Malda Medical College: মালদা মেডিকেল কলেজের ভর্তি থাকা এক রোগী রাতভর নিখোঁজ থাকার পর তার দেহ উদ্ধার হল সংশ্লিষ্ট এলাকার একটি নির্মীয়মান ভবন থেকে। বৃহস্পতিবার সকালে এমন ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছাড়ায় মালদা মেডিকেল কলেজ চত্বরে । এই ঘটনায় কর্তব্যরত একাংশ নার্স এবং নিরাপত্তা রক্ষীদের কর্তব্যে গাফিলতি ও উদাসীনতার অভিযোগ তুলেছেন মৃত রোগীর পরিবার।
মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের চরম উদাসীনতার অভিযোগ তুলেই এদিন রোগীর পরিবার বিক্ষোভ দেখায়। বিষয়টি জানতে পেরে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ইংরেজবাজার থানার পুলিশ। পরে পুলিশি হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। মেডিকেল কলেজের গাফিলতির বিষয়ে ইংরেজবাজার থানায় এবং স্বাস্থ্য দপ্তরের লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন মৃত রোগীর পরিবার।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত রোগীর নাম দুখু আহেরি (৪৫)। তার বাড়ি পুরাতন মালদার থানার আদিবাসী অধ্যুষিত ভাবুক গ্রাম পঞ্চায়েতের সুকানদিঘি এলাকায়। গত মঙ্গলবার রাতে অতিরিক্ত সুগার, জ্বর ও পেটে ব্যথা নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন ওই রোগী । পুরুষ বিভাগে ওই রোগীর চিকিৎসা চলছিল। বুধবার রাতে ওই রোগীর সঙ্গে পরিবারের লোকেরা দেখা করে বাড়ি চলে যায়। এরপরে এদিন সকালে এসে তাঁরা জানতে পারেন বেডে রোগী নেই। শুরু হয় ওই অসুস্থ রোগীর খোঁজ। এরপরই মেডিকেল কলেজের নির্মীয়মান ভবনের মেঝে থেকে ওই রোগীর দেহ উদ্ধার হয়।
মৃত রোগীর স্ত্রী চিন্তামণি আহেরি জানিয়েছেন, বুধবার রাত এগারোটার সময় স্বামীর সঙ্গে কথা বলে চলে এসেছিলাম। মহিলা বলে পুরুষ বিভাগে আমাকে এবং আমার মেয়েকে থাকতে দেওয়া হয় নি। এদিন সকালে যখন স্বামীকে দেখতে যায়, তখন জানতে পারি বেডে স্বামী নেই। রাতেই নিখোঁজ হয়ে গিয়েছে বলে আমাদের জানানো হয়। নার্স এবং নিরাপত্তা রক্ষীদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তারা দুর্ব্যবহার করে । রোগী নিখোঁজের কোনো সদুত্তর মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ দিতে পারে নি। এরপরেই পরিবারের লোকেরা বিক্ষোভ দেখান। আমার স্বামী খুন হয়েছে, না অসুস্থতার কারণেও মারা গেছে কিছুই পরিষ্কার নয়। এই ঘটনায় মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষের সম্পূর্ণ উদাসীনতা রয়েছে। পুরো বিষয়টি পুলিশ ও স্বাস্থ্য দপ্তরে অভিযোগ আকারে জানিয়েছি।
মালদা মেডিকেল কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল ডাঃ প্রসেনজিৎ বর জানিয়েছেন, রোগী নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি শুনেছি। পরে জানতে পারি মেডিকেল কলেজ চত্বরের একটি নির্মীয়মান ভবন থেকে দেহ উদ্ধার হয়েছে। কিভাবে এত বড় ঘটনা ঘটলো তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মেডিক্যাল কলেজের সিসিটিভির ফুটেজ তদারকি করে দেখা হবে। কর্তব্যে কারোর কোনো গাফিলতি থাকলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ইংরেজবাজার পুরসভার চেয়ারম্যান তথা রোগী কল্যাণ সমিতির সদস্য কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরি বলেন, ঘটনাটি শোনার পর মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। যদি এক্ষেত্রে কোনো গাফিলতি প্রমাণিত হয়, অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইংরেজবাজার থানার পুলিশ জানিয়েছে, যেখানে ওই রোগী দুখু আহেরি ভর্তি হয়েছিল, সেই পুরুষ বিভাগ থেকে প্রায় ১০০ মিটার দূরে মেডিকেল কলেজের নির্মীয়মান একটি বিল্ডিংয়ে তার দেহ উদ্ধার হয়। পুরো ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।