Lok Sabha Election 2024: লোকসভা নির্বাচনে (Lok Sabha Election 2024) ইতিমধ্যেই একাধিক প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে দিয়েছেন খোদ তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই (Mamata Banerjee)। আনুষ্ঠানিকভাবে তালিকা প্রকাশ না করলেও এই সাংসদরা যে এবারও টিকিট পাচ্ছেন তা একপ্রকার নিশ্চিত। তাঁদের মধ্যে কয়েকজনকে নিয়ে আবার BJP যোগ-জল্পনা তৈরি হয়েছিল। অন্যদিকে, বয়স বিতর্ক আপাতত চাপা পড়লেও ৮০-র কাছাকাছি বা ৮০-র ওপরের বয়সের তৃণমূল সাংসদরা (TMC MP) টিকিট পাবেন কিনা তা নিয়ে কোনও নিশ্চয়তা নেই বলেই সূত্রের খবর। আপাতত প্রার্থী বাছাইয়ের প্রক্রিয়া প্রায় শেষ পর্যায়ে বলে জানা গিয়েছে। প্রার্থী হিসাবে একাধিক নয়া মুখ দেখা যেতে পারে।
বীরভূমের (Birbhum) সাংসদ অভিনেত্রী শতাব্দী রায়ের (Satabdi Roy) সঙ্গে জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mandal) নানা বিষয়ে মতপার্থক্য দেখা যেত। যদিও এখন গরুপচার কান্ডে (Cow Smuggling) তিহার জেল বন্দি রয়েছেন বীরভূমের একদা প্রতাপশালী নেতা। তবে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে কেষ্ট তথা অনুব্রতর পাশে আছেন, গত রবিবারও সিউড়ির সভায় জানিয়ে দিয়েছেন। এখনও তাঁকে দলীর শীর্ষ পদ থেকে সরিয়ে দেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তা সত্ত্বেও শতীব্দ রায়ও পছন্দের তালিকায় তৃণমূল সুপ্রিমোর। শতাব্দী ফের প্রার্থী হচ্ছেন চলতি লোকসভা নির্বাচনে।
ডায়মন্ড হারবার (Diamond Harbour) কেন্দ্রে যে ফের প্রার্থী হচ্ছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ই (Abhisek Banerjee), তা নিয়ে কোনও বিতর্ক নেই। তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তাঁর সংসদীয় কেন্দ্রকে যে বাড়তি গুরুত্ব দেন তা তাঁর কার্যকলাপে স্পষ্ট। ডায়মন্ড হারবারে প্রবীণদের জন্যই দলীয় স্তরে ভাতা চালু করেছেন অভিষেক। যা এই রাজ্য কেন সারা দেশেই নজিরবিহীন। করোনা (Corona) কাল থেকে ডায়মন্ড হারবার মডেলের কথা বলে এসেছেন তিনি।
ডায়মন্ড হারবারের নামে ফুটবল টিম (Football) গঠন করে ফেলেছেন। জনসংযোগেও তিনি তাঁর সংসদীয় কেন্দ্রকে অধীক গুরুত্ব দেন। এমনকী দলীয় স্তরে বিতর্কের সময় শোনা গিয়েছিল তিনি ঘনিষ্ঠ মহলে বলেছেন ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্র নিয়েই থাকতে চান। সেই সময় তিনি ডায়মন্ড হারবারে গেলেও দলীয় কোনও কর্মসূচিতে থাকেননি। তাঁর প্রার্থী হওয়া নিশ্চিত। পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালের দুবারের সাংসদ অভিনেতা দেবও (Dev) প্রকাশ্যে জানিয়েছিলেন তাঁর এবারের ভোটে প্রার্থী হওয়ার কোনও ইচ্ছা নেই।
কিন্তু দিদি অর্থাৎ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওপর সব কিছু নির্ভর করছে। তারপর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক, দলনেত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের পর আর কোনও সন্দেহের অবকাশ থাকেনি। দেব এবারও ঘাটালের প্রার্থী হচ্ছেন। অবশ্য টলিউডের এই অভিনেতা প্রার্থী হতে পারেন এমন প্রচার হওয়ার পরপরই ED গরু পাচার কাণ্ডে ফের দেবকে তলব করেছে। তৃণমূলের অভিযোগ, দেব দলের প্রার্থী হচ্ছেন জেনেই এই তলব এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের।
ব্যবসায়ী হিরানন্দানীর কাছ থেকে অর্থ নিয়ে সংসদে প্রশ্ন করার দায়ে সাংসদ পদ খোয়াতে হয়েছে মহুয়া মৈত্রকে (Mahua Moitra)। দেশ জুড়ে তুমুল বিতর্ক হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের দাবি ছিল, পুরোটাই BJP-র ষড়যন্ত্র। তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন কৃষ্ণনগরে ফের তৃণমূলের প্রার্থী হবেন মহুয়া। বিপুল ভোটে জয়ী হবেন তিনি। বারাসতের তৃণমূল সাংসদ ডা: কাকলি ঘোষ দস্তিদারের (Kakoli Ghosh Dastidar) ফের প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই ।
এবার রাজ্যসভায় আর মেয়াদ বৃদ্ধি হয়নি শান্তনু সেন (Santanu Sen) ও শুভাশিস চক্রবর্তীর (Subhasish Chakraborty)। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, দলের বিশ্বস্ত এই দুই সৈনিক কি এবার লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেন? বৃদ্ধতন্ত্র নীতিতে কারা এবার বাদ পড়বেন এটাই চর্চার বিষয়। সেক্ষেত্রে কলকাতা (Kolkata) ও আশেপাশের কেন্দ্রে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে প্রাক্তন সাংসদ শান্তনু সেনের। এদিকে যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রে মিমি চক্রবর্তী (Mimi Chakraborty) দাঁড়াবেন না বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন। দেবের মতো মিমিকে মমতা প্রার্থী করবেন কিনা তা এখন স্পষ্ট নয়।
আরও পড়ুন- Aadhaar: চটজলদি ‘বাম্পার স্ট্রোক’! বাতিল আধার নিমেষেই সক্রিয়, কোন ‘জাদুবলে’ জানেন?
তবে শুভাশিস চক্রবর্তীর নামে জল্পনা ছড়িয়েছে। তবে রাজ্যে এবার একাধিক আসনে তৃণমূল কংগ্রেসের নয়া প্রার্থীর মুখ দেখা যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। অন্যদিকে, উত্তর ২৪ পরগনার বারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রটিও বেশ চর্চায়। এই কেন্দ্রে অর্জুন সিংয়ের প্রার্থী হওয়া নিয়ে সংশয় রয়েছেই। খাতায়কলমে এখনও বিজেপি সাংসদ অর্জুন তৃণমূলে ফিরেছেন আগেই। তবে এবার জোড়াফুল তাঁকে ওই কেন্দ্রেই টিকিট দেয় কিনা তা নিয়ে ধন্দ যাচ্ছে না।