TMC worker killed: এখনও থমথমে কেতুগ্রামের (Ketugram) চেঁচুড়ি গ্রাম। গতরাতেই খুন হয়েছেন তৃণমূল কর্মী মিন্টু শেখ। বাড়িতে কান্নার রোল পড়ে গিয়েছে। ছেলে-মেয়ে ও মাকে নিয়ে সংসার ছিল মিন্টুর। বাড়ির রোজগেরে সদস্য বলতেও তিনিই ছিলেন একা। রবিবার রাতে দুষ্কৃতীরা বোমা মেরে কুপিয়ে খুন করে মিন্টুকে। রোমহর্ষক এই খুনের প্রতিবাদে সোচ্চার গোটা চেঁচুড়ি গ্রাম। অনেকেই আজ ভোট দিতে পর্যন্ত যাননি। পরিবারের লোকজনদের অভিযোগ, এই খুনের পিছনে শাসকদলের একাংশ যুক্ত। যদিও তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য এই খুনের দায় চাপিয়েছে CPM-এর উপরে। তবে বামেরা এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
চতুর্থ দফার লোকসভা নির্বাচনের (Lok Sabha Election Phse 4) আগের রাতেই কেতুগ্রামের চেঁচুড়ি গ্রামে দুস্কৃতী হামলায় খুন তৃণমূলকর্মী মিন্টু শেখ। ভোটের ঠিক আগের রাতেই এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় রাজনৈতিক উত্তেজনা চরম পর্যায়ে পৌঁছে যায়। খুনের নেপথ্যে শাসকদলেরই একাংশের যোগ রয়েছে বলে দাবি করতে থাকেন নিহতের স্ত্রী।
রাত পেরিয়ে সোমবার ভোটের দিনে দুপুরেও যেন স্তব্ধ গোটা চেঁচুড়ি। এলাকারই ডাকাবুকো তৃণমূল কর্মী মিন্টুর বাড়িতে প্রতিবেশীদের উপচে পড়া ভিড়। তখনও ময়নাতদন্তের পর দেহ বাড়িতে এসে পৌঁছোয়নি। মিন্টুর বাড়িতে কান্নার রোল পড়ে গিয়েছে। ছেলেকে হারিয়ে একদিকে শোকে পাথর তাঁর মা। অন্যদিকে, স্বামীর এমন ভয়াবহ পরিণতিতে কপাল চাপড়াচ্ছেন তাঁর স্ত্রী। তাঁদের কেউই কথা বলার মতো অবস্থায় ছিলেন না।
এদিকে, মিন্টু শেখের এই খুনের পর থেকে গ্রামবাসীরাও প্রশাসনের উপর যারপরনাই ক্ষুব্ধ। অনেকেই জানালেন, আজ তাঁদের কেউউ বুথমুখো হবেন না। ভোট দিতেই যাবেন না। স্থানীয় বাসিন্দা আলাউদ্দিন শেখের কথায়, "ভোট দিতে যাইনি। ভোট দেবও না।"
আরও পড়ুন- TMC worker killed in ketugram: ভোটের আগের রাতে খুন TMC কর্মী, পুলিশি তদন্তে গ্রেফতার ২
নিহত তৃণমূলকর্মী মিন্টু শেখের ছেলে ১৮ বছরের গোলাম মোর্তাজা ও ভাগ্নে এমজি রাজ। তাঁদের প্রত্যেকেরই বক্তব্য, পুলিশ ঘটনার তদন্ত 'ঠিকঠাক' করছে না। এমনকী ঘটনার পর থেকে গ্রামে এসে সেভাবে কাউকে জিজ্ঞাসাবাদও করেনি পুলিশ। নিহতের ছেলে গোলাম মোর্তাজার দাবি, তাঁর বাবাকে খুনের পিছনে তৃণমূলেরই একাংশের যোগ রয়েছে। এমনকী আততায়ীরা আজ সকালে তাঁকেও ফোনে হুমকি দিয়েছে বলে অভিযোগ ওই যুবকের। মিন্টু শেখ হত্যাকাণ্ডে CBI তদন্তের দাবি করেছেন তাঁর ছেলে।
আরও পড়ুন- Dilip Ghosh: দিলীপের উপর চড়াও তৃণমূল, রণক্ষেত্র মন্তেশ্বর, অভিযোগ পেয়েই ‘অ্যাকশনে’ কমিশন
নিহতের ছেলে তৃণমূলের একাংশের বিরুদ্ধে তাঁর বাবাকে খুনের অভিযোগ তুললেও তৃণমূল নেতৃত্ব কিন্তু এই খুনে দায় চাপিয়েছে CPM-এর উপরেই। পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, "এটা তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কোনও ব্যাপার নয়। CPM-এর লোকেরাই দীর্ঘদিন ধরে রেইকি করছিল। গতকাল রাত সাড়ে ৯টা-১০টা নাগাদ সুযোগ পেয়ে প্রথমে ওকে বোমা মারে ও পরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করে।"
তৃণমূলের অভিযোগ নস্যাৎ করে CPM নেতা অচিন্ত্য মল্লিক বলেন, "CPM খুন-সন্ত্রাসের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। তৃণমূল তাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে সেই অভিযোগ করতেই পারে। কিন্তু নিহতের পরিবার কী বলছে? মিন্টু শেখ কিছুদিন ধরে তৃণমূল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছিল। তৃণমূলের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর তার উপর রাগ ছিল। নির্বাচনের আগেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণে খুন হতে হল মিন্টু শেখকে। তার স্ত্রী তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি-সহ ৭-৮ জনের নাম করেছেন।"
আরও পড়ুন- Dilip Ghosh-Kirti Azad: কীর্তিকে দেখেই হেসে খুন দিলীপ! প্রতিপক্ষকে বুকে টেনে কী বললেন জানেন?
এদিকে, পুলিশ এই ঘটনার তদন্তে নেমে এখনও পর্যন্ত দু'জনকে গ্রেফতার করেছে। পূর্ব বর্ধমানের পুলিশ সুপার আমনদীপ বলেন, "নিহত ব্যক্তি তৃণমূল করতেন। তবে ওর নামেও অপরাধমূলক কাজের অভিযোগ আছে। এই খুনের ঘটনায় এখনও দু'জন গ্রেফতার হয়েছে।"