গ্রেফতার হয়েছে তিনজন, আটক করা হয়েছে দুই পরীক্ষার্থীকে। এতসবের মধ্যেও আজও হোয়াটসঅ্যাপে মিলল আজকের পরীক্ষার, অর্থাৎ অঙ্কের প্রশ্নপত্র। বুঝতেই পারছেন, এবছরের মাধ্যমিক পরীক্ষার কথা বলা হচ্ছে।
মাধ্যমিকের প্রথম দিন, অর্থাৎ ১২ ফেব্রুয়ারি, পরীক্ষা শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যেই প্রশ্নপত্র হোয়াটসঅ্যাপে ছড়িয়ে পড়ে। বাংলা, ইংরেজি, ভূগোলের মতো একাধিক বিষয়ের প্রশ্নপত্র পরীক্ষা শুরুর কিছু সময়ের মধ্যে প্রকাশ হয়ে পড়ার ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। বিধাননগর পুলিশের সাইবার সেলে অভিযোগ জানায় মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। সে ঘটনারই তদন্তভার পরে হাতে নেয় সিআইডি। তদন্ত এখনও চলছে।
পরীক্ষা শুরুর কিছুক্ষণ বাদেই হোয়াটসঅ্যাপে প্রশ্নপত্রের প্রতিলিপি ছড়িয়ে পড়ার ঘটনায় অবশেষে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। রবিবার হোয়াটসঅ্যাপে প্রশ্নপত্র পাঠানোর অভিযোগে তিনজনকে গ্রেফতার করে সিআইডি। একইসঙ্গে দু’জন মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে বলে সিআইডি সূত্রে জানা গিয়েছে। প্রশ্নপত্র হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানোর পিছনে ওই দুই পরীক্ষার্থীর কী ভূমিকা রয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
আরও পড়ুন, মাধ্যমিকের বজ্র আঁটুনি? এতটাই যে চোখে দেখা যায় না?
সিআইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, মাধ্যমিকের প্রশ্নপত্র বিভিন্ন মহলে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য ধৃতরা একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ বানিয়েছিল। সেই গ্রুপ মারফৎই পরীক্ষা শুরুর পর প্রশ্নপত্র শেয়ার করা হত। শুধু তাই নয়, উত্তরও হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো হত বলে খবর। ধৃতদের মধ্যে রয়েছে দ্বাদশ শ্রেণির দুই পড়ুয়া। ধৃত সাহাবুল আমির (১৮) মালদহের কালিয়াচকের বাসিন্দা ও শাহবাজ মণ্ডল (১৮) কাটোয়ার বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে।
এ ঘটনায় আরেক ধৃত সাজিদুর রহমান হুগলির পাণ্ডুয়ার বাসিন্দা বলে সিআইডি সূত্রে জানা গিয়েছে। ঘটনার তদন্তে ধৃতদের খোঁজে রবিবার রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে তল্লাশি অভিযান চালায় সিআইডি। এ চক্রে আরও কারা জড়িত, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। বাকি অভিযুক্তদের খোঁজে এখনও তল্লাশি চালানো হচ্ছে বলে সিআইডি সূত্রে জানা গিয়েছে।
উল্লেখ্য, মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরুর আগে নির্দেশিকা জারি করা হয়, যে পরীক্ষার্থীরা তো বটেই, পরিদর্শকরা পর্যন্ত পরীক্ষার হলে মোবাইল ফোন নিয়ে ঢুকতে পারবেন না। বলা হয়েছিল, স্কুলে ঢোকামাত্র ভারপ্রাপ্ত শিক্ষকের কাছে মোবাইল জমা রাখতে হবে সকল শিক্ষককে। পরীক্ষা চলাকালীন মোবাইল ফোন সুইচ অফ করে রাখার নির্দেশও দিয়েছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। মোবাইল ফোন সহ ধরা পড়লে বেশ কিছুদিনের জন্য সাসপেন্ড করা হবে শিক্ষককে। অন্যদিকে, কোনো পরীক্ষার্থীর কাছে মোবাইল ফোন পাওয়া গেলে বাতিল করে দেওয়া হবে তার পরীক্ষা। তা সত্ত্বেও কীভাবে পরীক্ষার হল থেকে হোয়াটসঅ্যাপে চালান হচ্ছে একের পর এক প্রশ্নপত্র, তা নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে সংশ্লিষ্ট মহলে।