Lok Sabha Election 2024-Thakurnagar-CAA: দেশজুড়ে কার্যকর হয়েছে CAA। সংশোধিত নাগিরকত্ব আইনের আওতায় এদেশের নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছে অনেককে। গত কয়েক বছরে CAA নিয়ে জোর প্রচার চলেছে মতুয়াগড় ঠাকুরনগরে। আজ পঞ্চম দফার লোকসভা নির্বাচনে ভোটের লাইনে দাঁড়িয়েছিল ঠকুরনগরও। বনগাঁ লেকাসভা কেন্দ্রের আওতাধীন এতল্লাটের অনেকেই CAA নিয়ে শঙ্কায় না ভুগলেও উদ্বেগে রয়েছেন। সেটা তাঁদের কথাবার্তাতেই স্পষ্ট হল। কেউ কেউ বললেন, "ওটা মাথাতেই ঢুকছে না।"
মতুয়া সমাজে CAA নিয়ে ভালোমতো প্রচার চালিয়েছে গেরুয়া দল। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের জেরে তাঁদের প্রভূত সুবিধা হবে বলে দাবি করেছেন বিজেপি নেতারা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে শুরু করে অমিত শাহ-সহ এরাজ্যের বিজেপির নেতারা বারবার মতুয়াদের CAA-র 'সুফল' সম্পর্কে বুঝিয়েছেন। উল্টোদিকে, CAA নিয়ে মতুয়া সমাজকে বিজেপি বিভ্রান্ত করছে বলে বারবার পাল্টা প্রচার চালিয়েছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল।
এই আবহেই আজ পঞ্চম দফার লোকসভা নির্বাচনে ভোটের লাইনে দাঁড়িয়েছিল ঠাকুরনগর। এতল্লাটের একটা বড় অংশের বাসিন্দা মতুয়া সমাজের। একটা সময়ে বাংলাদেশ থেকে কার্যত পালিয়ে এসে এদেশে আশ্রয় নিয়েছিলেন তাঁরা। আজ তাঁদের অনেকেই এখানে এসে বাড়ি করেছেন, চাকরি, ব্যবসা-সহ নানা কারবারে যুক্ত রয়েছেন। প্রায় সবারই রেশন কার্ড থেকে শুরু করে ভোটার কার্ড, আধার কার্ড-সহ প্রয়োজনীয় সরকারি নথি রয়েছে। প্রতিবার ভোটও দেন তাঁরা।
আরও পড়ুন- EXCLUSIVE: প্রার্থীদের নামই জানেন না এঁরা! কাঁটাতারের ওপারের ভোট কেমন? ব্যতিক্রমী গল্পে তাজ্জব হবেন!
তাই CAA-এর জেরে নতুন করে নাগরিকত্ব পাওয়ার বিষয়টি এতল্লাটের একেবারে আমআদমির কাছে বোধগম্য হচ্ছে না। অন্তত পঞ্চম দফার নির্বাচনের দিন মতুয়াগড় ঠাকুরনগরে ঢুঁ মেরে এই ছবিটিই স্পষ্ট হল।
এলাকার এক টোটো চালক বিপিন হালদার। তিনি বললেন, "এই এলাকায় বাংলাদেশি লোকজনই বেশি। অনেকে রাতের অন্ধকারে ওদেশ থেকে কার্যত পালিয়ে এসে এখানে আশ্রয় নিয়েছিলেন। এখানে এসে ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, রেশন কার্ড হয়েছে। CAA বিষয়টি এখনও পর্যন্ত আমরা বুঝতে পারছি না। ওই দেশ থেকে প্রাণের ভয়ে পালিয়ে এসেছেন অনেকে। কোনও ডকুমেন্ট সঙ্গে নিতে পারেননি। আমরা তো ভোট দিই। আবার কীভাবে নাগরিকত্বের প্রমাণ দেব? তবে CAA নিয়ে একটা উদ্বেগ আছে মনের মধ্যে।"
এলাকারই এক যুবক অঙ্কন মজুমদার অবশ্য CAA নিয়ে বিশেষ মুখ খুলতে চাননি। তবে তাঁদের এলাকায় প্রতিবারের মতো এবারেও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হচ্ছে বলেই জানিয়েছেন তিনি। অন্যদিকে, বছর পঁচাত্তরের পুষ্প হাওলাদার এদিন গিয়েছিলেন ভোট দিতে। বৃদ্ধাকে CAA নিয়ে প্রশ্ন করতে যেন আকাশ থেকে পড়লেন! তিনি বললেন, "CAA কী জানি না। ভোট দিতে এসেছি। এখানে কোনও দিন গন্ডগোল হয়নি। এবারেও শান্তিপূর্ণভাবেই ভোট হচ্ছে।"
সুতরাং CAA নিয়ে যতই হইচই, যতই বিতর্ক থাকুক, খোদ মতুয়াগড়ের একেবারে সাধারণ খেটে-খাওয়া মানুষের মধ্যে এখনও বেশ দ্বিধা-দ্বন্দ্ব রয়েছে। গোটা বিষয়টিই এখনও তাঁদের কাছে স্পষ্ট নয়।