দিনের পর দিন ধরে চা-বিস্কুট খেয়ে দাম না দেওয়ার অভিযোগ এবার পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মহিষাদলের ব্লক প্রশাসনের বিরুদ্ধে। বকেয়া প্রায় ১৪ হাজার টাকা। টাকা পেতে গেলে দেখাতে হবে দোকানের জায়গার দলিল, বিডিও-র নাকি এমনই নিদান। অভিযোগ প্রৌঢ় চা দোকানির। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে পালটা বিডিও-র দাবি, অতিরিক্ত দাম ধরে বিল করায় এই বিপত্তি। পদক্ষেপের আশ্বাস পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির।
সরকারি অফিসে টেন্ডারের বিল পাশ হতে নানা ঝক্কি সামলাতে হয় ঠিকাদারদের, এমন অভিযোগ শোনা যায় অনেক সময়। বিলের টাকা নিয়ে বিভিন্ন গরমিলের অভিযোগও ওঠে নানা সময়ে। কিন্তু চা দোকান থেকে চা খেয়ে সেই বিল মাসের পর ফেলে রাখার নজির বোধ হয় খুব একটা নেই, তাও আবার সরকারি অফিসে।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মহিষাদলের ব্লক প্রশাসনের ছোট্ট একটি চা দোকানে বিল বাকি রয়েছে ১৩ হাজার ৬০০ টাকা। সামান্য একটা চা দোকানে কী করে হলো এত টাকার বিল? সূত্রের খবর, দিনের পর দিন ধরে ব্লক ও পঞ্চায়েত সমিতির নানা মিটিং -এ চায়ের পাশাপাশি খাওয়া হয়েছে বিস্কুট, কফি, মশলা মুড়ি প্রভৃতি। মহিষাদল পঞ্চায়েত সমিতির অনুমোদিত ক্যান্টিনের কর্মীদের অসুস্থতার জন্য বেশ কয়েকমাস বন্ধ ছিল এই ক্যান্টিন।
আরও পড়ুন- West Bengal Weather Forecast: ভ্যাপসা গরমে বাড়ছে অস্বস্তি, দক্ষিণবঙ্গে ফের প্রবল বৃষ্টি কবে থেকে?
সেই সময় পঞ্চায়েত সমিতির কার্যালয়ের কিছুটা দূরে হিজলি টাইডাল ক্যানেলের পাড়ে গড়ে ওঠা নন্দ মাইতির এই চা দোকান থেকে চা, বিস্কুট, কফি, মশলামুড়ি প্রভৃতি সরবরাহ করা হতো। সেই বিলের প্রায় ১৪ হাজার টাকা দীর্ঘদিন ধরে পাচ্ছেন না নন্দ মাইতি। এমনকী বকেয়া বিল পেতে একাধিকবার ব্লক প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েও সেই টাকা মেলেনি। আর এতগুলো টাকা না পেয়ে সমস্যায় পড়েছেন এই প্রৌঢ় চা-ওয়ালা। এমনকী বকেয়া চাইতে গেলে বিডিও তাকে ধমক দিয়ে দোকানঘরের জায়গার কাগজ দেখতে চেয়েছেন বলে দাবি চা দোকানির।
তবে বিষয়টি এমন নয় বলে মহিষাদলের বিডিও বরুনাশিস সরকারের দাবি, "আমি আসার আগে এই ঘটনা ঘটেছে। উনি যে অভিযোগ করছেন তা ভিত্তিহীন। উনি যে পরিমাণ টাকা বকেয়া বলছেন আদতে তা নয়। আর যেহেতু সরকারিভাবে, সরকারি জায়গায় যারা রয়েছেন তাদের যেহেতু তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছে, তাই ওনাকে দোকানের জায়গার কি কাগজ আছে তা আনতে বলা হয়েছে।"
আরও পড়ুন- Durgapur News: হাড়হিম ঘটনা দুর্গাপুরে! বাবা-ছেলের মৃত্যু ঘিরে ছড়াল চূড়ান্ত চাঞ্চল্য
ইতিমধ্যেই বকেয়া টাকা পাওয়ার জন্য মহিষাদল পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শিউলি দাসের কাছে লিখিত আবেদন জানিয়েছেন নন্দ মাইতি। শিউলিদেবীর দাবি, "আবেদন পেয়েছি, বিডিও-র সাথে কথা বলে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।" আর এই ঘটনা সামনে আসায় কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য প্রদীপ দাসের বক্তব্য, "একটি চা দোকানদারের এই টাকা না দিয়ে অমানবিকতার পরিচয় দিচ্ছে মহিষাদল ব্লক প্রশাসন।"