Ration Dealer Scam: রেশন সামগ্রী বন্টনে কারচুপি এবং সরকারি খাদ্য সামগ্রীতে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগে কালিয়াচক ৩ ব্লকের এক রেশন ডিলারকে ৭ কোটি ৮৬ হাজার টাকা জরিমানা করল জেলা খাদ্য সরবরাহ দফতর। পাশাপাশি, ওই রেশন ডিলারের লাইসেন্সও বাতিল করে তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। যদিও ওই রেশন ডিলার পাল্টা খাদ্য দফতরের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। তবে খাদ্য দফতরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যেভাবে সরকারি খাদ্য সামগ্রীতে দুর্নীতি করেছে ওই রেশন ডিলার, তাতেই এই বিপুল টাকার অংকের জরিমানা করা হয়েছে।
মালদা জেলা খাদ্য নিয়ামক শাশ্বত সুন্দর দাস জানিয়েছেন, সদর মহকুমা খাদ্য দফতরের পক্ষ থেকে কালিয়াচক ৩ ব্লকের সাহাবানচক অঞ্চলের রেশন ডিলার আশরাফুল ইসলামের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে তাকে আপাতত সাসপেন্ড করে ৭ কোটি ৮৬ হাজার টাকার জরিমানা ধার্য করা হয়েছে। যদিও ওই ডিলার আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে।
জেলা খাদ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী কালিয়াচক ৩ ব্লকের সাহাবানচক অঞ্চলে রয়েছে ওই রেশন ডিলারের দোকান । ২০১৫ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে রেশন কার্ডের অপব্যবহার, সরকারি খাদ্য সামগ্রী বন্টনে দুর্নীতি-সহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে ওই ডিলারের বিরুদ্ধে। এমনকি এবিষয়েও রাজ্য দুর্নীতি দমন শাখার অফিসেও ওই রেশন ডিলারের বিরুদ্ধে কয়েক মাস আগে একটি অভিযোগও দায়ের হয়।
আরও পড়ুন প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞাকে থোড়াই কেয়ার! চম্পাহাটিতে দেদার বিকোচ্ছে চকোলেট বোমা
পাশাপাশি, জেলা খাদ্য দফতরেও ওই ডিলারের বিরুদ্ধে নানান দুর্নীতির বিষয়টি নিয়ে গণস্বাক্ষর সম্বলিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন সংশ্লিষ্ট এলাকার একাংশ রেশন গ্রাহকেরা। এরপরই বিষয়টি নিয়ে শুরু হয় তদন্ত। তাতেই একের পর এক রেশন সামগ্রী বন্টনে অনিয়ম, খাদ্য সামগ্রী বিলির ক্ষেত্রে কোনওরকম স্লিপ ইস্যু না করা, রেশন কার্ডের অপব্যবহার করা সহ একাধিক অনিয়ম ধরা পড়ে। যা গত আট বছর ধরে ওই রেশন ডিলার নিজের দোকানে থেকেই এরকম বেআইনি কাজ চালিয়ে যাচ্ছিল বলে অভিযোগ। এরপরই ওই রেশন ডিলারকে সাসপেন্ড করে জরিমানা বাবদ ৭ কোটি ৮৬ হাজার টাকার জরিমানা ধার্য করে জেলা খাদ্য দফতর।
আরও পড়ুন মুহূর্তের ভুলেই 'সর্বনাশ', সতর্ক হোন আজই, নারী পাচারের এই কায়দা জেনে পুলিশও হতবাক!
এদিকে, সাহাবাগানচক এলাকার একাংশ রেশন গ্রাহকদের অভিযোগ, ওই ডিলারের কাছে কোনওদিনই নিয়মিত সরকারি খাদ্য সামগ্রী পাওয়া যায়নি। এমনকি সীমান্তের ওপারে রেশন সামগ্রী পাচার করা হত। ভুয়ো অনেক রেশন কার্ড তৈরি করা হয়েছিল। দীর্ঘদিন ধরেই সরকারি খাদ্য সামগ্রীতে বন্টন প্রক্রিয়ায় অনিয়মের জেরেই প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানানো হয়। এদিকে, যার বিরুদ্ধে অভিযোগ সেই রেশন ডিলার আশরাফুল ইসলামকে একাধিকবার মোবাইলে যোগাযোগ করলে করা হলে তিনি কোনও মন্তব্য করেননি।
জেলা খাদ্য নিয়ামক শাশ্বত সুন্দর দাস বলেন, কালিয়াচক ৩ ব্লকে সাহাবানচক এলাকার ওই রেশন ডিলার আশরাফুল ইসলামের বিরুদ্ধে ৭ কোটি ৮৬ হাজার টাকার বিপুল অঙ্কের জরিমানা ধার্য করা হয়েছে। দুর্নীতির ক্ষেত্রে এটাই সব থেকে বড় শাস্তি। গত ৮ বছর ধরে যেভাবে রাজ্য সরকারের নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী নিয়ে দুর্নীতি করা হয়েছে সেব্যাপারে তদন্ত করেই এই বিপুল অঙ্গের জরিমানা করা হয়েছে। যদিও ঘটনাটি আমার মালদা জেলায় দায়িত্ব নেওয়ার আগে ঘটেছে। মালদা সদর খাদ্য দফতরের পক্ষ থেকেই তদন্ত করেই এই জরিমানাটি করা হয়েছিল। তবে ওই ডিলার আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে । ফলে বিষয়টি এখন বিচারাধীন রয়েছে।