস নিতে সম্মানে লাগে। তাঁরা মরে গেলেও মুখ ফুটে চাইতে পারবেন না। বিশেষত মধ্যবিত্ত শ্রেণি। তাঁদের জন্যও বলতে পারেন আমরা এই 'টোকেন মানি' ধার্য করেছি। আপনারা বিনা পয়সায় জিনিস নিচ্ছেন না। বিনিয়োগের মাধ্যমে নিচ্ছেন। এটাই তাঁদের বোঝানো হচ্ছে।"
আরও পড়ুন- টেলিফোনে করোনা চিকিৎসা, রইল ডাক্তারদের ফোন নম্বরের তালিকা
বেশ সাড়া ফেলেছে তাদের এই উদ্যোগ। একটাকার ছোট কয়েন এখন কত মূল্যবান তা গ্রামবাসীরা বুঝতে পারছেন। এক টাকা দিয়ে গ্রামের মানুষ সবজি, মুদি দ্রব্য, মশলাপাতি, ডিম , মুড়ি সব কিছুই পেয়ে যাচ্ছেন। যাঁরা বণ্টন করছেন তাঁরা প্রত্যেকেই মাস্ক ও হাতে গ্লাভস পড়ে বিতরণ করছেন। সামাজিক দূরত্ব মেনে গ্রামের লোক নিয়েও যাচ্ছেন। এখানে কোন হুড়োহুড়ি, ঠ্যালাঠেলিও নেই। নেই কোনও ঝগড়া-ঝাঁটি। আর এই দুর্দিনে মানুষদের পাশে দাঁড়াতে পেরে প্রীতম, সুজয়দের মুখেও চওড়া হাসি।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন